admin
09th Aug 2019 5:11 pm | অনলাইন সংস্করণ

দৈনন্দিন জীবনে ক্লান্তিবোধ হওয়া খুবই সাধারণ সমস্যা। অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে, পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ না করলে, ঠিকমত গভীর ঘুম না হলে মানুষ ক্লান্তিবোধ করে। কিন্তু এই ক্লান্তিবোধ খুবই স্বল্প সময় থাকে এবং সঠিকভাবে খাবার খেলে, ঘুমালে বা অতিরিক্ত পরিশ্রম না করলে এই ক্লান্তিবোধ কেটে যায়। কিন্তু কেউ যদি সব সময় ক্লান্ত থাকে এবং তা যদি অনেক দিন থাকে তাহলে বিষয়টি খুবই চিন্তনীয়। নীচে ক্লান্তিবোধের কিছু কারণ সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো-
১. হৃদযন্ত্রের সমস্যা- হার্টের ভালভের সমস্যা, হার্টের কার্যকারিতা কমে গেলে, হার্টের রক্ত চলাচল কমে গেলে রোগী ক্লান্তিবোধ করে। ক্লান্তির সাথে রোগীর শ্বাসকষ্ট, পা ফুলে যাওয়া, বুকের ব্যথা হওয়া, বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি লক্ষণগুলো থাকে।
২. হরমোন সমস্যা- থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতা বেড়ে গেলে অথবা কমে গেলে, ডায়াবেটিস হলে রোগীরা ক্লান্তবোধ করেন। এসব ক্ষেত্রে রোগীর প্রচুর প্রস্রাব হওয়া, পিপাসা লাগা, স্বাস্থ্য ভেঙ্গে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করা, গরম লাগা, শুকিয়ে যাওয়া, বেশি বেশি ঘাম হওয়া বা মোটা হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত শীত লাগা, শরীরের ব্যথা, গলার স্বর ভেঙ্গে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ থাকে।
৩. রক্ত শূন্যতা- আয়রন, ভিটামিন বি-১২, ফলিক এসিড ইত্যাদির অভাবে শরীরে রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যায় ফলে খুবই ক্লান্ত লাগে। এসব ক্ষেত্রে রোগীর রোগের ইতিহাস ঠিকমত নিয়ে ও শারীরিক লক্ষণগুলো পর্যালোচনা করলে রক্ত শূন্যতার কারণ সম্বন্ধে ধারনা পাওয়া যায়।
৪. মানসিক সমস্যা-অতিরিক্ত মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা, সব সময় জীবনের খারাপ দিকগুলো নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা ইত্যাদির কারণে মানুষ খুবই ক্লান্তবোধ করেন।
৫. ঘুমের সমস্যা- পর্যাপ্ত ঘুম মানুষের শরীর ও মনকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে। কোন কারণে যদি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে যেমন- সঠিক পরিমাণ ঘুম না হওয়া, গভীর ঘুম না হওয়া, ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি হলে রোগী পরবর্তীতে খুবই ক্লান্তবোধ করেন।
৬. অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন- অপুষ্টিহীনতা, কাজকর্ম না করা, অতিরিক্ত ধূমপান করা, মদ পান করা ইত্যাদি কারণে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তিবোধ হয়।
৭. ওষুধ জনিত ক্লান্তিবোধ- কিছু কিছু ওষুধ যেমন- ঘুমের ওষুধ, বিষণ্ণতার ওষুধ, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ অনেক দিন সেবন করলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে মানুষ ক্লান্তিবোধ করেন।
৮. ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রম- এটি একটি রোগ যাতে রোগী ক্লান্তিবোধ করে এবং তার দৈনন্দিন কার্যক্ষমতা কমে যায়। এটি সাধারণত মহিলা, তরুণ ও যুবকদের বেশি হয়।
৯. ভাইরাস জ্বর- একটি ইনেফক্সাস মনোনিউক্লিওসিস একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এত রোগীর জ্বর হয়, গলা ব্যথা করে, গায়ে র্যাশ উঠে, লাসিকা গ্রন্থি, লিভার, পীহা বড় হয়ে যায়। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা দীর্ঘ দিন ক্লান্তিবোধ করতে পারেন।
ক্লান্ত লাগলে করণীয়- সব সময় ক্লান্তিবোধ হলে রোগীকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রাথমিক পর্যায়ে যদি এর কারণ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা যায় তাহলে রোগী ভালো করা সম্ভব।
Array