
সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস’ আইনের মামলায় ছয় দিন পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। রোববার বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান এই অনুসন্ধানী সাংবাদিক। কারফটকে উপস্থিত রোজিনার পরিবারের সদস্যরা একটি প্রাইভেটকারে করে তাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।
এর আগে কারাফটকে রোজিনা ইসলামকে ফুল দিয়ে বরণ করেন তার পরিবারের সদস্য, সহকর্মী ও সেখানে উপস্থিত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা।
এর আগে রোববার সকালে ভার্চুয়াল আদালতে শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম বাকী বিল্লা পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা এবং পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুর করেন।
রোজিনার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। তবে বিচারক সেদিন কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে বিষয়টি রোববার আদেশের জন্য রাখেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল্লাহ আবু রোববার শুনানিতে বলেন, সাংবাদিক রোজিনাকে জামিন দেওয়া হলে তাদের আপত্তি নেই। তবে তার পাসপোর্ট যেন জমা রাখা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ওই শর্ত নিয়ে কোনো আপত্তি না থাকার কথা জানালে বিচারক অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
রোজিনার এ জামিনের মেয়াদ হবে মামলার পরবর্তী তারিখ অর্থাৎ ১৫ জুলাই পর্যন্ত। ওইদিনই এ মামলায় পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে আদালত। মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
রোজিনার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি ও আশফ উল আলম। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রশান্ত কর্মকার ও আমিনুল গণি টিটো।
তবে ভার্চুয়াল শুনানি হওয়ায় রোজিনাকে আদালতে আনা হয়নি। তাকে রাখা হয়েছিল গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারেই।
রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে গত ১৭ মে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তার কক্ষে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
পরে রাতে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে ব্রিটিশ আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডিবিধির কয়েকটি ধারায় মামলা করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
রোজিনা ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর তার সহকর্মীরা বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘অনিয়ম-দুর্নীতি’ নিয়ে প্রতিবেদন করায় তাকে ‘হয়রানি’ করা হচ্ছে ব্রিটিশ আমলের এক আইন ব্যবহার করে।
সচিবালয়ে আটকে রাখার সময় রোজিনাকে ‘শারীরিকভাবে হেনস্তা’ করা হয় বলেও অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
Array