
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন সংরক্ষণ, পরিবহণ ও বিতরণের বিষয়ে সরকারের কাছে একটি নীতিমালা দাখিল করেছে জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি।
এ বিষয়ে কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ভ্যাকসিন আনলেই হবে না, এর ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাদের প্রথম দেয়া হবে, কারা দিবেন, সংরক্ষণ ও পরিবহন কীভাবে করা হবে সেগুলো পরিকল্পনায় থাকা জরুরি।
টেকনিক্যাল কমিটির দেয়া পরামর্শ অনুযায়ী, সবার আগে ভ্যাকসিন পাবেন করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিতরা। তারপর পাবেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তা যারা মানুষের সরাসরি সংস্পর্শে কাজ করেন। এরপর যেসব শিশু দীর্ঘ সময় বাড়িতে আছে তাদের দেয়া হবে। তারপর অগ্রাধিকার পাবেন ৬৫ বছরের উপরে যাদের বয়স সে-সমস্ত নাগরিক৷ পর্যায়ক্রমে বাকিরাও টিকার আওতায় আসবেন।
বাংলাদেশে মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএর মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক বলেন, ৮০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হবে৷ তাই আমাদের ১২-১৩ কোটি ভ্যাকসিন লাগবে৷ সরকার অনেকগুলো সোর্স থেকে ভ্যাকসিন নেয়ার চেষ্টা করছে৷ তবে এত ভ্যাকসিন একসঙ্গে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না৷ কারণ সব দেশই তো ভ্যাকসিন চাইবে৷
কমিটির সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম মনে করেন ভ্যাকসিনের চাহিদা বুঝতে হলে অ্যান্টিবডি টেস্ট করাতে হবে৷
তিনি বলেন ‘আসলে কত ভ্যাকসিন লাগবে তা নির্ণয়ের কাজ এখনো শুরু হয়নি৷ এজন্য অ্যান্টিবডি টেস্ট লাগবে৷ সেটা আমরা শুরু করতে বলেছি৷ আর আগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে কারা ভ্যাকসিন পাবেন তারও একটা গাইডলাইন দিয়েছি৷ এছাড়া ভ্যাকসিন কর্মী, ভ্যাকসিন সংরক্ষণ ও পরিবহনের ব্যাপারেও আমরা পরামর্শ দিয়েছি৷ কারণ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এই ভ্যাকসিন পাঠাতে হবে।
স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান এর আগে জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ এরই মধ্যে চীন ছাড়াও রাশিয়ার সাথে ভ্যাকসিনের জন্য কথা বলেছে৷ সারা দুনিয়ায় যেখানেই ভ্যাকসিন হচ্ছে সেখানেই যোগাযোগ করা হচ্ছে৷ যেখানেই আগে পাওয়া যাবে সেখান থেকেই ভ্যাকসিন আনা হবে।
ভ্যাকসিনের জন্য রাশিয়া, ভারত ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে বাংলাদেশে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
করোনার ভ্যাকসিন আবিস্কারে বিশ্বে ১৭০ টিরও বেশি উদ্যোগ রয়েছে৷ এর মধ্যে এখন পর্যন্ত শুধু রাশিয়া দেশটির একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে৷ এছাড়া চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিনের তৃতীয় বা শেষ ধাপের ট্রায়াল চলছে।
Array