
গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় কোনো প্রতিকার না পেয়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক মন্ত্রী ও টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ সিদ্দিকী অবস্থান কর্মসূচি থেকে আমরণ অনশন পালন করছেন। সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত একটি আবেদনে মাধ্যমে অবহতি করে তিনি আমরণ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
লিখিত আবেদনে তিনি বলেন, আমার অবস্থান ধর্মঘটে ১৮ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হয়েছে, কিন্তু কোনো প্রতিকার না পেয়ে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম একই সঙ্গে আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার। আমার যদি কোনো ক্ষতি হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী থাকবে।
টাঙ্গাইল জেলা রিটার্নিং কর্মকতা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো তিনি এই আমরণ অনশন কর্মসূচি করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তার এই কর্মসূচি অব্যহত থাকবে বলে তার কর্মী সমর্থকরা জানান। সোমবার দুপুর ১টা পর্যন্ত তাকে অনশন কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়।
লতিফ সিদ্দিকীর তিন দফা দাবিগুলো হলো: কালিহাতীর থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেনকে প্রত্যাহার, হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি যাতে করে এ ধরনের হামলা ঘটনা আর না ঘটে, এ জন্য আ’লীগ প্রার্থী সোহেল হাজারীকে লিখিত দিতে হবে।
বাংড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাশমত আলী বলেন, লতিফ সিদ্দিকী সোমবার প্রতিকার না পেয়ে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। আমরণ অনশন তিনি কি কারণে করছেন। আমরা এই কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই।
লতিফ সিদ্দিকী প্রথমে সেখানে গতকাল রোববার অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও তিনি পরে কাঁথা, বালিশ বিছিয়ে শুয়ে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। এরপর তিনি আজ সোমবার থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির কারণে চৌকিতে শুয়ে আমরণ কর্মসূচি পালন করছেন।
গতকাল রোববার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি রোববার সকালে কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নে আমার নির্বাচনী কাজে যাই। প্রথমত সরাতৈল এবং বল্লভবাড়ির মাঝামাঝি এলাকায় আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে আমরা নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বল্লভবাড়িতে মহির উদ্দিন তালুকদারের বাড়িতে যাই। সেখানে গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন তালুকদারের সাথে কথা বলার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বর্তমান সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খানের ইন্দনে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা লাঠিসোটা দিয়ে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে অন্তত চারটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে আহত হন অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী।
লতিফ সিদ্দিকী কালিহাতীতে তার বাসায় সংবাদ সম্মেলনে করে এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। সেই মোতাবেক তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তিনি দলের সভাপতিমন্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী।
লতিফ সিদ্দিকীর পৈত্রিক নিবাস টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ী ইউনিয়নের ছাতিহাটী গ্রামে।