• ঢাকা, বাংলাদেশ

খেলাপি ঋণে রেকর্ড 

 admin 
07th Dec 2018 7:57 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবমতে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। আর বছর ব্যবধানে বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক এবং তফসিলি ব্যাংকগুলো নানা পদক্ষেপের কথা বললেও কার্যত কমছে না খেলাপি ঋণ। ভোটের আগে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেশ কিছু গ্রাহক তাদের ঋণ নিয়মিত করেছে। তবে তাতে ইতিবাচক কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু ব্যাংকাররা বলছেন, ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ কমে যাবে। কারণ নতুন ব্যাংকগুলো নিজেদের আর্থিক অবস্থান ভালো দেখাতে বিশেষ সুবিধা দিয়ে গ্রাহকের ঋণ নিয়মিত করে থাকে। ফলে বছরের শেষ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ কমে যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মোতাবেক, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। জুন প্রান্তিক শেষে ৫৭টি ব্যাংকের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত তিন মাসে ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা, যা বেড়ে যাওয়া খেলাপি ঋণের সমপরিমাণ। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৮০ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। সে হিসেবে বছর ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা।

চলতি বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ৮৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ। গত বছরের জুনে ছিল ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর প্রায় এক-চতুর্থাংশ ঋণখেলাপি। সেপ্টেম্বর শেষে ৬ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৩ শতাংশ। এই সময়ে মোট ঋণ বিতরণ করেছে ৬ সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ১ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকা। অবশ্য মোট খেলাপির অর্ধেকই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। এই সময় ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণ ১ লাখ ৫১ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। জুন থেকে সেপ্টেম্বরে এসে হার কমলেও খেলাপি ঋণ দেড়েছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। মার্চ শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণ ছিল ৪৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা।

বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ২৪১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এ সময় তাদের মোট ঋণ ২৪ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে এই হারে উল্লেযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি।

অন্যদিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর। জুন শেষে ৪০টি বেসরকারি ব্যাংকের মোট ঋণের স্থিতি ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৫০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৩৮ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। সেপ্টেম্বর শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করেছে ৬ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যার ৪৩ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছে, যা মোট ঋণের ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

দেশে পরিচালিত ৯টি বিদেশি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ৭ শতাংশ, যা আগের প্রান্তিক থেকে এক শতাংশ বেশি। এ সময় বিদেশি ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করেছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। যার ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা খেলাপি। জুন শেষে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। জুন শেষে তাদের মোট ঋণ ৩৪ হাজার ৮৪ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ ২ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, খেলাপি ঋণের উচ্চ পরিমাণ ও হারের কারণ ব্যাংক খাতে সুশাসনের ঘাটতি। এ ঘাটতি একসময় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে ছিল। বেসরকারি ব্যাংকগুলো তার মূলধন ঘাটতির ভয়ে ঋণ বিতরণে সতর্ক থাকত। কিন্তু বর্তমানে সেটিও নেই। ফলে সার্বিকভাবে খেলাপি ঋণ কমাতে তদারকি এবং পদক্ষেপে ঘাটতি রয়েছে।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১