
বিভিন্ন দেশের ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১০ দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত মাসিক ম্যাগাজিন ‘গ্লোবাল ফাইন্যান্স’। এক্ষেত্রে তারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তথ্য ব্যবহার করেছে।
বিশ্বের শীর্ষ ধনী দেশ কাতার। ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ১ লাখ ৩৮ হাজার ৯০০ ডলার। ২০ বছর ধরেই তারা শীর্ষ ধনী দেশের অবস্থান ধরে রেখেছে। এর অধিবাসী মাত্র ২৮ লাখ। ২০১৪ সালের পর থেকে কাতারের অধিবাসীর মাথাপিছু আয় প্রতিবছর কমছে ১৫ হাজার ডলার।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীনের প্রশাসনিক অঞ্চল ম্যাকাও। ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ১ লাখ ১৪ হাজার ৩৬২ ডলার। মাত্র ৬ লাখ অধিবাসীর এই অঞ্চলে ৪০টির বেশি ক্যাসিনো আছে। করোনার কারণে ক্যাসিনো বন্ধ ছিল, গত জুলাই থেকে আবার খুলে দেওয়া হয়েছে।
লুক্সেমবার্গের ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ১ লাখ ১২ হাজার ডলার। ইউরোপের আরেক ট্যাক্স হ্যাভেন। সর্বোচ্চ মানের জীবনযাপনের দেশ লুক্সেমবার্গ। বাজেটের একটি বড় অংশ ব্যয় হয় আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায়। ২০১৫ সালে প্রথম দেশটির মাথাপিছু আয় এক লাখ ডলার অতিক্রম করে। এমনকি করোনা মহামারিতে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাদের আয় খুব একটা কমবে না।
এশিয়ার অন্যতম করের স্বর্গরাজ্য বলা হয় সিঙ্গাপুরকে। ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ১ লাখ ৫ হাজার ৭০০ ডলার। ১৯৬৫ সালে স্বাধীন হওয়ার সময় দেশটির তেমন কিছুই ছিল না। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম, স্মার্ট নীতি ও সঠিক নেতৃত্বের গুণে সিঙ্গাপুর এখন অন্যতম ধনী দেশ।
আয়ারল্যান্ডের ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৮৭ হাজার ডলার। করোনার আগে ব্রেক্সিট, বাণিজ্যযুদ্ধ, উদ্বাস্তুসহ নানা সমস্যায় যখন ইউরোপ ছিল জর্জরিত, তখনও আয়ারল্যান্ডের প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ শতাংশ, যেখানে ইউরোপের প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ২ শতাংশ।
তেলসহ বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে ব্রুনেই দারুস সালামের। ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৮৫ হাজার ডলার। আয়ের বৈষম্য ও পুষ্টিহীনতাও প্রকট। সাড়ে চার লাখ অধিবাসীর এই দেশে ৪০ শতাংশের বেশি মানুষের আয় বছরে এক হাজার ডলারের কম।
নরওয়ের ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৭৯ হাজার ৬০০ ডলার। ১৯৬০ সালে এখানে তেলের খনি আবিষ্কারের পর যত দিন পর্যন্ত জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছিল, তত দিন দেশটির সমৃদ্ধি কেবলই বেড়েছে। আয়ের বৈষম্যের দিক থেকে নরওয়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে।
করোনার কারণে এবার দুবাই ওয়ার্ল্ড এক্সপো করতে পারছে না, এটা একটা বড় ধাক্কা সংযুক্ত আরব আমিরাতের। এই এক্সপোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আড়াই কোটি মানুষ অংশ নেন। ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৭০ হাজার ৪০০ ডলার। তেল বিক্রি করে সবচেয়ে বেশি আয়। এছাড়া বাণিজ্য, নির্মাণ ও পর্যটন থেকে দেশটির আয় আছে।
বিশ্বের মোট তেলের ৬ শতাংশই কুয়েতের। দেশটির বর্তমান ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৬৭ হাজার ৯০০ ডলার। কুয়েতের মোট দেশজ উৎপাদন জিডিপির ৪০ শতাংশ আসে তেল থেকে, রপ্তানির ৯০ শতাংশই তেল।
সুইজারল্যান্ডের বর্তমান ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৬৭ হাজার ৬০০ ডলার। সে দেশে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৯ হাজার ৪২৮ জনই মিলিওনেয়ার।
সবচেয়ে গরিব দেশের তালিকায় রয়েছে: বুরুন্ডি (জিডিপি-পিপিপি ৭২৭ ডলার), সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক (৮২৩ ডলার), কঙ্গো (৮৪৯ ডলার), ইরিত্রিয়া (১০৬০ ডলার), নাইজার (১১০৬ ডলার), মালায়ি (১২৪০ ডলার), মোজাম্বিক (১৩০৩ ডলার), দক্ষিণ সুদান (১৬০২ ডলার) ও সিয়েরা লিওন (১৬৯০)৷
তালিকায় ১৯১টি দেশের মধ্যে ১৪৩তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। জিডিপি-পিপিপি ৫ হাজার ২৮ ডলার। ১২৪তম অবস্থানে আছে ভারত (৮৩৭৮ ডলার) এবং পাকিস্তান ১৩৮তম অবস্থানে (৫৮৭২ ডলার)। ডয়চে ভেলে
Array