• ঢাকা, বাংলাদেশ

কে এই রাধা বিনোদ পাল যার কারণে জাপান বাংলাদেশকে এত সহযোগিতা করে ? 

 admin 
24th Nov 2018 6:50 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

সূর্যোদয়ের দেশ জাপান বর্তমান পৃথিবীর শিল্পসমৃদ্ধ দেশগুলোর ভিতর প্রথম অবস্থানে রয়েছে। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর শিল্পে অনেক তাড়াতাড়ি সমৃদ্ধি অর্জন করে দেশটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে জাপান বাংলাদেশ এর পক্ষ নেয়। এমনকি যুদ্ধপরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের বন্ধু হিসেবে জাপানের ভূমিকা ছিলো অনেক। বাংলাদেশের প্রতি জাপানের এই ধরনের স্বার্থহীন বন্ধুত্বসুলভ আচরণ আন্তর্জাতিক সম্পর্কে সাধারণত দেখা যায় না। জাপানের বাংলাদেশকে এরূপ সাহায্যদানের পিছনে রয়েছে একটি ইতিহাস !জাপানীরা ১৯৩৭ সালে নানকিং (এখন নানজিং) এ চাইনিজদের কচুকাটা করেছিলো। খুন, ধর্ষণ মিলিয়ে এমন নৃশংসতা কমই দেখেছে বিশ্ব। The Flowers of War নামে একটি মর্মস্পর্শী মুভি আছে এই গণহত্যা নিয়ে। জাপানীরা এর আগে পরেও লাখে লাখে মরেছে-মেরেছে। শেষতক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জব্দ জাপান বাধ্য হয়ে রক্তের নেশা ছেড়ে জাতি গঠনে মনযোগ দিয়েছিলো বলেই আজ তারা পৃথিবীর অন্যতম সভ্য জাতিতে পরিণত হতে পেরেছে।এই জাতি গঠনের পিছনে জাপানীরা চিরকৃতজ্ঞ কুষ্টিয়ায় জন্ম নেয়া একজন বাঙালির কাছে। মিত্রপক্ষের চাপ সত্বেও ইন্টারন্যাশনাল যুদ্ধাপরাধ টাইব্যুনালের ‘টোকিও ট্রায়াল’ ফেজে এই বাঙালি বিচারকের দৃঢ় অবস্থানের কারণেই জাপান অনেক কম ক্ষতিপূরণের উপরে বেঁচে গিয়েছিলো। নয়ত যে ক্ষতিপূরণের বোঝা মিত্রপক্ষ ও অন্য বিচারকরা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, তার দায় এখন পর্যন্ত টানতে হত জাপানকে। সেক্ষেত্রে ঋণের বোঝা টানতে টানতে জাতি গঠনের সুযোগই আর পাওয়া হত না জাপানের।

সেই সময়েই জাপানী সম্রাট হিরোহিতো কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে বলেছিলেন, “যতদিন জাপান থাকবে, বাঙালি খাদ্যাভাবে, অর্থকষ্টে মরবেনা। জাপান হবে বাঙালির চিরকালের নিঃস্বার্থ বন্ধু” !

এটি যে শুধু কথার কথা ছিলো না, তার প্রমাণ আমরা এখনো দেখতে পাই। জাপান এখনো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নিঃস্বার্থ বন্ধু। এই ঘটনার প্রায় ৬৫ বছর পর ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিসান হামলায় প্রাণ গেলো নয় জাপানিজ বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারের। জাপান তখনও পাশে ছিলো বাংলাদেশের…

আর কুষ্টিয়ায় জন্ম নেয়া সেই বাঙালি বিচারকের নাম এখনো জাপানী পাঠ্যপুস্তকে পাঠ্য। তাঁর নামে জাপানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বেশ কিছু মেমোরিয়াল ও মনুমেন্ট। এই বিস্মৃত বাঙালির নাম বিচারপতি রাধা বিনোদ পাল (১৮৮৬-১৯৬৭)। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারক ছাড়াও জীবদ্দশায় অনেক বড় বড় দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে তিনি কুষ্টিয়ায় নিজ গ্রামের স্কুল ও রাজশাহী কলেজের ছাত্র ছিলেন। কর্মজীবনের শুরুতে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে প্রভাষক ছিলেন। কিছুদিন ময়মনসিংহ কোর্টে আইন ব্যবসাও করেছিলেন। নেটফ্লিক্সে টোকিও ট্রায়াল (Tokyo Trial) নামের সিরিয়াল রয়েছে। যেখানে রাধা বিনোদের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ইরফান খান।

রাধা বিনোদ পাল ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য খুলে দেয়া এক জানালার নাম ! এই মেধাবী বাঙালিকে আমরা প্রায় কেউই মনে রাখিনি। বাঙালির মেধাগত বীরত্বের এই চমৎকার অধ্যায়টা জানে খুব অল্প মানুষ! অথচ কত ঠুনকো বিষয়ই না বাঙালি মানসে পায় সীমাহীন গুরুত্ব !

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১