
২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় সরকারবিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বলেছে- ‘ইতোমধ্যেই অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু এখন জন্মের সময়ই মাথার ওপরে প্রায় ৬০ হাজার টাকার ঋণ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী বছর শেষে আমাদের নবজাতক শিশুর ওপর ঋণের বোঝা চাপবে প্রায় এক লাখ টাকা।’
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা প্রথমেই আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাব। কারণ, তিনি এই কোভিডকালের কঠিন সময়ে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের জন্য একটি বাজেট উপস্থাপন করেছেন। প্রথমে ভাবছিলাম, পুরো বাজেটে এক-তৃতীয়াংশই হলো ঘাটতি, যা জিডিপির ৬ শতাংশ। কিন্তু এখন পত্রিকান্তরে প্রকাশিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট দেখার পরে আমরা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি যে, এ বাজেট সম্বন্ধে আমরা যে কথা ইতোমধ্যে বলেছিলাম সেটাই সঠিক, অর্থাৎ এটা সরকারের পুরো দেউলিয়া বাজেট – সরকারকে আগামী বছর ঋণ নিতে হবে সর্বসাকুল্যে ৫ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকা। যেখানে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট হলো ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার, অর্থাৎ ঋণ হলো বছরে সর্বমোট বাজেটের বরাদ্দের চেয়ে বেশি। এরকম মারাত্মক অর্থনীতি পরিস্থিতি বাংলাদেশের প্রায় ৫০ বছরের ইতিহাসে কখনও হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। ইতোমধ্যে অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু এখন জন্মের সময়ই মাথার ওপরে প্রায় ৬০ হাজার টাকার ঋণ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী বছর শেষে তাহলে আমাদের নবজাতক শিশুর ওপর ঋণের বোঝা চাপবে প্রায় এক লাখ টাকা । আপাদমস্তক ঋণ করে আগামী প্রজন্মকে এই দায়বদ্ধতায় বন্দি করে ফেলার অধিকার আজ সরকারকে কে দিয়েছে?’
‘এরপর বাজেট সম্পর্কে সম্ভবত আর কিছু বলার প্রয়োজন হয় না, তবুও সরকারের এই চরম ব্যর্থতার বিষয়টি একটু ব্যাখ্যার দাবি রাখে। কেননা সরকার এ অবস্থায়ও দাবি করছে আগামী বছর নাকি জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৮.২ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি বজায় থাকবে ৫.৪ শতাংশ।’
‘এই করোনা মহামারিতে আমাদের দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন সমীক্ষায় আমরা দেখছি বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে দেশে এখন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ। মূলত এদের কথা মনে রেখেই এবারের বাজেট প্রণয়ন করা দরকার ছিল। এই মুহূর্তে উন্নয়নখাতে বরাদ্দ কমিয়ে দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক নিরাপত্তার দিকে বেশি নজর দেয়া প্রয়োজন, যাতে করে বিশেষভাবে যারা করোনায় ক্ষতগ্রিস্ত তাদের জীবন ও জীবিকার সমাধান হয়।’
Array