• ঢাকা, বাংলাদেশ

এবি ব্যাংক দুর্নীতি : পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পাসপোর্ট ফেরত ও বিদেশ ভ্রমনের অনুমতিতে রিভিউ চেয়েছে দুদক 

 admin 
30th Mar 2019 2:59 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

সিঙ্গাপুরে অফসোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের অন্তরালে ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে করা মামলার মূল হোতা আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের (এবি ব্যাংক) চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক এবং হেড অফ করপোরেশন (মামলার আরেক আসামি) ব্যবসায়ী মোস্তফা দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করছে! মামলার পর দুদক কর্তৃক এ দুই শীর্ষ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় দুদক তাদের পাসপোর্ট জব্দ করার পর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি এম ওয়াহিদুল হক এবং মোস্তফা কামাল আদালতের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফেরত ও বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি চাইলে আদালত কর্তৃত তাদের পাসপোর্ট ফেরত ও বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হয়। আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে দুদক থেকে রিভিউ চাওয়া হয়েছে। দুদক মনে করছে পাসপোর্ট ফেরত পেয়ে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেলে আলোচিত এ মামলার তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং আসামিরা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পারে।

গত বছরের ৩০ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরে অফসোর কোম্পানি সৃষ্টি করে বিনিয়োগের নামে আরব বাংলাদেশ ব্যাংক (এবি ব্যাংক) থেকে ১৬৫ কোটি টাকা পাচার এবং আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুদক। রাজধানীর মতিঝিল থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমেদ চৌধুরী, মো. ফজলুর রহমান, কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল, এবি ব্যাংকের হেড অফ অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের (ওবিইউ) মোহাম্মদ লোকমান, হেড অফ করপোরেট ব্যাংকিং মোহাম্মদ মাহফুজ উল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নুরুল আজিম এবং এবি ব্যাংকের গ্রাহক আটলান্টিক এন্টার প্রাইজের মালিক সাইফুল হককে আসামি করা হয়।

মামলার পরই ৩ আসামি সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াদিুল হক. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে দুদকের অনুসন্ধান টিম। মামলাটি তদারকি করছেন দুদকের উপপরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় মূল দুই আসামির বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ পাওয়া নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া অফসোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে ১৬৫ কোটি টাকা এবি ব্যাংকের চট্টগ্রাম ইপিজেড শাখা থেকে দুবাইয়ে পাচার করে এবং পরে তা আত্মসাৎ করে। কথিত ওই বিনিয়োগ এবং অর্থ আত্মসাতের নেপথ্যে ব্যাংকের গ্রাহক আটলান্টিক এন্টার প্রাইজের মালিক সাইফুল হকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এক সময় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে কাজ করা সাইফুল হকের এবি ব্যাংকে কোন অংশীদারিত্ব নেই। তবে তিনি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মোরশেদ খানের মেয়ের জামাই। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, সাইফুল হক দুবাইয়ে থাকাকালে আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের সদস্য খুররম আবদুল্লাহ ও আব্দুস সামাদ খানের সঙ্গে তার সখ্য হয়। তিনি এবি ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান ওয়াহিদুল হকেরও পূর্বপরিচিত। সাইফুল হকই এবি ব্যাংকের অর্থপাচারের বিষয়ে ওই প্রতারক চক্রের সঙ্গে ওয়াহিদুল হকের পরিচয় করিয়ে দেন। পরে দুবাই ও বাংলাদেশে একাধিকবার বৈঠক করেন তারা। মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াহিদুল হক ও আবু হেনা মোস্তফা কামাল ব্যাংকের বোর্ডকে না জানিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুবাই গিয়ে প্রতারক চক্রের সঙ্গে বৈঠক করেন। আর ওই প্রতারক চক্র পিনাকল গ্লোবাল ফান্ড (পিজিএফ) নামে একটি কোম্পানি সৃষ্টি করে। সেই কথিত পিনাকলের ৮ কোটি ডলারের সঙ্গে এবি ব্যাংকের ২ কোটি ডলার মিলিয়ে ১০ কোটি ডলারের একটি তহবিল গঠন করে তা দুবাইয়ে বিনিয়োগের একটি কাল্পনিক প্রস্তাব তৈরি করা হয়। আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও শামীম আহমেদের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংকের বোর্ড সভায় উপস্থাপন করে তা পাস করিয়ে নেয়া হয় ২০১৩ সালে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুবাইয়ে চেং বাও জেনারেল ট্রেডিং এলএলসি নামের এক কোম্পানির নামে পাঠানো ওই ২ কোটি ডলার আবুধাবির একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যায়। সেখান থেকে পরে তা আত্মসাৎ করা হয়।

দুদক সূত্র জানায়, সম্প্রতি আসামির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদার আসামি এম. ওয়াহিদুল হক এবং হেড অফ করপোরেশন আবু হেনা মোস্তফা কামালকে তিন মাসের বিদেশ গমনের অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু তারা ঘটনার মূল মূলহোতা অর্থ আত্মসাত এবং পাচারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাই একবার বিদেশ পলায়নের সুযোগ পেলে আর দেশে ফিরে আসবে না।

দুদকের অনুসন্ধান ও মামলার তদন্ত সংশ্লিস্ট কর্মকর্তা বলেন অফসোর কোম্পানীতে বিনিয়োগের অন্তরালে ১৬৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচার এবং আত্মসাত সংক্রান্ত মামলার মুল আসামী এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম, ওয়াহিদুল হক এবং হেড অব কপোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামালের বিদেশ গমনের উপর কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশনের জন্য দুদক থেকে নথি খোলা হয়েছে। ২৭ মার্চ বুধবার আদালতে আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করা হয়েছে। ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার আদালতে এ বিষয়ে শুনানী হতে পারে।

অনুসন্ধান সংশ্লিস্ট এক কর্মকর্তা বলেন, এবি ব্যাংক থেকে সিঙ্গাপুরে অফসোর কোম্পানীতে বিনিয়োগের অন্তরালে ১৬৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচার এবং আত্মসাতের ঘটনায় মূল হোতা সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক এবং হেড অব কপোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল। দুদকের অনুসন্ধানে এ বিষয়ে সব তথ্য প্রমাণ রয়েছে।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১