জীবন যখন বিষন্নতায় ডুবে যায়! জীবনকে যখন অর্থহীন মনে হয় তখনই জীবনে বিনোদনের প্রয়োজন হয়। আর বিনোদন হিসেবে যদি এমন কিছু চলচ্চিত্রকে বেছে নেয়া যায় যা আপনার অবসর সময়টুকুতে সুন্দর ভবিষ্যত গঠনের বীজ বুনে দেবে। কেমন হতো তাহলে? অবশ্যই ভালো! তাহলে আর দেরি কেন? চলুন তাহলে জেনে আসা যাক এমন দুটি সিনেমা সম্পর্কে যা আপনার দুঃখ ভারাক্রান্ত জীবনে দিবে অনুপ্রেরণার সুবাতাস। বদলে দিবে আপনার জীবনের গতিপথ।
আসুন জেনে আসি তেমন দুটি সিনেমার ভেতর বাহির।
ফরেস্ট গাম্প
১৯৮১ সালের কোনো এক সময়ের ঘটনা, বোকাসোকা ফরেস্ট গাম্প বাস স্টেশনে বসে একের পর এক তার জীবনের সব কাহিনী বলে যেতে থাকে। ঘটনাক্রমে ইউএস আর্মিতে যোগদান করা, এক সহযোদ্ধার জীবন বাঁচানো (যে আদৌ সেই পঙ্গুত্বের জীবন নিয়ে বাঁচতে চায়নি), রাগবী তারকা হয়ে ওঠা, বন্ধুর কথায় চিংড়ি মাছের ব্যবসা শুরু করা, ভালোবাসার মানুষ জেনির সাথে হিপ্পিদের মতো জীবনযাপন করা, ফলের ব্যবসা ভেবে অ্যাপল কোম্পানিতে টাকা বিনিয়োগ করা, ছোটবেলায় এলভিস প্রিসলিকে নাচ শেখানো, জন এফ কেনেডির সামনে না বুঝেই নিজেকে হাসির পাত্রে পরিণত করা- কী না করেছে সে জীবনে! এক ঝুড়ি অর্জন নিয়েও দিনশেষে ফরেস্ট গাম্প সেই সাধারণ গাম্পই থেকে যায়, যে কিনা ব্যবসা থেকে অর্জিত লাভের অর্ধেক তার মৃত বন্ধুর পরিবারকে পাঠিয়ে দিতে একদম ভুল করে না, বান্ধবী জেনির শত উপেক্ষাও যার ভালোবাসা এক ফোঁটা কমাতে পারে না।
রবার্ট জেমেকিসের পরিচালনায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন হলিউডের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস। সেরা অভিনেতা সহ সর্বমোট ১৪টি বিভাগে মনোনয়ন পেয়ে ৬টি বিভাগে অস্কার জেতে ‘ফরেস্ট গাম্প’।
আইএমডিবি রেটিংঃ ৮.৮/১০
পারস্যুট অফ হ্যাপিনেস
সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটিতে উদ্যোক্তা ক্রিস গার্ডেনারের জীবনের এক বছরের কঠিন সংগ্রামের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক গ্যাব্রিয়েল মুচিনো। গৃহহীন এক সেলসম্যান তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলে ক্রিস্টোফার আর স্ত্রী লিন্ডাকে নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় কোনমতে দিন কাটাচ্ছিল। প্রতি মাসে তার যে স্ক্যানার বিক্রি করার কথা ছিল, চুক্তিমতো তা বিক্রি করতে ব্যর্থ হয় সে। জমতে থাকে ট্যাক্স, বিলের পর বিল, বাড়িভাড়া, ছেলের লেখাপড়ার খরচ আর ডে কেয়ারের বেতন। ক্রিস গার্ডেনারের চরিত্রে অভিনয় করা শক্তিমান অভিনেতা উইল স্মিথের কণ্ঠে উচ্চারিত এই কথাগুলো যেন প্রতিটি বাবার হৃদয় নিংড়ে বের হওয়া বাণী-
“Don’t ever let someone tell you that you can’t do something, not even me. You got a dream, you gotta protect it. When people can’t do something themselves, they’re gonna tell you that you can’t do it. You want something, go get it.”
২০০৬ সালে সত্যি সত্যি মিলিয়নিয়র হন ক্রিস গার্ডেনার। টয়লেটে যার রাত কেটেছে, টাকার অভাবে যিনি স্ত্রীর সম্মান রাখতে পারেননি, সেই ক্রিস গার্ডেনার যেন বর্তমান প্রজন্মের প্রতিটি উদ্যোক্তার জীবনযুদ্ধের প্রতীক। যেভাবে তিনি পেশা পরিবর্তন করে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। সিনেমাটি মন ছুঁয়ে যাবে যেকোনো শ্রেণীর দর্শকের।