
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ও মধ্য জানুয়ারিতে দুই দফা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর জানুয়ারির শেষে এসে তৃতীয় দফা শৈত্যপ্রবাহ বইছে। উত্তর-পশ্চিম জনপদে শুরু হওয়া তীব্র শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) দেশের উত্তরে কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও লালমনিরহাটে ৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাজশাহীতে ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অবস্থা ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এছাড়া নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ডিমলায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দেশের সর্ব-উত্তরের উপজেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে।
রাজশাহীতে রোববার সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা ও ঈশ্বরদীতে ৬ দশমিক ২, বদলগাছি ও সৈয়দপুরে ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, তেঁতুলিয়া, ডিমলা, যশোর ও শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা ছিল ৭ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। আর ঢাকায় থার্মোমিটারের পারদ নেমেছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সোমবার দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে এবং সারা দেশের দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়াও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘনকুয়াশা পড়তে পারে।
হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দিনাজপুরসহ দেশের উত্তর জনপদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিশেষ করে ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে চরমে। আর তীব্র শীত উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে কাজের সন্ধানে বের হওয়া নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে বিপাকে। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে শীতার্ত মানুষ।
অব্যাহত তীব্র শীতের কারণে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা হাসপাতালে ভিড় করছে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে।
জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে এখন তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আর ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অন্যান্য এলাকা এবং টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নিকলী, শ্রীমঙ্গল, খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, বরিশাল ও ভোলা অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ শৈত্যপ্রবাহ চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের তাপমাত্রা সোমবারও সামান্য কমতে পারে।
বৃহস্পতিবার থেকে রংপুর বিভাগসহ গোপালগঞ্জ, সীতাকুণ্ড, কুমিল্লা, শ্রীমঙ্গল, রাজশাহী, পাবনা, যশোর এবং চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে এই শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়।
Array