
বাংলাদেশ থেকে প্রায় দুই হাজার সরকারি কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যাবেন। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সরকারি আমলাদের মধ্যে যারা তাদের ক্যারিয়ারের (কর্মজীবন) মাঝপথে রয়েছেন তারাই এই প্রশিক্ষণ পাবেন।
আজ ৮ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার ভারতও বাংলাদেশের এক যৌথবিবৃতিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ভারতের দিল্লিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের নেতৃত্বে পঞ্চম যৌথ কনসাল্টেটিভ কমিশনের (জেসিসি) বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এই বৈঠকেই এ বিষেয় একটি সমঝোতা স্মারক বা মেমোরান্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিংও (এমওইউ) সই হয়েছে। খবর বিবিসির।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা বা সেনাবাহিনীর সদস্যরা নানা ধরনের প্রশিক্ষণ বা কর্মশালার জন্য ভারতে গেছেন। তবে আজকের সমঝোতা স্মারকের ফলে বিষয়টি আনুষ্ঠানিক রূপ পেল।
এই কর্মসূচিকে বলা হচ্ছে সরকারি আমলাদের জন্য ‘ট্রেনিং ও ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রোগ্রাম’ (প্রশিক্ষণ ও সামর্থ্য নির্মাণ) ।
সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, প্রথম দফায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ১৮০০ কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যাবেন।
বাংলাদেশের পক্ষে এই সমঝোতায স্মারকে সই করেন দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি। আর ভারতের হয়েসই করেন দিল্লিতে ‘ন্যাশনাল সেন্টার অব গুড গভর্ন্যান্সে’র (এনসিজিজি) প্রশাসনিক প্রধান পুনম সিং।
ভারতে সরকারি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে যে আমলারা প্রশিক্ষণ নিতে যাবেন তাদের মুসৌরিসহ দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন সরকারি কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
মুসৌরিতেই ভারতের ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস বা আইএএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে।
তবে হঠাৎ কেন এত বেশি সংখ্যায় আমলাদের ভারতে এনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে? বাংলাদেশের কূটনৈতিক সূত্রগুলো তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
তবে ভারতে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিস যেমন উপকৃত হবে, তেমনি সে দেশের প্রশাসনিক কাঠামোতে ভারতের ‘আউটরিচ’ আরও অনেক প্রসারিত হবে।
আজকের জেসিসি বৈঠকের পর ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা সিবিআই এবং বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের মধ্যেও একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এতেও বলা হয়েছে, দুই দেশের এই দুই প্রতিষ্ঠান নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করবে।
ভারতের সিবিআই ও বাংলাদেশের দুদকের কর্মকর্তারাও পারস্পরিক সফরে যাবেন, নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা নির্মাণের কর্মসূচিতে যুক্ত হবেন।