
ঢাকা, শনিবার, ১২ ডিসেম্বর-২০২০ : জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, মহামারি করোনা প্রতিরোধে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন বুকিং দিয়েছে সরকার। করোনা ভ্যাকসিন প্রত্যেককে দুটি করে ডোজ দিতে হয়। তাই তিন কোটি ভ্যাকসিন তিন কোটি মানুষ পাবেন নাকি দেড় কোটি মানুষ তিন কোটি ভ্যাকসিন পাবেন তা পারিস্কার নয়। তিনি বলেন, বাকি ১৪ থেকে ১৫ কোটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা কি হবে দেশের মানুষ তা জানতে চায়। বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন কিনতে পারবেনা, সাধারণ মানুষ বাঁচাতে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে। তিনি বলেন, করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে যেন কোন মহল বাণিজ্য করতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকতে হবে। আবার নকল ভ্যাকসিনে যেন সয়লাব না হয়, সেজন্যও সতর্ক থাকতে হবে। করোনা প্রতিরোধের ভ্যাকসিন একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। তাই ভ্যাকসিন সংরক্ষণ ও পরিবহনে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা পরিস্কার নয়। তিনি বলেন, প্রতিটি দূর্যোগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে বারবার বলা হয় সবকিছু প্রস্তুুত করা হয়েছে কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় সব কিছু এলোমেলো। তাই করোনা ভ্যাকসিন পরিবহন, সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপণা নিশ্চিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারা টিকা পাবেন তার একটি তালিকা প্রস্তুত করা জরুরী। আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান-এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় ছাত্র সমাজ-এর সাধারণ সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
জাতীয় ছাত্র সমাজ এর সভাপতি ইব্রাহীম খাঁন জুয়েল-এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আল মামুন-এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, গোয়েবলসীয় তত্বে একটি মিথ্যা বারবার প্রচার করে সত্যের মত তৈরী করা হয়। সাবেক সফল রাষ্ট্রনেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর বিরুদ্ধে গোয়েবলসীয় তত্ত্বে অপপ্রচার করা হয়েছে। হাইকোর্ট পল্লীবন্ধুকে বৈধ রাষ্ট্র প্রধান স্বীকৃতি দিয়েছেন। বৈধ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবেই ৯০ সালে ক্ষমতা হস্থান্তর করেছেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এবং গায়ের জোরে পল্লীবন্ধুকে স্বৈরাচার বলা হয়েছে। তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু ক্ষমতা হস্থান্তরের পর তিন জোটের রুপরেখা অনুযায়ী দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু সংবিধানের ৭০ ধারা সংসদীয় গণতন্ত্রকে সংসদীয় স্বৈরতন্ত্রে পরিণত করেছে। ৭০ ধারা অনুযায়ী দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিতে পারেনা সংসদ সদস্যরা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যারা সরকার গঠন করে সেই দলের প্রধানই সরকার প্রধান হন। তার ইচ্ছের বাইরে কোন কিছুই করা সম্ভব হয়না। এতে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা স্বৈরতন্ত্রে রুপ নেয়। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরো বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তরের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শাসনামলে দেশ দুর্ণীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কিন্তু পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর শাসনামলে দেশ কখনোই দুর্ণীতে চ্যাম্পিয়ন হয়নি। তিনি বলেন, বিএনপি যৌথ বাহিনী এবং র্যাব গঠন করার মাধ্যমে দেশে বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড চালু করেছে। সেই ধারাবাহিকতা এখনো চলছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির শাসনামলে কোন বিচার বার্হিভূত হত্যাকান্ড ছিলনা। আমরা দেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিনা, আমরাই দেশের মানুষকে সুশাসন ও আইনের শাসন উপহার দেবো।
এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তরের পর ক্ষমতায় এসে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দেশের ছাত্র রাজনীতি কলুষিত করেছে। ছাত্র সংগঠনগুলোকে তাদের লেজুরবৃত্তি করতে বাধ্য করেছে। ছাত্র সংগঠনগুলোকে পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত করেছে। ছাত্রদের দলবাজী, টেন্ডারবাজী, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজীতে জড়িয়ে পড়ার জন্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দায়ী। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর শাসনামলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতো। কিন্তু বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে নেতৃত্ব তৈরির ধারাবাহিকতা বন্ধ করেছে। দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র সমাজকে আন্দোলনমুখী হতে আহবান জানান জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
জাতীয় ছাত্র সমাজ সভাপতি ইব্রাহীম খাঁন জুয়েল বলেন, ছাত্র দল ও ছাত্র লীগের বাইরে সাধারণ ছাত্রদের দাবি আদায়ে জাতীয় ছাত্র সমাজ সব সময় সোচ্চার ভূমিকা রাখবে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় ছাত্র সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে সবসময়।
জাতীয় ছাত্র সমাজ-এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন বলেন, ২৬ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্নাতক শেষ বর্ষের পরীক্ষা নিতে প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু আবাসিক হলগুলো এখনো বন্ধ। পরীক্ষা শুরুর আগে হল খুলে দেয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
জাতীয় ছাত্র সমাজ-এর সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন- চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর.অব. আব্দুস সালাম, মোস্তফা আল মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হেলাল উদ্দিন, হুমায়ুন খান, মাখন সরকার, আনোয়ার হোসেন তোতা, দফতর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, দফতর-২ এম.এ. রাজ্জাক খান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মোঃ জামাল উদ্দিন. যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হক নুরু, যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, ফয়সাল দিদার দিপু, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সাত্তার গালিব, মোঃ ফারুক শেঠ, আলমগীর হোসেন ও মিজানুর রহমান দুলাল। জাতীয় ছাত্র সমাজ-এর অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- শাহ ইমরান রিপন, মারুফ ইসলাম তালুকদার প্রিন্স, আরিফুল ইসলাম, ফয়সাল রানা, মোঃ রুহুল আমিন গাজী বিপ্লব, মোঃ সুলতান আহমেদ, এরশাদুল হক সিদ্দিকী, অর্ণব চৌধুরী, রাশেদুল হক খোকন, শাহাদৎ হোসেন রুপু, মোঃ জামাল হোসেন, শরিফ উদ্দিন, মির্জা সুমন আহমেদ, মোঃ ইউসুফ, সুবহান মজিদ বিদ্যুৎ, আতা ই রাব্বি তানভির, নজরুল ইসলাম, আল আমিন সরকার, শাহ আলম সবুজ, রুবেল মাহমুদ খান, মোঃ জাহাঙ্গীর সেলিম, ইমতিয়াজ আজিজ ড্যানি, মোঃ আরিফ আলী, কায়সারুজ্জামান হিমেল, মোঃ ইউসুফ আলী, মোঃ মাসদ অর রশীদ, তরিকুল ইসলাম, বিপ্লব দে, মোঃ হাবিবুল্লাহ, আতাউল্লাহ আরিফ, মাহমুদ হাসান অয়ন, মোঃ মুকুল হোসেন, দ্বীন ইসলাম, ফকির আল মামুন, আবু সাঈদ লিয়ন, হোসেন আহমেদ রাকিব, মোঃ মোস্তফা সুমন, তানভির হোসেন সুমন, মোঃ আফজাল হোসেন, মাহমুবুর রহমান পরাগ, ফরহাদ আলী খোকন, মোঃ আফজাল হোসেন, মোঃ আশিকুর রহমান আশিক, মানিক খান, মোহাম্মদ রাজু, লিমন মোহাম্মদ মোল্লা, মোঃ মিজানুর রহমান, নয়ন সর্দার, মো: গিয়াস, সুমন আহমেদ স্বপন, মোঃ আশিকুর রহমান মোস্তফা, হাফিজ উদ্দিন।
সংগঠনের সারাদেশের সাংগঠনিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন জাতীয় ছাত্র সমাজ-এর সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান রেজা।
Array