
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত দিতে ওয়াশিংটনের কাছে অনুরোধ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সাক্ষাতে এ অনুরোধ জানান। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনি মহিউদ্দিন আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনা হয়েছিলো। যুক্তরাষ্ট্রে বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরী রয়েছে, তাকে ফেরত আনার জন্য রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তিনি বিষয়টি ওয়াশিংটনে জানাবেন।’
বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘদিন থেকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা করছে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে উভয় দেশের মধ্যে সভা হয়েছে। কিন্তু ২৩ বছর পরেও তাকে দেশে ফেরত আনা যায়নি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় অবস্থান করছেন। হত্যাকাণ্ডের ২৩ বছর পরে ১৯৯৮ সালে নিম্ন আদালতের রায়ে অন্য আসামিদের সঙ্গে পলাতক অবস্থায় তাকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে উচ্চ আদালত ১২ জন কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের রায় কার্যকর হলেও রাশেদ চৌধুরীসহ বিদেশে পলাতক অন্যদের দণ্ড কার্যকর হয়নি।
রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। রাষ্ট্রদূতকে বলেছি, আমাদের জ্বালানি খাতে যুক্তরাষ্ট্র চাইলে বিনিয়োগ করতে পারে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে এটাই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রথম বৈঠক। বৈঠকে আলোচনা প্রসঙ্গ জানতে চাইলে মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কিভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়েও কথা হয়েছে। সুশাসন ও গণতন্ত্র কিভাবে রক্ষা করা যায় সেটা নিয়েও আলোচনা করেছি।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফরের প্রক্রিয়া চলছে। তবে এটা ঠিক যে উনি প্রথমে জার্মানি যাচ্ছেন, এরপর যাবেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে।’
মোমেন বলেন, ‘জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা বিষয়ক এক সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে তিন দিনের এই সম্মেলন। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেলের সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনাও রয়েছে।’
Array