
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :ইসরাইলের কারাগারে টানা ছয় মাস অনশন-ধর্মঘট পালন করছেন এক ফিলিস্তিনি যুবক। কারাগার থেকে মুক্তির দাবিতে চলতি বছরের মার্চ থেকে অনশন করছেন খলিল আউআউদা। সোমবার (২৯ আগস্ট) তার এ অনশন ১৮০ দিনে গড়িয়েছে। এখন তার স্বাস্থ্যের অবস্থা এতটাই নাজুক যে, যেকোনো সময় মারা যেতে পারেন। তবু মন গলছে না ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো অভিযোগ ছাড়াই গত বছরের (২০২১) ডিসেম্বরে ৪০ বছর বয়সী স্বাস্থ্যবান খলিলকে আটক করা হয়। সেই থেকে কোনো অভিযোগপত্র বা কোনো বিচার ছাড়াই বন্দি করে রাখা হয়েছে তাকে। শুধু খলিলই নন, ইসরাইলি কারাগারে এভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরছে শত শত ফিলিস্তিনি তরুণ ও যুবক। এটাকে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশন’ বলা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে ইহুদিবাদী ইসরাইল এই নীতি অনুসরণ করে আসছে এবং শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে তারা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনা বিচারে ও বিনা অভিযোগে আটকে রাখে। এসব বন্দির বিরুদ্ধে কোনো রায় কিংবা শাস্তি ঘোষণা করা হয় না। বর্তমানে ৪ হাজার ৪৫০ ফিলিস্তিনিকে কারাগারে আটকে রেখেছে ইসরাইল। এর মধ্যে ৬৭০ জন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশনে রয়েছেন।
অনশন-ধর্মঘটকে সারা বিশ্বেই কারাবন্দিদের প্রতিবাদের অহিংস পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা যায়। ইসরাইলের কারাগারে থাকা এ ফিলিস্তিনি বন্দিরাও প্রায়ই অনশন-ধর্মঘট করেন। উদ্দেশ্য মুক্তি নিশ্চিত করা। একইভাবে কোনো অভিযোগ গঠন ছাড়াই ও বিনা বিচারে আটকে রাখার প্রতিবাদে গত বছর থেকে অনশন-ধর্মঘট করছেন খলিল।
টানা ছয় মাস ধরে অনশন করায় খলিলের স্বাস্থ্য এখন খুবই নাজুক। দেহ চর্মসার। খলিলের আইনজীবী জানান, তার ওজন ৪০ কেজিতে নেমে এসেছে। ওজন কমেছে প্রায় ৪৫ কেজি। হাসপাতালের বিছানা থেকে খলিল বলেন, তিনি ভেতর থেকে শেষ হয়ে আসছেন। তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। তিনি বলেন, আল্লাহর রহমত, ধৈর্য ও দৃঢ়তা তাকে ধর্মঘট চালিয়ে নিতে সাহায্য করছে।
২০০০ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলের কারাগারে মোট ১২ বছর কাটিয়েছেন খলিল। এর মধ্যে পাঁচ বছরই অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশনে। গত বছরের ডিসেম্বরে আটক হওয়ার পর খলিল প্রথম পর্যায়ে ১১১ দিন অনশন-ধর্মঘট পালন করেন। তখন ইসরাইলের পক্ষ থেকে তাকে মুক্তির আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। সেই আশ্বাসের ভিত্তিতে তিনি অনশন-ধর্মঘটের অবসান ঘটান। কিন্তু ইসরাইলের কর্মকর্তারা কথা রাখেননি। আর তাই তিনি আবারও অনশন-ধর্মঘট শুরু করেন।
Array