• ঢাকা, বাংলাদেশ

জাহাজ ভেঙে আবারো শীর্ষে বাংলাদেশ 

 admin 
01st Feb 2019 10:26 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী জাহাজ ভাঙার পরিমাণ ছিল প্রায় এক কোটি ৮৯ লাখ টন। এর ৪২ শতাংশই ভাঙা হয়েছে চট্টগ্রামের ইয়ার্ডগুলোয়। এতে টানা চতুর্থবারের মতো জাহাজ ভাঙায় শীর্ষস্থান ধরে রাখল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জাহাজ ভাঙা হয় চট্টগ্রামের ইয়ার্ডগুলোতে।

বিশ্বব্যাপী জাহাজ ভাঙা ও এর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে কাজ করে বেলজিয়ামভিত্তিক গবেষণা সংস্থা এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম। বুধবার সংস্থাটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বিশ্বব্যাপী জাহাজ ভাঙা কমছে, যদিও বাংলাদেশে এ সময় জাহাজ ভাঙার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী জাহাজ ভাঙার পরিমাণ এক কোটি ৮৮ লাখ ৯১ হাজার ৩২২ টন। এর মধ্যে বাংলাদেশেই ভাঙা হয় ৭৯ লাখ ৩৬ হাজার ১৮৬ টন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাশের দেশ ভারত। দেশটিতে গত বছর জাহাজ ভাঙার পরিমাণ ছিল ৪৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৪৭ টন। আর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার অপর দেশ পাকিস্তান। দেশটিতে ২০১৮ সালে জাহাজ ভাঙার পরিমাণ ৪২ লাখ ১৫ হাজার ১১৭ টন।

দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে তুরস্কে গত বছর জাহাজ ভাঙা হয় ৯ লাখ ৬২ হাজার ৯৮৬ টন, চীনে চার লাখ ২৪ হাজার ৩২ টন ও ইইউতে ৭২ হাজার ৪৩৮ টন। এর বাইরে বিশ্বের অন্যান্য দেশে গত বছর ভাঙা হয় তিন লাখ ৬১ হাজার ৯১৬ টনের সমপরিমাণ জাহাজ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক বছর ধরেই অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়াও চলছে বড় বেশকিছু অবকাঠামো নির্মাণকাজ। পাশাপাশি আবাসন খাতেও মন্দা কিছুটা কাটতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে দেশে রডের চাহিদা বাড়ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পেও লোহার ব্যবহার বাড়ছে। এ চাহিদা পূরণে অন্যতম ভূমিকা রাখছে জাহাজ ভাঙা। ফলে এ শিল্পে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।

এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্মের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাপী জাহাজ ভাঙার পরিমাণ প্রায় দুই কোটি সাত লাখ টন। এর মধ্যে বাংলাদেশে ভাঙা হয় ৬৫ লাখ ৬৮ হাজার ২২৭ টন। ভারতে সে বছর জাহাজ ভাঙার পরিমাণ ছিল ৫৯ লাখ ৮০ হাজার ৫১৪ টন ও পাকিস্তানে ৪০ লাখ ৭০ হাজার ৪৯৮ টন। জাহাজ ভাঙায় এ দুই দেশ ২০১৭ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে ছিল। আর চতুর্থ স্থানে থাকা চীনে ২০১৭ সালে জাহাজ ভাঙা হয় ২২ লাখ ৯৬ হাজার ১৯০ টন।

২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপী জাহাজ ভাঙার পরিমাণ দুই কোটি ৭৪ লাখ টন। এর মধ্যে বাংলাদেশে ভাঙা হয় ৯৫ লাখ ৫৩ হাজার ৯৩০ টন। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে সে বছর জাহাজ ভাঙার পরিমাণ ছিল ৮২ লাখ ২০ হাজার ১৯১ টন। তৃতীয় অবস্থানে থাকা পাকিস্তানে ওই সময় জাহাজ ভাঙা হয় ৬০ লাখ ৩৫ হাজার ২২৮ টনের জাহাজ। আর চতুর্থ স্থানে থাকা চীনে ভাঙা হয় ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ৫১৬ টনের জাহাজ।

এর আগে ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী জাহাজ ভাঙার পরিমাণ দুই কোটি চার লাখ টন। এর মধ্যে বাংলাদেশে ভাঙা হয় ৬৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬৩৩ টন। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে সে বছর জাহাজ ভাঙার পরিমাণ ছিল ৪৫ লাখ ২৩ হাজার ৩৪৭ টন। সে বছর জাহাজ ভাঙায় তৃতীয় স্থানে ছিল চীন। দেশটিতে ২০১৫ সালে জাহাজ ভাঙার পরিমাণ ছিল ৪১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৫১ টন। আর চতুর্থ স্থানে থাকা পাকিস্তানে ওই সময় জাহাজ ভাঙা হয় ৩৭ লাখ ৩১ হাজার ৫৩২ টন।

যদিও সমুদ্রসৈকতে গড়ে তোলা ইয়ার্ডে জাহাজ ভাঙায় পরিবেশদূষণের ঝুঁকি অনেক বেশি। কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন ইয়ার্ডে এ শিল্পের শ্রমিকমৃত্যুর হারও কম নয়। এছাড়া জাহাজ ভাঙার সময় নির্গত গ্যাসে শ্রমিকরা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায়ও আক্রান্ত হচ্ছে। তাই জাহাজ ভাঙা নিয়ে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বিভিন্ন দেশে আন্দোলন করে আসছে। বাংলাদেশে এ নিয়ে বিভিন্ন সময় মামলা হয়েছে। এছাড়া নিম্নমানের ইয়ার্ডে জাহাজ বিক্রি বন্ধে ইইউ ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর নানা ধরনের চাপ রয়েছে। তবে এগুলোর কোনোটিই এ দেশের জাহাজ ভাঙায় প্রভাব ফেলতে পারেনি।

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর নেতাদের মতে, কয়েক বছর আগেও জাহাজ ভাঙায় বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে ছিল চীন। পরে এ জায়গা দখল করে ভারত। তবে জাহাজ ভাঙায় পরিবেশ ইস্যুতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও আইনি কাঠামো প্রণয়নের কারণে দেশ দুটিতে এর পরিমাণ কমছে। আর দুর্বল আইনি কাঠামোর সুযোগে বাংলাদেশে এর পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১