
ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের বস্ত্র ও পোশাক খাত প্রাকৃতিক আঁশ তথা কটন সুতা নির্ভর। কিন্তু বিশ্ববাজারে বস্ত্র ও পোশাক খাতের একটি বড় পরিবর্তন গত ১০ বছরে ঘটে গেছে। সেটা হল বস্ত্র ও পোশাকের বাজার এখন ৭০ শতাংশ দখল করে আছে কৃত্রিম সুতা বা মেন মেড ফাইবার। আর ৩০ শতাংশ কটন সুতা দিয়ে তৈরি কাপড়ের দখলে।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাতে এক বার্তায় এসব তথ্য জানিয়েছেন ওয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) পরিচালক সৈয়দ নুরুল ইসলাম।
নুরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববাজারে বস্ত্র ও পোশাক শিল্পখাত দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগ প্রাকৃতিক আঁশ তথা কটন সুতা। আরেক ভাগ কৃত্রিম আঁশ তথা ম্যান মেড ফাইবার (পলিস্টার/নাইলন/ভিসকোস ইত্যাদি) সুতা দিয়ে তৈরি কাপড়ের ওপর নির্ভরশীল।
বিশ্ববাজারের এই রূপান্তরকে মাথায় রেখে বাংলাদেশকেও এগোতে হবে। গত ২৫ থেকে ৩০ বছর আমাদের কটন খাত সরকারের নীতি সহায়তা পেলেও পলিস্টার বা ম্যান মেড ফাইভার খাত উপেক্ষিত।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী তার সমাপনী বাজেট বক্তব্যে সব প্রকার সুতার ওপর উৎপাদন ও বিক্রয় পর্যায়ে সমান হারে ভ্যাট নির্ধারণের নির্দেশনা দেন। সে নির্দেশনার পরও গেজেট নোটিফিকেশনে শুধুমাত্র কটন সুতার ওপর প্রতি কেজিতে ৪ টাকা ভ্যাট নির্ধারণ করে দেয়া হয়। আর ম্যান মেড ফাইভার বা পলিস্টার সুতাসহ অন্যান্য সুতার ওপর উৎপাদন ও বিক্রয় পর্যায়ে ৬ টাকা ভ্যাট নির্ধারণ করা হয়, যেটা সরকারের নীতি ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দশনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলেন নুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এর জন্য যতটুকু না সরকারের নীতিনির্ধারকরা দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী আমাদের সংগঠনগুলো। বিজিএমইএ বা বিটিএমএ কেউ বিষয়টা নিয়ে তেমন আলোচনা করেনি। গত বাজেটের আগে বিটিএমএর সভাপতিকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টা বাণিজ্যমন্ত্রী ও এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। তারা কথা দেয়ার পরও বাজেটে ম্যান মেড ফাইভার নির্ভর বস্ত্রখাতের জন্য কোনো সুবিধা দেয়া হয়নি।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববাজারে ম্যান মেড ফাইভার বা পলিস্টার সূতা দিয়ে তৈরি কাপড় ও পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। সেই চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের বস্ত্রখাত ও পোশাক শিল্পকে তৈরি করতে হবে দ্রুততার সঙ্গে। এবারের বাজেটে ম্যান মেড ফাইভার তথা পলিস্টার সূতার তৈরির উপাদানের ওপর সকল প্রকার আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার, উৎপাদন ও বিক্রয় পর্যায়ে শূন্য হারে ভ্যাট নির্ধারণসহ আরও কিছু সুবিধা দেয়ার ব্যবস্থা করলে দেশের বস্ত্র ও পোশাক শিল্পের নতুন বিপ্লব ঘটবে।
Array