• ঢাকা, বাংলাদেশ

বাংলাদেশে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা 

 admin 
12th Mar 2021 11:10 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকার কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি বাংলাদেশে করোনার প্রথম ডোজের টিকা নেয়ার পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মোহসীন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো: শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার দুই ডোজ টিকা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বাংলাদেশে এখনো শুধুমাত্র প্রথম ডোজের টিকা দেয়া চলছে। দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়া শুরু হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলছেন, যারা প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন তাদের এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ক্ষমতা গড়ে উঠেছে সেটা বলা যাবে না। করোনার এক ডোজ টিকা কাউকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারবে না। ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে দুই ডোজ টিকা দিতে হবে। তার আগ পর্যন্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ম মেনে চলতে হবে। না হলে ঝুঁকি থাকবেই।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষণা অনুযায়ী টিকার পূর্ণ ডোজ নেয়ার পরও মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে অন্তত ১৪ দিন সময় লাগে। টিকা দেয়ার পর এই সময়ের মধ্যে মানুষের শরীর করোনার জেনেটিক উপাদানগুলো চিনে সে অনুযায়ী অ্যান্টিবডি এবং টি-সেল তৈরি করে। ওই অ্যান্টিবডি ভাইরাসটিকে আর দেহকোষে প্রবেশ করতে দেয় না বা আক্রান্ত কোষগুলোকে মেরে ফেলতে শুরু করে।

এ ব্যাপারে ভাইরোলজিস্ট তাহমিনা শিরিন বলছেন, বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের এক বছরের অল্প সময়ের মধ্যে করোনার কয়েকটি টিকা বাজারে এসেছে। এসব টিকা যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মানবদেহে প্রয়োগ শুরু হলেও এখনো এর প্রতিক্রিয়া, কার্যকারিতা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও গবেষণা চলছে।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী মহামারী পরিস্থিতিকে সামাল দেয়ার জন্য করোনার টিকা এত তাড়াতাড়ি বাজারে আনা হয়েছে। তার সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু টিকাটি কত দিন পর্যন্ত আমাদের প্রটেকশন দেবে, টিকার ফাইন টিউনিংয়ের জন্য এর গবেষণা চলবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই টিকা নেয়ার পর অনেকের জ্বর, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, টিকা দেয়ার স্থানে ব্যথা হওয়ার মতো স্বাভাবিক কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও এতে উদ্বেগের কিছু নেই। টিকাটির বড় ধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তেমন নেই। সেক্ষেত্রে টিকাটি অবশ্যই নিরাপদ।’

বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার ১১ মাসের মাথায় দেশব্যাপী টিকা কার্যক্রম শুরু করা হয়। বাংলাদেশে মূলত দেয়া হচ্ছে ব্রিটেনের আবিষ্কৃত এবং ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। এই টিকাটির প্রথম ডোজ নেয়ার ৪ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হয়। না হলে টিকাটি অপচয় হয়ে যায়।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বেনজির আহমেদ বলছেন, ঢালাওভাবে টিকা দিলেই হবে না। বরং হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলার জন্য অর্থাৎ একটি দেশ বা অঞ্চলে করোনার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সেখানকার ৭০-৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে এই টিকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দিতে হবে। তার মতে, হার্ড ইমিউনিটি এমন না যে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষকে করোনার টিকা দিতে হবে। বরং এই জনগোষ্ঠীকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে যেমন পাড়া, মহল্লা, উপজেলা ও জেলা ধরে ধরে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তুলতে হবে। তারপর পুরো দেশে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আপনি ঢাকার সব মানুষকে টিকা দিলেন, কিন্তু রাজশাহীর কোনো একটি উপজেলার ৪০% মানুষকে টিকা দিলেন, সেটা হার্ড ইমিউনিটি হবে না। কারণ হার্ড ইমিউনিটি কোনো এভারেজ নয় বরং ছোট ছোট ইউনিট ধরে অর্জনের বিষয়। অর্থাৎ ভাইরাসটি যে গতিতে ছড়াচ্ছে তার চাইতে দ্রুত গতিতে জনগোষ্ঠীকে টিকা কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে। না হলে টিকা দিয়েও কোনো লাভ হবে না।’

বাংলাদেশে টিকা কর্মসূচি শুরুর ৩৪ দিনের মাথায় মোট ৫৫ লাখ মানুষ করোনার টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে টিকা দিয়েছেন ৪২ লাখ ১৮ হাজারের বেশি মানুষ।

ফেব্রুয়ারিতে যারা টিকা নিয়েছেন, তাদেরকে এপ্রিলের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু করার কথা রয়েছে। তবে করোনার কোনো টিকাই শতভাগ সুরক্ষা দেবে বলে প্রমাণ মেলেনি।

তবে যুক্তরাজ্য ও কানাডা সরকার বলছে, ডেনমার্ক, নরওয়ে, আইসল্যান্ড ও থাইল্যান্ড অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ব্যবহার স্থগিত করলেও এই টিকাকে নিরাপদ ও কার্যকর।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১