
ডোপ টেস্টে মাদক সেবনের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় কুষ্টিয়ায় কর্মরত আট পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বহিস্কৃতদের মধ্যে দুজন উপ-পরিদর্শক (এসআই), দুজন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) এবং বাকি চারজন কনস্টেবল পর্যায়ের বলে জানা গেছে। এ ছাড়া মাদক সেবন সংক্রান্ত বিষয়ে এক সার্জেন্টসহ দুজনের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
কুষ্টিয়া পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার বর্তমান পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাত দায়িত্ব নেওয়ার পর মাদকের বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন। তিনি মাদক ব্যবসায়ী, সেবনকারীদের বিষয়ে যেমন কঠোর ব্যবস্থা নেন, তেমনি জেলা পুলিশের কারা কারা মাদক ব্যবসা ও সেবনে সঙ্গে জড়িত সেটিও খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন। পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) নির্দেশে পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট করার উদ্যোগ নেন তিনি।
কুষ্টিয়ার এসপি সহেন্দভাজন ও গোয়েন্দা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের মে মাসে প্রথম কয়েকজন পুলিশ সদস্যের ডোপ টেস্ট করানোর নির্দেশ দেন। পরীক্ষায় এসব সদস্যের নিয়মিত মাদক সেবনের রিপোর্ট আসে।
এরপর গত দেড় বছরে পর্যায়ক্রমে ১১ জনের ডোপ টেস্ট করা হয়। এর মধ্যে ৯ জনই মাদক সেবন করতেন বলে ডোপ টেস্টে প্রমাণিত হয়। ডোপ টেস্টে দুজন এসআই ও দুজন এএসআই মাদক সেবনে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া এক এসআইয়ের কাছে মাদক পাওয়া যায়। অভিযুক্তদের মধ্যে এক সার্জেন্টও রয়েছেন। মাদক সেবনকারী এসব পুলিশ সদস্য জেলার বিভিন্ন থানা ও ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন।
ডোপ টেস্টে মাদক সেবনের বিষয়টি ধরা পড়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার পাশাপাশি প্রথম দিকে অন্য জেলায় বদলি করা হয়। এর মধ্যে এক এসআইকে রাঙামাটিতে বদলি করা হয়। আর ওই সার্জেন্টকে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত রাখা হয়েছে। মাদক সেবনের বিষয়টি ধরা পড়ার পর অন্য সবাইকে বিভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়। তারপরও তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের আটজনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, ‘মাদকের সঙ্গে কোনো আপোস নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপিও মাদকের সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই পুলিশে শুদ্ধি অভিযান চলছে। আমরা কুষ্টিয়া থেকে মাদক নির্মূলের পাশাপাশি পুলিশ থেকেও চিরতরে মাদকাসক্তদের বাড়িতে পাঠাতে চাই। পুলিশ ডিপার্টমেন্টে কোনো মাদক সেবনকারী থাকতে পারবে না।’
Array