অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গাপূজার প্রধান বৈশিষ্ট্য। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় এ উৎসবের আজ মহাসপ্তমী। করোনা থেকে মুক্তির জন্য আজ বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।

বাঙালি কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য এ উৎসবের গতকাল ছিল ষষ্ঠী। মায়ের আগমনে এই ধরিত্রী ছিল আনন্দে মুখরিত। বৃহস্পতিবার চন্ডীপাঠ, বোধন এবং দেবীর অধিবাসের মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তবে আয়োজনে অংশগ্রহণ ছিল সীমিত। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে তাপমাত্রা পরীক্ষা করে প্রবেশ করানো হয়েছে সবাইকে। সামাজিক দূরত্বের জন্য রাখা হয়েছে ব্যবস্থা। মাস্ক ছাড়া কাউকে মন্ডপ এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

সপ্তমীতে নবপত্রিকা স্নানের মাধ্যমে শুরু হবে দেবীর পূজা। নবপত্রিকা শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ৯টি গাছের পাতা। তবে বাস্তবে নবপত্রিকা ৯টি পাতা নয়, ৯টি

উদ্ভিদ। নবপত্রিকার ৯টি উদ্ভিদ আসলে দেবী দুর্গার ৯টি বিশেষ রূপের প্রতীকরূপে কল্পিত হয়। সপ্তমীর সকালে কলাবউ বা নবপত্রিকা স্নান পূজার এক অন্যতম অঙ্গ। যা না হলে পূজাই শুরুই হয় না। দুর্গাপূজার বিশেষ অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি হলো মহাস্নান। মহাসপ্তমীর দিন নবপত্রিকা স্নানের পর মহাস্নান অনুষ্ঠিত হয়।

সারা দেশে উৎসবপ্রিয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মেতে উঠেছে পূজার আনন্দে। মন্ডপে মন্ডপে ছড়িয়ে পড়েছে ভক্তদের আনন্দ। পাঁচ দিনব্যাপী এই পূজা আগামী সোমবার (২৬ অক্টোবর) বিজয়া দশমীর মাধ্যমে শেষ হবে। তবে করোনা মহামারির কারণে এবছর ভক্তদের মনে কিছুটা দুঃখ থেকেই যাবে। কারণ এবছরের পূজায় সন্ধ্যা আরতির পর সারা দেশের পূজামন্ডপ বন্ধ থাকবে। পূজার সময় দেবী দুর্গার ভোগপ্রসাদ ছাড়া খিচুড়ি বা প্রসাদ বিতরণ হবে না। বিজয়া দশমীতে হবে না শোভাযাত্রা।

রাজধানীর প্রধান পূজামন্ডপগুলো ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, তাঁতীবাজার, শাঁখারীবাজার ছাড়াও সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, কলাবাগান, বনানী মাঠে, বাসাবো বালুর মাঠে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে স্থাপিত হয়েছে।

এ বছর সারা দেশে ৩০ হাজারে ২১৩টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে এবার পূজামন্ডপের সংখ্যা ২৩২টি, গত বছর যা ছিল ২৩৮টি।

বাগেরহাটের শিকদারবাড়িতে দুর্গাপূজা হচ্ছে না

‘দেশের সবচেয়ে বেশি প্রতিমার’ জন্য পরিচিত বাগেরহাটের শিকদারবাড়িতে এবার করোনাভাইরাসের কারণে শারদীয় দুর্গাপূজা আয়োজন করা হয়নি।

বৃহস্পতিবার সকালে ষষ্ঠীপূজার মধ্যেদিয়ে সব জায়গার মতো এ জেলাতেও শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়।

তবে বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের শিকদারবাড়ির পূজামন্ডপের গেটে তালা ঝুলতে দেখা গেছে।

২০১১ সালে ২৫১টি প্রতিমা নিয়ে সেখানে প্রথম দুর্গাপূজার জমকালো আয়োজন শুরু হয়। সেই থেকে প্রতিবছর বড় পরিসরে পূজা হয়ে আসছে। গত বছর শিকদারবাড়িতে ৮০১টি প্রতিমা দিয়ে দুর্গাপূজা আয়োজন করা হয়।