
ফাইজারের তৈরি করোনা-প্রতিরোধক ট্যাবলেট নিয়ে বেশ আশাবাদী প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীরা। ওষুধটির নাম পিএফ- ০৭৩২১৩৩২। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও বেলজিয়ামে মানবদেহে এ ওষুধের পরীক্ষা চলছে। সফল প্রমাণিত হলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ এটি বাজারে পাওয়া যেতে পারে।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, বর্তমানে টিকা ছাড়া অন্য কোনও ওষুধ নেই যা করোনা হলে শুরুতেই একে থামিয়ে দিতে পারে। করোনা থেকে প্রতিকারে সফল কোনো ওষুধ তৈরি হলেই কেবল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিংবা এলাকায় চলমান লকডাউনের ইতি টানা সম্ভব হতে পারে।
ওষুধ উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার কোম্পানি বিশ্বের অন্যতম জায়ান্ট করপোরেট প্রতিষ্ঠান। তারা এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে মানব দেহে পিএফ- ০৭৩২১৩৩২ নামের এই ট্যাবলেটের পরীক্ষা শুরু করেছে। ফাইজার বলছে, এ ওষুধটি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এ ওষুধটি মানুষের শরীরে করোনার লক্ষণ দেখা দিলেই প্রয়োগ করা যাবে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এটি শরীরে করোনাকে বাড়তে দেয় না। জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টির আগেই একে ধ্বংস করতে পারে।
ফাইজারের এই ট্যাবলেট মানব দেহে পরীক্ষার প্রথম পর্যায়ে রয়েছে। এ পর্যায়ে ৬০ জনের শরীরে এর পরীক্ষা চলছে। আশা করা হচ্ছে আগামী ২৫ মে এই পরীক্ষা শেষ হবে । পরীক্ষায় যদি ট্যাবলেটটি নিরাপদ প্রমাণিত হয়, তবে আরও বড়ো পরিসরে ল্যাব পরীক্ষার সুযোগ পাওয়া যাবে। তখন আরও বেশি মানুষের দেহে এর পরীক্ষা চালানো হবে। বিজ্ঞানীরা আশাবাদী তারা সে সুযোগ পাবেন এবং বছর শেষের আগেই এই পর্যায়ের গবেষণা সফলভাবে শেষ করতে পারবেন।
এদিকে ভাইরাস ধ্বংসে সক্ষম জাপানের তৈরি ওষুধ ফ্যাভিপিরাবির নিয়েও পরীক্ষা চলছে। করোনায় এটি কার্যকর কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর নেতৃত্বে আছেন যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী অধ্যাপক কেভিন ব্লাথ। তিনি বলেছেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে এ ওষুধটি দেওয়া যেতে পারে। কেভিন ব্লাথ বলেন: ‘অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগগুলি কাজ করলে তা এক বিশাল সফলতা বয়ে আনবে। তখন আর দেশ বা এলাকা লকডাউন করতে হবে না।
বর্তমান বাস্তবতা হলো, অধিকাংশ মানুষই করোনার টিকা নেবে। কিন্তু যেসব টিকা বিশ্বে চলছে তার কোনোটাই শতভাগ কার্যকর নয়। আবার কিছু মানুষের শরীর টিকা গ্রহনেরই যোগ্য নয়। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে টিকা কার্যকরও নয়। ফলে টিকা গ্রহণ সত্ত্বেও করোনার সংক্রমণ চলতেই থাকবে। টিকা গ্রহণের মধ্য দিয়ে সুরক্ষিত মানুষজনও এ পরিস্থিতিতে করোনার ঝুঁকির মধ্যেই থেকে যাবে।
অন্যদিকে, যাদের শরীর টিকা গ্রহণে সক্ষম নয় এবং যাদের শরীরে টিকা কার্যকর নয়, তাদের ক্ষেত্রে এসব ট্যাবলেট হয়ে উঠবে করোনা মুক্তির মোক্ষম উপায়। তাদেরকে করোনায় গুরুতরভাবে অসুস্থ হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে দেবে এসব ট্যাবলেট । এর মধ্য দিয়ে টিকার বিকল্প হিসেবে ট্যাবলেট করোনা নির্মূলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।
Array