• ঢাকা, বাংলাদেশ

এসএমএস না পেলেও দেওয়া যাবে টিকা 

 admin 
07th Feb 2021 4:01 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

মহামারী থেকে মুক্তির বহু প্রত্যাশার গণটিকাদানের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। রাত পোহালেই সকাল ১০টা থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হচ্ছে টিকাদান। টিকা নিতে এরইমধ্যে নিবন্ধন করেছেন তিন লাখের বেশি মানুষ। রাতেই তাদের কাছে এসএমএস চলে যাবে। আর এসএমএস না পেলেও কেন্দ্রে গিয়ে টিকা দেওয়া যাবে।

প্রথম দিনে ঢাকাসহ সারা দেশে ১০১৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে, যার মধ্যে ঢাকার ৫০টি কেন্দ্র রয়েছে। ঢাকায় ২০৪টি এবং ঢাকার বাইরে ২ হাজার ১৯৬টি স্বাস্থ্যকর্মীদের দল এসব কেন্দ্রে সরাসরি টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে।

ধারাবাহিকভাবে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে মোট ৭ হাজার ৩৪৪টি দল প্রস্তুত করা হয়েছে।

বাংলাদেশে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই টিকার তিন কোটি ডোজ পেতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ এরইমধ্যে চলে এসেছে। এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে আরো ২০ লাখ ডোজ টিকা।

বাংলাদেশে এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ না হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী গত ২৭ জানুয়ারি ৫২৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়। তাদের কারও মধ্যে টিকার গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না যাওয়ায় পরিকল্পনা মতো কাল রবিবার গণটিকাদান শুরু হচ্ছে। এই টিকা নিরাপদ এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।

দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরুর আগের দিন আজ শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে আসেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।তিনি জানান, টিকা নিতে শনিবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৩ লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন নিবন্ধন করেছেন। টিকার জন্য নিবন্ধন করা না থাকলেও কেন্দ্র থেকে কাউকে ফেরত পাঠানো হবে না বলে আগেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। প্রত্যেককে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে প্রথম ডোজের ৮ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা হলেও সেখানে পরিবর্তন এসেছে। আরও আগেই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন।

জাতীয়ভাবে কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ ও প্রস্তুতি পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিন ভাগে (ফেইজ) মোট পাঁচ ধাপে এসব টিকা দেওয়া হবে। কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধে সামনের কাতারে থাকা মানুষ প্রাধান্য পাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. খুরশীদ আলম জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রবিবার সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু করবেন। এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে  করোনাভাইরাসের টিকা নেবেন। এখানেই জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের টিকা নেওয়ার কথা রয়েছে।

এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে টিকা নেওয়ার কথা রয়েছে।

টিকাদানের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে জানিয়ে ডা. খুরশীদ আলম বলেন, মোটামুটি সব কেন্দ্রের প্রস্তুতি ভালো। আমরা ঢাকার হাসপাতালগুলো ঘুরেছি। প্রস্তুতি ভালো আছে। আশা করছি, সব কাজ সুন্দরভাবে শুরু করতে পারব।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রবিবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকাসহ জেলা-উপজেলায় টিকাদান শুরু হবে। এরপর থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, যারা টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন, তাদের মোবাইলে আজ রাতের মধ্যেই এসএমএস চলে যাবে। তিনি বলেন, টিকা ৪ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশনা ছিল। আমরা চিন্তা করছি ৪ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে দেব।

এরইমধ্যে হাতে আসা ৭০ লাখ ডোজ নিয়ে সরকার করোনাভাইরাসের গণ টিকাদান শুরু করছে। সেরামের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা আসার কথা রয়েছে। বছরের ছয় মাসের মধ্যে চুক্তির তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে। এর বাইরে কোভ্যাক্স থেকে আগামী জুনের মধ্যে সোয়া এক কোটি ডোজ টিকা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

প্রাথমিকভাবে প্রথম মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হলেও পরে তা কমিয়ে ৩৫ লাখে নামিয়ে আনা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন, এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ অপারেশনাল প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এবং এমআইএস শাখার লাইন ডিরেক্টর ডা. মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১