
আগের নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি আসনে যেভাবে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের প্রার্থীরা ভোট না করেই জাতীয় সংসদে এসেছিলেন, এবার যাতে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার ‘কৌশলের অংশ হিসেবেই’ মহাজোটের বাইরে গিয়ে শরিক দল জাতীয় পার্টি উল্লেখযোগ্য আসনে নির্বাচন করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মহাজোটের বাইরে জাপার দেড় শতাধিক আসনে মনোনয়ন দেওয়াটা আমাদের রাজনৈতিক কৌশল। বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে সরে গেলে, যাতে গত নির্বাচনের মতো এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে না হয়, এ কারণেই এ ব্যবস্থা। এটা কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।’
এবার একাদশ নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে নির্বাচন করছে। মহাজোটগতভাবে জাতীয় পার্টিকে ২৭টির মতো আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের বা নৌকা মার্কার কোনো প্রার্থী নেই। তবে এর বাইরে আরো প্রায় দেড়শ আসনে নিজের প্রার্থী রেখে দিয়েছেন এইচ এম এরশাদ। মহাজোটভুক্ত বা দলীয় সব প্রার্থীই লাঙ্গল মার্কায় নির্বাচন করবে।
মহাজোটে জাতীয় পার্টির আসন বণ্টন নিয়ে শুরু থেকেই ধোঁয়াশাপূর্ণ অবস্থা তৈরি হয়। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত সেটি চলতে থাকে। প্রতীক বরাদ্দের আগের দিন রাতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর চলে যান। পার্টির সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে বলেন, আসন বণ্টন নিয়ে তাঁর দল সন্তুষ্ট নয়, তবে মহাজোটের স্বার্থে তাঁরা এটা মেনে নিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এর পরেই সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চলমান ভোটের পরিবেশ নিয়েই কথা বলেন। সে প্রসঙ্গে আসে বিএনপির প্রার্থীদের প্রচারে বাধা দেওয়া বা তাদের ওপর হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গেও।
বিএনপির প্রচারে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির অবস্থা শক্তিশালী হলে কোনো বাধাই তাদের আটকাতে পারবে না। অবস্থা দুর্বল বলেই তারা মাঠে নামতে ভয় পায়।’
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়েও বিএনপির অভিযোগ রয়েছে। ভোটের মাঠে সেটি হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা নির্বাচন কমিশন ভালো বলতে পারবে।’
বিএনপি নেতারা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছেন, তফসিল ঘোষণার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তাদের নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকেও হয়রানি করা হচ্ছে।
এ অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের উত্তর দেন, ‘এটার জন্য আমরা দায়ী নই। এটার জন্য তারাই ( বিএনপি) দায়ী।’
Array