• ঢাকা, বাংলাদেশ

বিএটিবির চাতুর্যে রাজস্ব হারাচ্ছে বাংলাদেশ 

 admin 
05th May 2019 5:48 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) চাতুর্যের কারণে বাংলাদেশ সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যেরই গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্যাক্স জাস্টিস নেটওয়ার্ক (টিজেএন)। তাদের মতে, বিএটিবির চাতুর্যের কারণে ২০১৬ সালেই বাংলাদেশ প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার রাজস্ব হারিয়েছে। সম্প্রতি ‘এশেস টু এশেস’ শিরোনামে নিজেদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে টিজেএন এমন তথ্য তুলে ধরেছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বহুজাতিক তামাক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক হলেও দেশের অর্থনীতিতে তার ক্ষতিকর প্রভাব অনেক বেশি। ২০১৬ সালেই বাংলাদেশে বিএটিবি নিট মুনাফা করে ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকা। একই সময়ে ধূমপানের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৫৮ মিলিয়ন টাকা। সে বছর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর মালিকানাধীন বা বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে প্রায় ২১ মিলিয়ন ডলার। বিশ্বের অন্যান্য দেশে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শাখা থেকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো অর্থের অঙ্ক ছিল ৯৪১ মিলিয়ন ডলার। প্রেরিত অর্থ প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ শাখার কর-পূর্ব মুনাফার প্রায় ১২ দশমিক ৩ শতাংশ। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর রয়্যালটি, কারিগরি ও পরামর্শক ফি এবং আইটি সার্ভিস বাবদ এই অর্থ যুক্তরাজ্যে পাঠায় বিএটিবি। এই অর্থ স্থানান্তর বাবদ বাংলাদেশ সরকারকে কোনো রকম কর পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালে বিএটিবির হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কোম্পানিটি রয়্যালটি বাবদ ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো লিমিটেডকে বছরে ৫ মিলিয়ন ডলার, কারিগরি ও পরামর্শক ফি হিসেবে বিএটি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে ১০-১২ মিলিয়ন ডলার এবং আইটি সার্ভিস ফি বাবদ বিএএসএস, জিএসডি লিমিটেডকে বছরে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছে।
এই তিন খাত মিলিয়ে বিএটি বাংলাদেশ শাখা থেকে প্রায় ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশের বাইরে বিএটির মালিকানারই বিভিন্ন কোম্পানির কাছে পাঠানো হয়েছে। এই অর্থ প্রতিষ্ঠানটির সে সময়কার কর-পূর্ব মুনাফার প্রায় ১৫ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে বিএটিবি তাদের মুনাফার ওপর বিদ্যমান ৪৫ শতাংশ হারে করপোরেট কর প্রদান না করে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় অত্যন্ত স্বল্পহারে কর পরিশোধ করেছে।
এ কারণে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার রাজস্ব হারিয়েছে, যা দিয়ে দেশের দুই লাখ মানুষের বার্ষিক মাথাপিছু স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় বহন করা সম্ভব।
তামাক কোম্পানিগুলো যেন কর ফাঁকি বা কর এড়িয়ে যেতে না পারে, সেজন্য আরো বড় পরিসরে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। প্রদেয় কর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য যত বেশি জনগণের হাতে আসবে, কোম্পানিগুলো তত বেশি দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করতে বাধ্য হবে বলেও প্রতিবেদনে মত দেয় টিজেএন। তারা তামাক কোম্পানির মুনাফার হিসাব প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক করার এবং তামাকজাত প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সরকারি নজরদারি বাড়ানোরও সুপারিশ করে প্রতিবেদনে। এ ছাড়া তামাক কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব এবং তামাক ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্য ও অন্যান্য খাতে সরকারের ব্যয়ের তুলনামূলক হিসাব কর্তৃপক্ষের করা প্রয়োজন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। এর মধ্যে সিগারেট ধূমপায়ীর সংখ্যা ১ কোটি ৫০ লাখ। টোব্যাকো অ্যাটলাসের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে মারা যায়।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১