• ঢাকা, বাংলাদেশ

চীনা ভাইরাস ঠেকাতে সতর্কতা বাংলাদেশেও 

 admin 
22nd Jan 2020 6:34 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

বাংলাদেশে এখনও কেউ শনাক্ত না হলেও বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনা কর্তৃপক্ষ। রোগটির উপর নজরদারি বাড়িয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চীনে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভাইরাসের সংক্রমণে নিউমোনিয়া ধরনের এই রোগে দেশটিতে গত দুদিনে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ১৩৯ জন। বিবিসি জানিয়েছে, শুরুতে উহান প্রদেশে এই রোগ দেখা দিলেও এখন বেইজিং, সাংহাই ও সেনঝেন প্রদেশেও আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এরই মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। জাপান, থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ায়ও ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

সার্স ভাইরাস সংক্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে এবার বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন থেকে নতুন রোগটির ছড়িয়ে পড়া আটকাতে বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশের প্রস্তুতি কী- সোমবার খবর নিতে গেলে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশে এখনও এ ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নজরদারি বাড়িয়েছে।

“আমরা নিবিড়ভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা সতর্ক আছি এবং আমরা প্রস্তুতও আছি।” বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে  চিঠি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “বিমানবন্দরের স্বাস্থ্যকর্মীদের আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি।

“সিভিল এভিয়েশনে চিঠি দিয়ে বলেছি, যেসব যাত্রী চীন থেকে আসছেন, তারা যেন এয়ারপোর্টের থার্মাল স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে যান। সেটা যেন নিশ্চিত করা হয়। যদি কারও জ্বর পাওয়া যায়, তাহলে আমরা ধরতে পারব।” চীন থেকে সরাসরি ঢাকায় যাত্রী পরিবহন করে এমন তিনটি এয়ারলাইন্সের সঙ্গে ইতোমধ্যে কথা বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “সবাইকে সতর্ক করছি। হেলথ কার্ড তৈরি করছি। যারা চীন থেকে আসবে, তাদের ওই কার্ডটা দিয়ে দেওয়া হবে। তাদের বলা হয়েছে, আসার সময় জ্বর না থাকলেও চীন থেকে আসার ১৪ দিনের মধ্যে যদি জ্বর হয়, তাহলে যেন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।”

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক এ এইচ এম তৌহিদ-উল-আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় বলেন, তারা ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ভাইরাসটির বিভিন্ন লক্ষণ সম্পর্কে বিমানবন্দরে ডিজিটাল ফরমেটে তথ্য দেওয়া হয়েছে।

“চীন থেকে যেসব যাত্রী বাংলাদেশে আসবে, তাদের থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের একটি কার্ড পূরণ করতে হবে। ঢাকায় আসার পর সেটি বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য ডেস্কে জমা দিতে হবে।”

তৌহিদুল বলেন, থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষায় কোনো যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি পাওয়া গেলে তাকে প্রথমে বিমানবন্দরের পর্যবেক্ষণ কক্ষে রাখা হবে। পরে তাকে প্রয়োজনে কুর্মিটোলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা তার শারীরিক অবস্থার তথ্য সংগ্রহে রাখবেন।

সর্তকতা জারি হলেও এখনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা আক্রান্ত হতে পারেন, এমন কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জানান তৌহিদুল আহসান।চীনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সঞ্চারিত হয়। এতে আক্রান্ত হলে সর্দিজ্বর হয়, সেই সঙ্গে মাথা ব্যথা, কাশি, শরীরের অস্বস্তি বোধ হয়।

সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রের রোগ। এটার প্রধান লক্ষণ জ্বর। সঙ্গে সর্দি, কাশি, গলাব্যথা থাকে।” গবেষকরা বলছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে তো বটেই, হাঁচি-কাশি থেকে বায়ুর মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।

রোগটি কতটা মারাত্মক- এ প্রশ্নে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, রোগটিকে তেমনভাবে প্রাণঘাতি বলা যায় না। “তারপরও এখন পর্যন্ত তিনজন মানুষ মারা গেছে, সে কারণে গুরুত্ব কমও না। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ আক্রান্তই সিরিয়াস না। তিনজন যেহেতু মারা গেছে সে কারণে আমাদের সবদিক থেকেই প্রস্তুতি রাখতে হবে।”

এই ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে হাত সাবান দিয়ে ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। হাত না ধুয়ে চোখ, নাক ও মুখে তা না দিতে বলা হচ্ছে। আক্রান্তদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। আক্রান্ত হলে জ্বর ও ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে প্রচুর তরল পানের পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনাভাইরাস পরিবারের নতুন এই ভাইরাসটির প্রথম দেখা মেলে।

চীনা কর্মকর্তারা বলছেন, উহানের বন্যপ্রাণী ও সামুদ্রিক খাবারের বাজারে কোনো দূষিত প্রাণী থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর জানুয়ারির শুরুতেই উহানের ওই বাজারটি বন্ধও করে দেওয়া হয়।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১