জিএম কাদেরই থাকছেন চেয়ারম্যান মহাসচিব পদে পরিবর্তনের গুঞ্জন

জিএম কাদেরই থাকছেন চেয়ারম্যান মহাসচিব পদে পরিবর্তনের গুঞ্জন

admin

07th Dec 2019 3:59 pm | অনলাইন সংস্করণ

জিএম কাদেরই থাকছেন চেয়ারম্যান মহাসচিব পদে পরিবর্তনের গুঞ্জন

আগামী ২৮ ডিসেম্বর সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের বাইরের খোলা চত্তরে কাউন্সিলের প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। কাউন্সিলে সারাদেশ থেকে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট মিলিয়ে অন্তত পঞ্চাশ হাজার প্রতিনিধি অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন জাপার একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। এছাড়া কেন্দ্রীয় পদে আসতে আগ্রহী নেতারা সম্মেলনের মুল প্যান্ডেলের বাইরের সড়কে নিজ নিজ অনুসারীদের নিয়ে শোডাউন করে শক্তিপ্রর্দশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জাপার জাতীয় সম্মেলনে দলের চেয়ারম্যন হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরই নির্বাচিত হচ্ছে, এটা পুরোপুরি নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরই নির্বাচিত হবেন। কারণ দলের সর্বস্থরের নেতাকর্মীরা জিএম কাদেরর প্রতি আস্থশীল। আর সিনিয়র কো: চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন বেগম রওশন এরশাদ। শুধু বাবলা নয়, দলের অধিংকাশ কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছেন, চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরই বিকল্প কেই জাপায় নেই।

চেয়ারম্যান পদে জিএম কাদের আবারো নির্বাচিত হচ্ছেন, বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হলেও মহাসচিব পদে পরির্বতন নিয়ে দলের সর্বস্থরের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ গুঞ্জন রয়েছে। জাপার একটি অংশ বর্তমান মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাকে মানতে নারাজ। অপর একটি অংশ সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারকে পদে ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা শুরু করেছেন। অপরদিকে আরেক সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুও মহাসচিব হতে চান বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই তিনজনের মধ্যেই যে কেউ মহাসচিব পদে নির্বাচিত হতে পারেন। এদিকে দলের জাতীয় কাউন্সিলর সফল ভাবে সম্পন্ন করার জন্য ইতিমধ্যে ১০১ সদস্যের প্রস্তুতি কমিটি গঠন করেছে জাপা ।

দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে আহবায়ক, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে যুগ্ন আহবায়ক এবং মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাকে সদস্য সচিবকে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম রওশন এরশাদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার সহ দলের সকল প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ও কয়েকজন ভাইস চেয়ারম্যান ও যুগ্ন মহাসচিবকে সদস্য করা হয়েছে।

এ ছাড়া দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের নেতৃত্বে করা হয়েছে বেশ কয়েকটি উপ-কমিটি। সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই উপ কমিটির সদস্যরা দফা দফা সভা করছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা কমিটি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টির অংগসহযোগী সংগঠনের গুলোর মধ্যে জাতীয় যুব সংহতি, জাতীয় ছাত্রসমাজ, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি, জাতীয় কৃষক পার্টি, জাতীয় মহিলা পার্টি বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে জাপার সম্মেলন সফল করার জন্য।

ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ জাপার নেতাকর্মীরা ছাড়াও ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা ও উপজেলা জাপার নেতাকর্মীরাও সম্মেলনকে ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। কেন্দ্রীয় পদে আসতে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সম্মেলনে নিজের অনুসারীদের নিয়ে যোগাদান করে নিজের শক্তি প্রর্দশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে সম্মেলনে মুল জমায়েত হয় জাপার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিট থেকে। এই জন্য এই দুই ইউনিটের নেতারা বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফা দফায় সভা করছেন ।

গতকালও কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতী পার্টির প্রস্তুতি সভা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলমে রুবেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করবেন দক্ষিণ জাপার সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি। সভায় দক্ষিণের অর্ন্তভুক্ত প্রায় সব থানা ও ওয়ার্ডের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপির নিজ নির্বাচনী এলাকা শ্যামপুর – কদমতলীতে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটে ইউনিটে প্রস্তুতি সভা চলছে।

শ্যামপুর কদমতলী থেকে এমপি বাবলার অনুসারী হিসেবে পরিচিত অন্তত সাত থেকে আট হাজার নেতাকর্মী সম্মেলনে অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন কদমতলী থানা জাপার সাধারণ সম্পাদক শেখ মাসুক রহমান। জাতীয় সস্মেলনের প্রস্তুতি সর্ম্পকে জাপা চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ভোরের ডাককে বলেন, সম্মেলনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ চলছে। আশা করি জাতীর কাছে একটি বর্নাঢ্য সম্মেলন উপহার দিতে পারবে জাতীয় পার্টি। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টি গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতিতে আরো সক্রিয় হবে।

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ন আহবায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, এবারের সম্মেলন হবে ঐতিহাসিক। সারাদেশ থেকে অর্ধলক্ষাধিক কাউন্সিলর ডেলিগেট সম্মেলনে অংশ নেবে। দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দলকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, বিদেশী প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সমাজের বিশিষ্টজনদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। সম্মেলনকে বনার্ঢ্য ও বর্নিল করার জন্য আমাদের প্রস্তুতি কমতি নেই।

Array