• ঢাকা, বাংলাদেশ

নিজ হাতে কোরআন লিখলেন ৭৫ বছরের নারী 

 admin 
07th Jan 2019 10:08 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

নিজ হাতে কোরআন – বয়স হয়ে গেছে ৭৫ বছর। বার্ধক্যের ভারে নুব্জ্য হয়ে পড়েছে শরীর। শক্তি-সামর্থ্যও কমে এসেছে। কিন্তু এতসব অক্ষমতা থাকলেও ছিল ইস্পাতের মতো দৃঢ় মনের জোর। আর তাই বয়োবৃদ্ধ এক নারী দৈনিক প্রায় ৭ ঘণ্টা ব্যয় করে নিজ হাতে সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ লিখে অনন্য কীর্তি স্থাপন করেছেন।

৭৫ বছর বয়স্ক এ বৃদ্ধার নাম সাইয়েদা সাদ আবদুল কাদের। মিশরীয় এ নারীর প্রচণ্ড ইচ্ছে ছিল কোরআন হেফজ করবেন। কিন্তু বয়সের আধিক্য ও স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ায় ফলে তার পক্ষে পূর্ণাঙ্গ কোরআন মুখস্ত করা সম্ভব ছিল না।

কিন্তু কিছু করতে হবে- এ ভেবে তিনি নাতির সঙ্গে পরামর্শ করলেন। এতে নাতি পরামর্শ দিলেন কোরআন লিখার। এরপর প্রবল আগ্রহ ও উৎসাহবোধে টানা ৪ বছর নিজ হাতে কোরআন লিখে গেলেন। আর শেষ পর্যন্ত তিনি তার উদ্দেশ্যে সফল হলেন এবং কোরআন লিখে অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন।

ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়াশোনারত অবস্থায় তার বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পর নিজেদের মানুফা প্রদেশ থেকে আলেকজান্দ্রিয়ায় চলে আসেন। পারিবারিক ও সাংসারিক বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে তার কোরআন মুখস্ত করা হয়ে উঠেনি। কিন্তু প্রতিনিয়ত তার মনে প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষা ও আগ্রহবোধ কাজ করতো। তবে তিনি মনে করেন, তার প্রচণ্ড আগ্রহ থাকা স্বত্বেও কোরআন মুখস্ত করতে পারেনি। আর সেজন্যই হয়ত আল্লাহ তাকে এমন মহৎ কাজ করার তাওফিক দান করেছেন।

সম্পূর্ণ কোরআন লিখতে তিনি ৪০টি কলম ব্যবহার করেন। শব্দগুলোতে হরকত দিয়েছেন কালো রং দিয়ে। তবে ‘আল্লাহ’ শব্দ ও আয়াতের সংখ্যা লেখায় লাল রং এবং অন্যান্য শব্দ লেখায় নীল রংয়ের কালি ব্যবহার করেন। তিনি আশা করছেন, তার সন্তানরা কোরআনের পাণ্ডুলিপিটি শিগগির প্রিন্ট আকারে প্রকাশ করবে।

প্রিয় নবী (সা.) এর পছন্দের খাবারসমূহ

হাজার বছর পূর্বে আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মাদ ( সা.) জন্ম গ্রহন করেছিলেন। আমরা তাঁর জীবনাদর্শ, জীবন যাপন সম্পর্কে অনেকেই অবগত। কিন্তু আমরা অনেকেই হয়ত তাঁর খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না।

সে সময় প্রিয়নবী (সা.) এর অতি পছন্দের কিছু খাবার ও তাঁর গুণাবলী এখানে উল্লেখ করা হলো। যেসব খাবার প্রিয়নবী (সা.) আহার করতেন যার গুণাগুণ অপরিসীম। দেড় হাজার বছর পর আজকের বিজ্ঞান গবেষণা করে দেখেছে নবীজী (সা.) এর বিভিন্ন খাবারের উপাদান অত্যন্ত যথাযথ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

(১) খেজুর:

তামার বা খেজুর শব্দটি আল কোরআন ও রাসূল (সা.) এর বাণীতে অনেক বার এসেছে। খেজুর রাসূল (সা.) এর খুব প্রিয় একটি খাবার। প্রিয়নবী (সা.) গর্ভবতী মায়েদের খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিতেন। ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ এই ফল দৃষ্টিশক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যমান থাকায় অনেক রোগ নিরাময় করা সম্ভব। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সহায়তা করে। খেজুরের উপকারিতায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অনেক বাণী এসেছে। ইরশাদ হয়েছে,

‘যে ব্যক্তি প্রত্যেহ সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন তাকে কোনো বিষ ও যাদু ক্ষতি করতে পারবে না। আজওয়া খেজুর হলো মদিনার উৎকৃষ্ট মানের খেজুর।’ (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)।

এমনকী প্রিয়নবী (সা.) সন্তান প্রসবের পর প্রসূতি মাকে খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। খেজুরের গুণাগুণ ও খাদ্যশক্তি অপরিসীম। খেজুরের খাদ্যশক্তি ও খনিজ লবণের উপাদান শরীর সতেজ রাখে।

উছমান ইবন আবূ শায়বা (রহঃ) সাআদ ইবন আবূ ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো দিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর দিয়ে নাশতা করবে, সেদিন তার ওপর বিষ এবং যাদু কোনো কাজ করবে না।

(২) মধু:

মধু তার অসাধারণ ঔষধি গুনের কারণে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মধুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, আয়োডিন, জিংক ও কপারসহ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। মধু ছিলো রাসূল (সা.) এর অত্যন্ত প্রিয় একটি খাদ্য। বিভিন্ন সময় তিনি মধু খেতেন। মধুকে বলা হয়- বিররে এলাহি ও তিব্বে নব্বী। অর্থাৎ খোদায়ী চিকিৎসা ও নবী করীম (সা.) এর বিধানের অন্তর্ভুক্ত।

সূরা মুহাম্মাদ এর ১৫ আয়াতে আল্লাহ তায়ালার এরশাদ হচ্ছে- ‘জান্নাতে স্বচ্ছ মধুর নহর প্রবাহিত হবে।’

হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত আছে। তিনি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, তোমাদের ওষুধগুলোর মধ্যে কোনগুলোতে যদি শিফা থেকে থাকে তবে সেগুলো হচ্ছে শিঙ্গা লাগানো, মধু পান করা এবং আগুনের দাগ নেয়া। (তিরমিযী-২০৩২)

মধু গলার খুসখুসে ভাব কমায়। লবণ-পানির সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে গড়গড়া করলে এ ক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যায়। মধু কাশি কমায়। শিশুদের শ্বাসনালীর সংক্রমণে কাশির চিকিৎসায় মধু কার্যকর

(৩) দুধ :

আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে বিজ্ঞান যখন অন্ধকারে তখন প্রিয়নবী (সা.) দুধ সম্পর্কে বলেন, দুধ হার্টের জন্য ভালো। দুধ রাসূল (সা.) এর অত্যন্ত প্রিয় ছিলো। দুধকে জান্নাতি খাবার বলা হয়। প্রতিদিন দুধ পান করলে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া, দাঁতে পোকা ও হলুদ ছোপ পড়া, হাড় ক্ষয়ের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

দুধে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল ফিটনেস বাড়ায় ও মানসিক চাপ দূর করতে সহায়তা করে। দুধের খাদ্যগুণ, পুষ্টিগুণ ও ভেষজগুণ বর্ণনাতীত। দুধ পানে মেরুদণ্ড সবল হয়, মস্তিষ্ক সুগঠিত হয় এবং দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়।

আজকের বিজ্ঞানিরাও দুধকে আদর্শ খাবার হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং এর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি অস্থিগঠনে সহায়ক। ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় ভুগলে এক গ্লাস দুধ পান করে নিন, সুস্থ বোধ করবেন।

(৪) পানি:

প্রিয়নবী (সা.) পানিকে পৃথিবীর সেরা ড্রিংক বা পানীয় হিসাবে উল্লেখ করেছেন। পানির অপর নাম জীবন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা উল্লেখ করেন-

إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِي تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِمَا يَنفَعُ النَّاسَ وَمَا أَنزَلَ اللّهُ مِنَ السَّمَاء مِن مَّاء فَأَحْيَا بِهِ الأرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَآبَّةٍ وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخِّرِ بَيْنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ لآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ

‘নিশ্চয়ই আসমান ও জমিনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ তায়ালা আকাশ থেকে যে পানি নাজিল করেছেন, তদ্দ্বারা মৃত জমিনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু। আর আবহাওয়া পরিবর্তনে এবং মেঘমালার যা তাঁর-ই হুকুমের অধীনে আসমান ও জমিনের মাঝে বিচরণ করে, নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্যে।’ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৬৪)

সকালে প্রতিদিন খালি পেটে পানি খেলে রক্তের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায় এবং ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়। প্রতিদিন সকালে নাস্তার আগে এক গ্লাস পানি খেলে নতুন মাংসপেশি ও কোষ গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর হয় পানি পানে। সৌন্দর্য চর্চা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য রক্ষায় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আজ প্রচুর পানি পান করতে বলেন।

(৫) মাশরুম:

মাশরুমে সোডিয়ামের পরিমাণ খুবই কম থাকে। এবং এতে উচ্চমাত্রার আঁশ এবং প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদপিণ্ডের কাজে সহায়তা করে। অথচ দেড় হাজার বছর আগে প্রিয়নবী (সা.) জানতেন মাশরুম চোখের জন্য ভালো। সে সময়ে আরব দেশে গরম বালুর ভেতর বিশেষ এক প্রকারের মাশরুমের জন্ম হত যা ছিল অত্যান্ত জনপ্রিয়। এটা বার্থ কন্ট্রোলে সহায়ক ও মাশরুমের ভেষজগুণের কারণে এটা নার্ভ শক্ত করে এবং শরীরের প্যারালাইসিস বা অকেজো হওয়ার প্রক্রিয়া রোধ করে। আজ বিশ্ব জুড়ে মাশরুম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার এবং মাশরুম নিয়ে চলছে নানা গবেষণা।

(৬) বার্লি (জাউ):

এটি বহু বছরের পুরোনো শস্য। এতে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, তা শরীরে শক্তি জোগায়। বার্লি যখন ভেজানোর পর অঙ্কুরিত হয়, তখন এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়ে। এটা জ্বরের জন্য খুবই উপকারী। অসুস্থ অবস্থায়, মূলত জ্বর হলে রাসূল (সা.) এই খাবারটি বেশি গ্রহণ করতেন বলে জানা যায়।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১