• ঢাকা, বাংলাদেশ

বিএনপি ভোটে এলেও অনিশ্চিত খালেদা 

 admin 
10th Nov 2018 8:46 am  |  অনলাইন সংস্করণ

আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি এলেও দুর্নীতির মামলায় উচ্চ আদালত থেকে সাজা হওয়ায় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দূরেই থাকতে হতে পারে।

উচ্চ আদালতের রায় অনুয়ায়ী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য দণ্ড স্থগিত হতে হবে। এ জন্য দুটি মামলাতেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হবে বিএনপি নেত্রীকে। একই সঙ্গে আবেদন করতে হবে দণ্ড স্থগিতের।

সংবিধান অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত কারণে কারও দুই বছরের সাজা হলে সাজা ভোগের পাঁচ বছর পর্যন্ত তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারেন না। তবে বিচারিক আদালতে সাজা হলেও এর বিরুদ্ধে আপিল করে উচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে নির্বাচন করার উদাহরণ আছে।

খালেদা জিয়ার পক্ষে এটি সম্ভব নাও হতে পারে। যে দুটি মামলায় সাজা হয়েছে, সেগুলোতে প্রার্থিতা জমা দেয়ার সুযোগ শেষ হওয়ার আগে আপিল করতে পারবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।

গত ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাত বছরের কারাদ- হয়। কিন্তু ওই মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় এখনো প্রকাশ হয়নি। আর প্রকাশ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে আপিল করার সুযোগ আছে। তবে রায় দ্রুত প্রকাশ হলে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগে হয়তো আপিল করা যাবে।

তবে বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার দ-। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে দেয়া রায় বাতিলে দলীয় প্রধানের আবেদন নাকচ হয়েছে। উল্টো পাঁচ বছরের কারাদ- বেড়ে হয়েছে ১০ বছর। এ মামলায়ও তাকে আপিল করতে হবে।

ওই রায়ের অনুলিপিও এখনো প্রকাশ হয়নি। ফলে এর বিরুদ্ধে আপিল করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন কি না, এই বিষয়টি নিশ্চিত নয়।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র বৈধ কি না, সেটি যাচাই-বাছাই হবে ২২ নভেম্বর। অর্থাৎ এর আগে আপিল এবং দ- স্থগিত না হলে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা হবে কি না, এ নিয়ে আইনি প্রশ্ন আছে।

দ- স্থগিত না হলে যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার যোগ্যতা অর্জন করা যায় না, তার একটি দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে। ২০১৫ সালের ঢাকা দক্ষিণের মেয়র নির্বাচনে দ-প্রাপ্ত নাসির উদ্দিন আহমেদ মেয়র পদে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন, যা রিটার্নিং অফিসার বাতিল করে দেন। কারণ, নাসির উদ্দিন হাইকোর্টে আপিল আবেদন করলেও আদালত বিচারিক আদালতের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেননি।

সম্প্রতি মো. মামুন ওয়ালিদ হাসান বনাম রাষ্ট্র মামলায় (ক্রিমিনাল মিসিলেনিয়াস কেস ১০০০৯ / ২০০৭) দেখা যায়, হাইকোর্ট বিশেষ বিবেচনায় দ- স্থগিত করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দ-প্রাপ্তকে আবেদন করতে হবে এবং দেখাতে হবে যে দ- স্থগিত না হলে অবিচার হবে এবং তিনি অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। ওই মামলায় আদালত বিশেষ বিবেচনায় বাদীর দ- স্থগিত হয় এবং ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পান তিনি।

 

সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করতে পারবেন না। তার পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এখানে সরকারের কোনো কিছু করার নেই, নির্বাহী বিভাগেরও কিছু করার নেই।’

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী কোনো দ-প্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়াও পারবেন না।’

দ- স্থগিত হলে বিএনপি নেত্রী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না- এমন প্রশ্নে খালেদা জিয়ার দুই মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘সেটা পরে দেখা যাবে। তবে আপাতত তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের দুটি রায় আছে; তাতে বলা আছে, আপিল যতক্ষণ না পর্যন্ত শেষ হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মামলা পূর্ণাঙ্গ স্থানে যায়নি, সে জন্য দ-প্রাপ্ত হলেও তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। এ ছাড়া আরেকটি রায় আছে, তাতে পারবেন না। এখন ওনার (খালেদা জিয়া) ব্যাপারে আপিল বিভাগ এবং স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা তাদের বিষয়।’

তবে বিএনপির আইনজীবী নেতা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অবশ্যই তিনি (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করতে পারবেন। উনি অবশ্যই জেল থেকে বের হবেন এবং নির্বাচন করবেন।’

এই আত্মবিশ্বাসের পেছনে আইনি যুক্তি কী- এমন প্রশ্নে মাহবুব বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হবে কি না, নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারবে কি না, সেটাই প্রশ্ন।’

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন খালেদা জিয়াকে নির্বাচন করার সুযোগ দিলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। অতীতে এমন ঘটনা আছে। তাতে আদালত হস্তক্ষেপ করে নাই।’

সুজন সম্পাদক বলেন, মহীউদ্দীন খান আমলগীর বনাম বাংলাদেশ মামলায় দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা দুর্নীতির দায়ে দ-িত হয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। উচ্চ আদালত তার দ- স্থগিত করে জামিন দেয়। তবে নবম সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-১ আসন থেকে তার মনোনয়নপত্র নাকচ হয়।

এরপর মহীউদ্দীন খান আলমগীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন, যা নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান করে। এরপর হাইকোর্টে রিট করেন আওয়ামী লীগ নেতা। আদালত সে আবেদন প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকে।

পরে মহীউদ্দীন খান আলমগীর এই আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন এবং চেম্বার জজ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দেয়।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১