
ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আগামী ৩০ মে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক শপথ নেবেন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি। গতকাল এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয় দেশটির রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে। মোদির এ দ্বিতীয় পর্বের সরকারে মন্ত্রিসভার সদস্য কারা হচ্ছেন সে বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের অতিথি তালিকায় থাকছেন কারা, জানানো হয়নি সে বিষয়টিও। ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির প্রথম শপথ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের নওয়াজ শরিফসহ সার্ক দেশের সরকারপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দের টুইট থেকে জানা যায়, ওই দিন একই সঙ্গে শপথ নেবেন নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরাও।
নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাবেন কারা তা নিয়ে সব মহলে চলছে জোর জল্পনা। প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং বিজেপিপ্রধান অমিত শাহ দুজনই মন্ত্রিসভায় নতুন মুখের পরিচিতি ঘটাতে আগ্রহী। তবে স্বরাষ্ট্র, অর্থ, বিদেশ মন্ত্রণালয় আর প্রতিরক্ষা এই ‘মুখ্য ৪’ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কাদের হাতে তুলে দেয়া হবে সে বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি মোদি-শাহ জুটির তরফ থেকে। ধারণা করা হচ্ছে, গতবারের মাত্র দুই আসন থেকে লাফিয়ে ১৮ আসন দখলের অনন্য কৃতিত্ব প্রদর্শনকারী পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির একাধিক প্রতিনিধির জায়গা হতে পারে সরকারে। মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকতে পারেন গান্ধী পরিবারের চার দশকের দেমাক ভেঙে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে আমেথিতে হারিয়ে চমক দেখানো গত সরকারের বস্ত্রমন্ত্রী বিজেপির ‘রাজমুকুট’ স্মৃতি ইরানি। রাহুল নিজেও টানা তিনবার বিজয়ী হয়ে এসেছেন সেখান থেকে। ২০১৪ সালেও রাহুলের কাছে হেরে যান স্মৃতি ইরানি। মাত্র পাঁচ বছরের কাজ দেখিয়েই এবার সে ছক উল্টে দিলেন তিনি। এনডিএর মধ্যে পরীক্ষিত ও বিশ্বস্ত মিত্র দলগুলোর মধ্যেও কাউকে কাউকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন সরকারে যোগ দেয়ার জন্য। যদিও গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে একান্তই বিজেপিপ্রধান ও দলটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মর্জির ওপর।
বিজেপি শীর্ষমহলের ঘনিষ্ঠ সূত্র মতে, অসুস্থতার কারণে বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা অরুণ জেটলিকে এবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে রাখা হবে কিনা তা নিয়ে দোলাচল রয়েছে। সেখানে আনা হতে পারে রেল ও কয়লা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসা পিযুষ গয়ালকে। জেটলি এর আগেও অসুস্থ হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন গয়াল। নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী বাজেটের ঘোষকও ছিলেন তিনি। পূর্ণাঙ্গ বাজেট ঘোষণা করার কথা রয়েছে নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই।
এর আগে গত শুক্রবার মোদির বিগত মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রেসিডেন্ট কোবিন্দের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। শনিবার ষোড়শ মন্ত্রিসভার বিলুপ্তি ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ৫৪২ আসনের মধ্যে ৩৫২ আসন জিতে আসা বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়ান্স (এনডিএ) পার্লামেন্টের সেন্ট্রাল হলে বৈঠকে নরেন্দ্র মোদিকে তাদের নেতা নির্বাচিত করে। পরে মোদি গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে কেন্দ্রে সরকার গঠনের দাবি জানান। ইতোমধ্যেই নির্বাচিত সাংসদদের একটি তালিকা প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর আগে এনডিএ সাংসদদের উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদি সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়ে যত্নবান হওয়ার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, আমরা সবার সঙ্গে সবার কল্যাণে কাজ করেছি। এবার সবার আস্থা অর্জন করাই আমাদের সব কাজের মূল মন্ত্র।
Array