
যুব সমাজকে লক্ষ্য করে তামাক পণ্য বাজারজাত করা হচ্ছে। দেশে ২৪ বছরের নিচে ৪৯ শতাংশ তরুণ তামাক সেবন করছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, ২৪ বছরের একজন যুবককে তামাক সেবনে অভ্যস্ত করাতে পারলে ৩০ বছরের জন্য একজন ক্রেতা পেয়ে গেলেন। তামাক সহজলভ্য করে সুকৌশলে যুব সমাজে এর ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। তাই যুব সমাজকে মাদক ও তামাক থেকে দূরে রাখতে পদক্ষেপ নেওয়া দাবি জানান বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার আসন্ন অর্থবছরে তামাকে কর বৃদ্ধির মাধ্যমে যুব সমাজকে তামাক সেবনে নিরুৎসাহিত করা শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে বক্তারা এ দাবি জানান।
ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) ডিজেএফবি ও ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পিপল (ডরপ) এর যৌথ আয়োজনে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।
প্রজ্ঞা’র টোব্যাকো কন্ট্রোল প্রোগ্রামের প্রধান হাসান শাহরিয়ার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, দেশে চার কোটি মানুষ তামাক পণ্য ব্যবহার করে। তামাক পণ্যের ধরন ও ব্র্যান্ড ভেদে কর চালু আছে। বাজারে ৪ থেকে ১৪ টাকায় সিগারেট পাওয়া যায়। মানুষ কম দামের সিগারেটের দিকে ঝুঁকছে। বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে তামাক পণ্যের দাম কম। সিগারেট অধিক সহজলভ্য হচ্ছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়লেও বাড়েনি সিগারেটের দাম।
তিনি আরও বলেন, তামাক খাতে রাজস্ব ২২ হাজার কোটি টাকা। তামাক ব্যবহারে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হচ্ছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। তার মানে তামাক প্রতি বছর দেশের ৮ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি করে যাচ্ছে। আর স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশের ক্ষতি তো আছেই।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, সব সময় সংসদে তামাকের ওপর কর বৃদ্ধির বিষয়ে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। আসন্ন বাজেটে তামাকের কর বৃদ্ধিতে চেষ্টা করব। সিগারেটের শলাকা বিক্রি বন্ধের পদক্ষেপ নেব। দেশে এক তৃতীয়াংশ মানুষ তামাক ব্যবহার করছে যা খুবই ক্ষতিকর। যুবকদের যদি আমরা তামাক সেবন থেকে দূরে না রাখতে পারি তবে আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পারব না। শুধু ট্যাক্স বৃদ্ধি নয় জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাক সেবন বন্ধ করতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, যুবসমাজকে নেশা থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তামাক বন্ধ নিয়ে বিতর্ক আছে। ছোট নেশা বাদ গেলে তারা বড় নেশা গ্রহণ করবে কি না, এটা নিয়েও আলোচনা করা উচিত।
অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমাদের যুবসমাজকে না বাঁচাতে পারলে দেশের টার্গেট পূরণ হবে না। ২০৪০ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়তে হলে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে।
ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) সভাপতি হুমায়ুন কবীর বলেন, করের বড় মাধ্যম হচ্ছে তামাক। ২০১৮-১৯ সালে দেখেছি ২২ হাজার কোটি টাকার কর এসেছে তামাক থেকে একইভাবে ৩০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে চিকিৎসা বাবদ।
Array