• ঢাকা, বাংলাদেশ

জোট-ঐক্যফ্রন্টের আসন রেখে চূড়ান্ত হচ্ছে প্রার্থী 

 admin 
18th Nov 2018 7:09 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

আজ ১৮ নভেম্বর রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে বিএনপির পক্ষ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার, চলবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত। ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীদের সম্ভাব্য আসন ছাড়া অন্যান্য আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করে ফেলার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যাচাই-বাছাইয়ে প্রার্থিতা বাতিল হলে যেন বিকল্প কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, তাই বিকল্প প্রার্থীও রাখা হবে। এ কারণে অধিকাংশ আসনে বিকল্প প্রার্থীকেও মনোনয়ন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

সাক্ষাৎকারকালে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তাদের সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে আসতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে তা অসদাচরণ বলে গণ্য হবে। এ ছাড়া গত শুক্রবার বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যে কোনোভাবে সংঘাত এড়িয়ে যেতে হবে; পুলিশের সঙ্গে মারামারি করা যাবে না। এ বার্তা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির হাইকমান্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা থাকছেন মনোনয়ন বোর্ডে। সবার সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার আগে ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের করা প্রার্থী তালিকাও দেখা হবে। তাই ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের খসড়া প্রার্থী তালিকা যত দ্রুত সম্ভব করতে বলা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি স্থায়ী কমিটির নেতারা কে কোন আসন থেকে নির্বাচন করতে চান, তা-ও দলকে যথাশিগগির সম্ভব জানাতে বলা হয়েছে। জানা গেছে, যাদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হবে, তাদের প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হবে। কিন্তু চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রত্যাহারের দু-একদিন আগে জানিয়ে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমান তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৮ নভেম্বর মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। যাচাই-বাছাই ২ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করতে পারবেন প্রার্থীরা। চূড়ান্তভাবে কাকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করবে ইসি? এমন প্রশ্নে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় দলের পক্ষ থেকে মনোনীত ব্যক্তির তালিকা জমা দেওয়া হবে। তিনিই চূড়ান্তভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন।

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সেশন সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ২টা পর্যন্ত চলবে। দ্বিতীয় সেশন শুরু হবে বিকাল আড়াইটা থেকে। আজ প্রথম সেশনে রংপুর বিভাগ এবং দ্বিতীয় সেশনে রাজশাহী বিভাগের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। রুহুল কবির রিজভী এসব তথ্য জানান। তিনি আরও বলেন, সোমবার (আগামীকাল) প্রথম সেশনে খুলনা বিভাগ ও দ্বিতীয় সেশনে বরিশাল; ২০ নভেম্বর প্রথম সেশনে চট্টগ্রাম, দ্বিতীয় সেশনে কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগ এবং ২১ নভেম্বর শেষদিন প্রথম সেশনে ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর এবং দ্বিতীয় সেশনে ঢাকা বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।

বিএনপির একাধিক নেতা জানান, প্রতিবার খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ড ডেকে একজন করে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হতো। কিন্তু এবার সেই প্রক্রিয়ায় না গিয়ে বিভাগওয়ারি সংশ্লিষ্ট আসনগুলোর মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আসনভিত্তিক একসঙ্গে সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মনোনয়ন বোর্ডের অন্যতম সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় আমাদের সময়কে বলেন, সব আসনেই যোগ্য প্রার্থীর অভাব নেই। কাকে রেখে কাকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়া হবে, সেটা নির্ধারণ করা আমাদের জন্য কঠিন হবে। এর পরও এই কঠিন কাজটি আমাদের করতে হবে নিরপেক্ষভাবে। তিনি আরও বলেন, প্রার্থী চূড়ান্ত করার আগে আমরা প্রার্থীর জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা আছে কিনা সেটা দেখব। এর পর দলের প্রতি কার কী ত্যাগ রয়েছে তা দেখার পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হবে।

জানা গেছে, বিকল্প প্রার্থী রাখার আরেকটি কারণ হচ্ছে, বেশি সংখ্যক পোলিং এজেন্ট দেওয়া। নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন যেন বুথে ধানের শীষের পক্ষে একাধিক এজেন্ট সক্রিয় থাকেন। কারচুপি ঠেকাতে একাধিক পোলিং এজেন্ট রাখা জরুরি বলে মনে করছে বিএনপি।

সংস্কারপন্থি ছাড়াও বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে যারা নিষ্ক্রিয় ছিল তাদের নিয়ে দল বিপাকে পড়েছে বলে জানান বিএনপির একাধিক নেতা। দলটির একাধিক নেতা বলেন, মনোনয়ন বোর্ডের প্রতি তৃণমূল নেতাদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। নিষ্ক্রিয় ও সংস্কারপন্থিদের কাউকে যদি মনোনয়ন দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দিতে পারে। বরিশাল, চাঁদপুর, রাজশাহী, জয়পুরহাট ও নরসিংদী থেকে তৃনমূলের নেতারা মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

যেসব আসনে ২০-দলীয় জোট বা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হতে পারেন

২০-দলীয় জোটের কর্নেল (অব) অলি আহমেদ চট্টগ্রাম-১৪ ও ১৩, রেদোয়ান আহমেদ কুমিল্লা-৭, শাহাদাত হোসেন সেলিম লক্ষ্মীপুর-১, আবদুল করিম আব্বাসী নেত্রকোনা-২, আবদুল গনি মেহেরপুর-২। মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম চট্টগ্রাম-৫, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ ভোলা-১, জাগপার শফিউল আলম প্রধানের মেয়ে তাসমিয়া প্রধান পঞ্চগড়-২, মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের রীতা রহমান নীলফামারী-১, মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার ম-ল যশোর-২। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য ড. কামাল হোসেন ফেনী-১ অথবা বগুড়া-৬, মোস্তফা মহসিন মন্টু ঢাকা-১০ অথবা ঢাকা-৭। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী চট্টগ্রাম-১২ অথবা ঢাকা-৬, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর মৌলভীবাজার-২, আ স ম আবদুর রব লক্ষ্মীপুর-৪, আবদুল মালেক রতন কুমিল্লা-৪ এবং তানিয়া রবের জন্যও একটি আসন ফাঁকা রাখা হবে। মাহমুদুর রহমান মান্নার বগুড়া-২ অথবা ৭ আসনও ফাঁকা রাখা হবে। টাঙ্গাইল ৮-এর পাশাপাশি আরও একটি আসনে ছাড় দেওয়া হতে পারে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা কাদের সিদ্দিকীর জন্য। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর তালিকা দেখে তাদের সঙ্গেও দরকষাকষি চলবে। জামায়াতের জন্য চূড়ান্ত হওয়া আসনগুলোতেও প্রার্থী ঘোষণা করবে না বিএনপি।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১