
‘সবকিছু ভেবেচিন্তে তারা (শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড) সিদ্ধান্ত দেবে, বিষয়গুলো আমাদের জানাবে। এটা নিয়ে আসলে নেগেটিভও চিন্তা করার কিছু নেই, পজিটিভও চিন্তা করার কিছু নেই’, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী জাতীয় ক্রিকেট দলের শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে ঠিক এভাবেই বলছিলেন। শ্রীলঙ্কা থেকে এখন পর্যন্ত সফর নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা না আসাতেই সফর নিয়ে পজেটিভ-নেগেটিভ কিছুই ভাবতে চান না।
বিসিবি প্রধান নির্বাহীর এমন মন্তব্যে বোঝাই যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার প্রশাসনিক জটিলতার মধ্যে হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে সফরটি। এই সফরে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তিনটি টেস্ট হওয়ার কথা আছে। টাইগারদের ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে এই মাসের শেষে। টেস্ট শুরুর সম্ভাব্য তারিখ অক্টোবরের ২৪। কিন্তু মাঝে প্রায় এক মাসের মতো সময় শ্রীলঙ্কায় গিয়ে টাইগাররা কীভাবে থাকবে তা এখনো স্পষ্ট করতে পারেনি দ্বীপ রাষ্ট্রটি।
কতদিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে, বায়ো সিকিওর বাবল (জৈব সুরক্ষিত পরিবেশ) কেমন হবে, অনুশীলন-প্রস্তুতি ম্যাচ কোথায় কীভাবে হবে এসব নিয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা পায়নি বিসিবি। শ্রীলঙ্কার দেওয়া নির্দেশনার ওপর ভিত্তি করেই পরিকল্পনা সাজাতে হবে বিসিবিকে।
বিসিবি প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘আপনারা জানেন যে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা যে ডিটেইল ইনিফরমেশনগুলো চেয়েছিলাম, সেগুলো শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড আমাদের জানিয়েছে যে, তারা তাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। প্রত্যেকটি দেশেই পরিবর্তিত পরিস্থিতি হচ্ছে বৈশ্বিক মহামারির কারণে। শ্রীলঙ্কাতেও বিভিন্ন নিয়ম কানুন জারি হয়েছে, আমাদের দল যখন সফর করবে, সেই কথা চিন্তা করে তারা বিষয়টিকে কতটা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা যায় সেই ব্যাপারে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এভাবেই আমাদের জানাচ্ছে।’
কোয়ারেন্টিনে বিসিবি চাচ্ছে যতটা কম থাকা যায়। আবার যাতে কোয়ারেন্টিনের মধ্যে থেকেই অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় এই ব্যবস্থাও চাচ্ছে। কিন্তু শ্রীলঙ্কা থেকে এই নিয়ে এখনো কোনো সবুজ সংকেত পায়নি বোর্ড। তাই কোয়ারেন্টিনের বিষয় নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয় বিসিবি। নিজামউদ্দিন বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড যতটা জানিয়েছে, সাতদিন হয়তো সর্বোচ্চ থাকতে হবে। সেভাবেই আলোচনা হচ্ছে। আমরা আশা করছি সাত দিনের মধ্যেই যদি সীমাবদ্ধ রাখা যায় তাহলে আমাদের যে পরিকল্পনা রয়েছে সেভাবেই এগোতে পারবো। এখন আমরা এই বিষয়ে কথা না বলি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের ফিডব্যাক পেলে তারপর আমরা এই ব্যাপারে কথা বলি।’
কিন্তু শ্রীলঙ্কান বোর্ড এত দেরি করছে কেন? এই নিয়ে নিজাম উদ্দিনের মন্তব্য হলো বোর্ড নয় দেশটির সরকার থেকে অনুমতি নিতেই মূলত সময় ক্ষেপণ হচ্ছে। ‘আমার মনে হয় না তারা ইচ্ছে করে দেরি করছে। তারা সম্পূর্ণ ভাবে চেষ্টা করছে যে তাদের যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আছে তাদের সঙ্গে কথা বলে সরকারি অফিসিয়াল যে অর্ডারটা সেটার জন্য কাজ করছেন। গতকালও আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে তাদের কাছ থেকে চূড়ান্ত বিষয়গুলো জানতে পারব,’ এভাবেই বলছিলেন নিজাম উদ্দিন।
শ্রীলঙ্কা জানাক আর না জানাক বিসিবি তাদের প্রস্তুতি ঠিকই নিয়ে রাখছে। এর মধ্যেই একবার কোভিড-১৯ টেস্ট হয়ে গেছে। একজন ছাড়া সবাই নেগেটিভ। বিসিবি প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের প্রস্তুতি তো আর বন্ধ রাখা যাবে না। আমাদের ট্রাভেল বুকিং, আমাদের অনুশীলন পরিকল্পনা, ঢাকায় আমরা কবে থেকে অনুশীলন শুরু করব এগুলো আমরা পরিকল্পনা করে রেখেছি। সেভাবেই আমাদের কার্যক্রম চলছে।’
Array