• ঢাকা, বাংলাদেশ

বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি নেই, সরকারের প্রশংসায় বিশ্বব্যাংক 

 admin 
20th Aug 2022 8:52 am  |  অনলাইন সংস্করণ

নিউজ ডেস্ক:চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতি হয়নি বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। অন্যান্য দেশগুলো মূল্যস্ফীতির তোপের মুখে পড়লেও বাংলাদেশ সুবিধাজনক জায়গায় আছে। গত বৃহস্পতিবার সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক হালনাগাদ প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে নিয়ে এই তথ্য দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এতে খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এবার খাদ্য মূল্যস্ফীতি বহু বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তবে এদিক থেকে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। এমনকি চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতি অনুভব করেনি।। ধারণা করা হচ্ছে, খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত খাত মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় গড় মূল্যস্ফীতি হবে সাড়ে ১৫ শতাংশ। যার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে খাদ্যখাত। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়েছে। এই সময় বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি হবে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটে হঠাৎ করেই পরিবর্তন হয় বৈশ্বিক ব্যবসা পলিসি। খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির জন্য মূলত ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকেই দায়ী করা হচ্ছে। বিশেষ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানা ধরনের খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এর প্রভাব পড়েছে। এর ফলে বেড়েছে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি। এমনকি কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর ইউক্রেন-রাশিয়া থেকে খাদ্য সরবরাহ শুরু হলেও সংকট কাটছে না। বিশ্বব্যাংক খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা ও ঝুঁকি নিয়ে বিশ্বের নানা দেশের নানা সমস্যার কথা উঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে খাদ্য ও সার সংক্রান্ত বাণিজ্য নীতির নোনা পদক্ষেপ বেড়েছে। এতে অনেক দেশ শঙ্কিত হয়ে পড়ে। অভ্যন্তরীণ খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কায় খাদ্য রপ্তানি বন্ধ করে দেয় অনেক দেশ। অন্তত ২৩টি দেশ ৩৩ ধরনের খাদ্যপণ্য রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে। এছাড়াও অন্তত সাতটি দেশ ১১ ধরনের খাদ্যপণ্য রপ্তানি সীমিত করে। এসব কারণেই মূলত দক্ষিণ এশিয়ায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি রেকর্ড করেছে। বিশ্বব্যাংকের খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ভারত ২০২২ সালের ১৩ মে থেকে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যদিও বাংলাদেশের জন্য ভারত এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। একই সঙ্গে ভারত চিনি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। শুধু ভারত নয়, অন্যান্য দেশের কথাও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আফগানস্তান গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আলজেরিয়া চিনি, পাস্তা, তেল, গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ২০২২ সালের মার্চে, যা এখনও চলমান আছে। আর্জেন্টিনা সয়াবিন তেল ও সয়াবিন মিল (সয়াবিন থেকে তৈরি করা খাদ্যপণ্য) রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চলতি বছরের মার্চ মাসে, যা এখনও চলমান। এছাড়াও, বাংলাদেশ চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চলতি বছরের জুন মাসে, যা এখনো চলমান। বেলারুশ চাল, বার্লি, ভুট্টা, গম, সূর্যমুখী তেল, কেকসহ নানা খাদ্য পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে, যা এখনো তুলে নেওয়া হয়নি। ক্যামেরুন নানা ধরনের সবজি, জর্জিয়া গম-বার্লি, ঘানা ভুট্টা, চাল ও সয়াবিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইন্দোনেশিয়া গত মার্চে পাম অয়েল, পাম কার্নেল ওয়েল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে। ইরান আলু, ডিম, টমেটো ও পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় চলতি বছরের মার্চ মাসে, যা এখনও অব্যাহত আছে। কাজাকিস্তান গম, সূর্যমুখী তেল, সবজি ও ডিম রপ্তানিতে নিষেধজ্ঞা দেয় চলতি বছরের মার্চে, যা এখনো তুলে নেওয়া হয়নি। কুয়েত ভেজিটেবল অয়েল, মুরগির মাংস রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মালয়েশিয়া চিকেন, পাকিস্তান চিনি রপ্তানি বন্ধ করেছে। রাশিয়া সূর্যমুখী তেল, সার্বিয়া গম, তিউনেশিয়া ফল ও সবজি, তুর্কিয়ে রান্নার তেল, বাটার, গরুর মাংস রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কৃষির অন্যতম প্রয়োজনীয় উপকরণ সার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কিছু দেশ। যার প্রভাব পড়েছে খাদ্য পণ্যে। যেমন- চীন ফসফেট সার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে বিশ্বের অনেক কৃষিপ্রধান দেশে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কাজাকিস্তান, রাশিয়া, ইউক্রেন ইউরিয়া রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে, যা এখনও অব্যাহত আছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খাদ্যপণ্য ও সার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞায় দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। যার সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। যেমন ইন্দোনেশিয়া-আর্জেন্টিনা সয়াবিন তেল রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশে বাড়তে থাকে তেলের দাম। এ ছাড়া ইউক্রেন-রাশিয়া থেকে গম সরবরাহ বন্ধের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে। আটা-ময়দার দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১