• ঢাকা, বাংলাদেশ

নদী রক্ষার চ্যালেঞ্জ 

 admin 
22nd Mar 2019 8:56 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

উজানে পানি কমে যাওয়া, পলি ভরাট, দখল ও দূষণের কারণে গত ৪ দশকে দেশের ৪০৫টি নদ-নদীর মধ্যে প্রায় বিলুপ্ত হয়েছে ১৭৫টি। বাকি ২৩০টিও রয়েছে ঝুঁকির মুখে। ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ কমে গিয়ে হয়েছে প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার। শুষ্ক মৌসুমে যা ৪ হাজার কিলোমিটারে এসে দাঁড়ায়। এমন বাস্তবতাকে সামনে রেখে বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হতে যাচ্ছে ২২তম বিশ্ব নদীরক্ষা দিবস।
এক সময়ের নদীমাতৃক দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের নদীগুলোকে রক্ষা করা এখন অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান, উজান থেকে এ দেশে প্রতি বছর যে পরিমাণে পলি নেমে আসে, তা আর আগের মতো সহজে সাগরে মিশে যেতে পারে না। প্রকৌশলী তোফায়েল আহমদ বলেন, নদীগুলোর ওপর অসংখ্য সেতু ও বাঁধ নির্মাণ করার কারণে এ অবস্থা হয়েছে। এতে দুপারের জনগণের জীবনমান উন্নত হয় ঠিকই; কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর গতিপ্রবাহ। এ ছাড়া আবাসন প্রকল্প ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নামে নদীকে প্রতিনিয়ত ভরাট করা হচ্ছে। জনবহুল এ দেশে তাই নদী রক্ষা একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিশ্বের নদ-নদী রক্ষায় ১৯৯৭ সালে ব্রাজিলে ২০টি দেশের পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ডে অব অ্যাকশন ফর রিভার নামে একটি প্লাটফর্ম গঠিত হয়। পরবর্তী সময় এর সঙ্গে একাত্ম হয়েছে আরো অনেক দেশের প্রতিনিধি। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), নদী রক্ষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন এ দিনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে। এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘নদী রক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় নারীর ভ‚মিকা’।
বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন বলেন, সরকার নদী রক্ষায় অনেক উদ্যোগ নিলেও সে অনুযায়ী সাফল্য আসেনি। ২০০৯ সালে উচ্চ আদালত থেকে নদী রক্ষায় একটি যুগান্তকারী রায় দেন। তাতে নদীর সীমানা নির্ধারণ ও দখলমুক্ত করতে বলা হয়। কিন্তু অনেক দখলদারকে সুবিধা দিতে ভুল সীমানা পিলার স্থাপন করে এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা এ কাজটি বিতর্কিত করেন। তিনি বলেন, সরকার একটি নদী রক্ষা কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু এর কোনো নির্বাহী ক্ষমতা নেই। ১০০ বছরের জন্য নেয়া সরকারের ব-দ্বীপ পরিকল্পনাও নদীর জন্য ক্ষতিকর হবে বলে মনে করেন তিনি।
বাপার এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বুড়িগঙ্গা নদীর তলদেশে ১৩ ফুট পুরু পলিথিনের স্তর, কল-কারখানার ৬০ ভাগ, ঢাকা ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনের ৩০ ভাগ এবং নৌযানের শতভাগ বর্জ্যই নদীতে ফেলা হয়। তবে নদী রক্ষায় সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকার ১০
কিলোমিটার নৌপথ খননের পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মাধ্যমে মৃতপ্রায় নদীগুলোতে আবারো নৌযান চলাচল সম্ভব হবে। ফলে নৌবাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটার পাশাপাশি স্থানীয়দের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটবে।
দখল ও দূষণের বিরুদ্ধেও সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি ঢাকার চারদিকের নদ-নদীর দখলদার উচ্ছেদে কয়েক হাজার স্থাপনা ভেঙে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদী রক্ষায়ও উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়েছে। নদীর দখল রোধে দুই পাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ ও সবুজায়নের পদক্ষেপের কথাও জানান তিনি।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ অনুমোদন করে সরকার। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ব-দ্বীপকে জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য অভিঘাত থেকে বাঁচাতে এ প্ল্যান। ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় বন্যা, নদীভাঙন, নদীশাসন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। দেশের নদ-নদী রক্ষায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে মনে করা হচ্ছে। তবে এতে বাঁধ নির্মাণের অনেক পরিকল্পনা থাকায় তা নদীকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১