• ঢাকা, বাংলাদেশ

টার্গেটের অর্ধেকও খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থ সরকারি ব্যাংক 

 admin 
30th Nov 2020 2:30 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

এক দিকে যেমন খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে, অন্য দিকে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও খেলাপি ঋণ আদায় করতে পারছে না রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএলের খেলাপি ঋণ আদায়ের টার্গেট দেয়া রয়েছে ১৬ শ’ ৫ কোটি টাকা।

এই অনুযায়ী প্রতি প্রান্তিকে (তিন মাসে) খেলাপি ঋণ আদায় করার কথা ৪০০ কোটি টাকা। কিন্তু তারা আদায় করতে সক্ষম হয়েছে মাত্র ১৯১ কোটি টাকা। এই চিত্র চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সামগ্রিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল ৪২ হাজার ১২৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের ১০ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের ১৩ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের ৬ হাজার কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের ৪ হাজার ১৬১ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের ৭ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা ও বিডিবিএলের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৫৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
তবে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ছয় ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ বেড়ে ৪৩ হাজার ১১৮ কোটি ১১ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

অন্য দিকে, আগামী জুন শেষে ছয় ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা নির্ধারণের টার্গেট দেয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আলোচ্য সময়ে খেলাপি ঋণ কমাতে হবে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। এটি বাস্তবে সম্ভব হবে না বলে ব্যাংকাররা জানিয়েছেন।

সেপ্টেম্বর শেষে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের ১০ হাজার ৭৫৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা, জনতা ব্যাংক ১৩ হাজার ৯৯৯ কোটি ২০ লাখ টাকা, অগ্রণী ব্যাংক ৬ হাজার কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংক ৪ হাজার ১০২ কোটি ২২ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংক ৭ হাজার ৬০৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ও বিডিবিএলের ৬৫৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে।

জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ছয় ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ আদায় হয়েছে ১৯১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। কিন্তু বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এ সময় আদায় করার কথা ৪০০ কোটি টাকা। কারণ মোট বার্ষিক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে এক হাজার ৬০৫ কোটি টাকা।

আলোচ্য তিন মাসে সোনালী ব্যাংক আদায় করেছে ৯১ কোটি ৭১ লাখ টাকা (বার্ষিক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫০ কোটি টাকা)। জনতা ব্যাংক ৩৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা (বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ৪৫০ কোটি টাকা)। অগ্রণী ব্যাংক ৩৬ কোটি ৮ লাখ টাকা (বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ৪০০ কোটি টাকা)। রূপালী ব্যাংক ৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা (বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ১৪০ কোটি টাকা)। বেসিক ব্যাংক ১০ কোটি টাকা (বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ১২৫ কোটি টাকা)। বিডিবিএল আদায় করেছে ৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা (বার্ষিক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪০ কোটি টাকা)।

এ দিকে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলমান মহামারীর কারণে তারা এ বছর বেশ লোকসানে পড়বে। ব্যাংক ছয়টির নিজস্ব হিসাবে করোনার প্রভাবে তাদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা দাঁড়াতে পারে। তবে এর সাথে আরো ৭টি (মোট ১১টি) সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি যোগ করলে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এই ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিবেদনে আর্থিক ক্ষতির কারণ হিসেবে পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি, সুদ আয় কমে যাওয়া ও অন্যান্য সার্ভিস চার্জ হ্রাস এবং করোনাকালীন দুই মাসের সুদ স্থগিত রাখাসহ আরো কয়েকটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এসব কারণে সোনালী ব্যাংকের ক্ষতির প্রক্ষেপণ করা হয়েছে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা। জনতার ২,৫৩৩ কোটি টাকা, অগ্রণীর ১,০১৫ কোটি টাকা, রূপালীর ৮৫৬.৯০ কোটি টাকা, বেসিকের ৩১৯ কোটি টাকা, বিডিবিএলের ১৫০ কোটি টাকা, কৃষি ব্যাংকের ৪৪০ কোটি টাকা, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১৭৯ কোটি টাকা, কর্মসংস্থান ব্যাংকের ৬১ কোটি টাকা, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ২৪৭ কোটি টাকা ও আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের ক্ষতি হবে ৩১৬.২৫ কোটি টাকা। এর বাইরে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনও তাদের আর্থিক ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

 

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১