
ম্যাচ শেষে জয়টাই ছিল বড় প্রাপ্তি। নেপালে তিন জাতি ফুটবল টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ কাঙ্খিত এই জয় পেলো অদৃশ্য এক আত্মঘাতি গোলে। যা কিনা লাল সবুজ জার্সধারীদের ফাইনালে উঠার পথটি পরিস্কার করে দিয়েছে অনেকটাই। তবে মাঠের লড়াইয়ের বিশ্লেষনে জামাল ভুঁইয়াদের লড়াইয়ে দেখা মেলেনি তেমন কোন আহামরি ছন্দ। ফুটবলের যা কিছু শিল্প দেখিয়েছেন কিরগিজিস্তান অনুধ্ব-২৩ জাতীয় দলটির ফুটবলাররা। তাইতো ত্রিশ মিনিটের মাথায় একটি আত্মঘাতি গোলে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের ফুটবলাররা পারেন নি নিজেদের সেভাবে মেলে ধরতে।
এমন কি জালের নাগালই পায়নি বাংলাদেশের কেউ। যদিও মিলল কাঙ্ক্ষিত গোল। তাইতো ম্যাচ শেষেও ব্যবধান হয়ে রইলো প্রতিপক্ষের ওই আত্মঘাতী গোল। কাঠমাণ্ডর দশরথ স্টেডিয়ামে গতকাল ১-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৩০তম মিনিটে আত্মঘাতী গোলটি করেন কিরগিজস্তানের ডিফেন্ডার কুমারবাজ বাইয়ামান।
দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর। পুরো ম্যাচে পোস্টের নিচে তিনি ছিলেন আস্থার প্রতীক হয়ে। এ জয়ে ২৯ মার্চের ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। আগামী শনিবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হবে তারা।
শুরুর একাদশে নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূইয়ার অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ওঠে মিডফিল্ডার সোহেল রানার হাতে। সেরা একাদশে তিন নতুন মুখ-ফরোয়ার্ড মেহেদী হাসান রয়েল, ডিফেন্ডার রিমন হোসেন ও হাবিবুর রহমান সোহাগ।
প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ধাপে ৬টি করে গোল নিয়ে দেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে শীর্ষে থাকা ফরোয়ার্ড সুমন রেজা ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহকে বেঞ্চে রেখে কোচ আক্রমণের দায়িত্ব দেন মতিন মিয়া, সাদ উদ্দিন ও রয়েলের কাঁধে।
অষ্টাদশ মিনিটে সতীর্থের লং পাস বক্সে নিয়ন্ত্রণ নিলেও ভারসাম্য হারানো মতিন শট নেওয়ার আগেই এক ডিফেন্ডার কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন।
একটু পর সোহেলের শট ডি-বক্সে এক খেলোয়াড়ের হাতে লাগলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করে বাংলাদেশ। রেফারির সাড়া মেলেনি।
৩০তম মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠো সাদ উদ্দিন ক্রস বাড়ান; বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই ঠেলে দেন কুমারবাজ। পরের মিনিটে জিকোর দারুণ সেভে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ মুঠোয় থাকে বাংলাদেশের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কর্নার ফিস্ট করে ফিরিয়ে আবারও বাংলাদেশের ত্রাতা জিকো। ৫৩তম মিনিটে মতিনের কাট ব্যাকে সোহেলের শট এক ডিফেন্ডার আটকালে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়নি।
৫৫তম মিনিটে একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন আনেন বাংলাদেশ কোচ। মাশুক মিয়া জনি, বিপলু আহমেদ ও সোহাগকে তুলে নামান জামাল, রাকিব হোসেন ও রিয়াদুল ইসলাম রাফিকে। এরপর ৬৪তম মিনিটে রয়েলকে তুলে মাঠে নামান মানিক হোসেন মোল্লাকে।
চার পরিবর্তনে ম্যাচে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়ে। লং পাসে কিরগিজস্তান চেষ্টা করতে থাকলেও সুবিধা করতে পারেনি রক্ষণে রিমন-বিশ্বনাথ ও পোস্টের নিচে জিকোর দৃঢ়তায়।
ছয় মিনিটের যোগ করা সময়ে গোলের জন্য মরিয়া কিরগিজস্তান বেশ চাপ দেয়। দ্বিতীয় মিনিটে ফ্রি কিক ফিরিয়ে দলকে জয়ের পথে রাখেন বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার রিমন।
একেবারে শেষ দিকে বড় বাঁচা বেঁচে যায় বাংলাদেশ। কর্নারে বদলি ডিফেন্ডার তাসিয়েভ কামোলিদিনের হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। জয়ের উচ্ছ্বাস নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
Array