
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠছে মানবতার দেয়াল। যেখানে স্বচ্ছল পরিবারের ব্যবহার করা পোশাক, লেখাপড়ার সামগ্রী প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়ে যেতে পারছেন অসহায় হতদরিদ্ররা। সমাজের ধনী ও গরিবের মাঝে মানবিকতার সেতুবন্ধন সৃষ্টি করাই মূল উদ্দেশ্য বলে জানান উদ্যোক্তারা। তবে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেলে এ ধরনের উদ্যোগ যে কোনো সমাজের জন্যই রোল মডেল হতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
রাজধানীর দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর নবীনগর এলাকা। দেয়ালে সাজানো আছে শার্ট, প্যান্ট, সালোয়ার কামিজ কিংবা শিশুদের জামাকাপড়। রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে আছে ব্যবস্থা। একদিকে নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র রাখা হচ্ছে, অন্যদিকে নেয়া হচ্ছে।
এক রিকশা চালক বলেন, একটা প্যান্ট কিনতে গেলে ৫০০-৮০০ টাকা লাগে। আমি এমনিতেই পেয়ে গেলাম, এটা আমার জন্য অনেক বেশ উপকার।
একজন বলেন, আমি যেগুলা পড়তে পারি না, আমি সেগুলো এখানে দিয়ে যাবো।
শুধু যাত্রাবাড়ীতেই নয় রাজধানীর মহাখালি, বনানী সহ বেশ কিছু এলাকার দেয়ালেই দেখা মিলবে এমন চিত্র। নিঃস্বার্থ এমন আয়োজনের পাশে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান উদ্যোক্তাদের।
এক উদ্যোক্ততা জানান, আমরা সমাজে অসহায় মানুষদের পাশে কি ভাবে দাঁড়াবো, সেই চিন্তা থেকেই আমাদের এই উদ্যোগ।
আরেকজন জানান, কারো কাছে হাত পেতে নিবে কিছু, কিন্ত লজ্জায় চাইতে পারছে না, তাই এই ধরণের প্রয়োজনটা যেন তারা সহজেই পূরণ করতে পারে, সে জন্য আমাদের এই উদ্যোগ।
প্রতিদিনের সংবাদপত্র কিংবা টিভির পর্দা খুললেই যেখানে সমাজের হানাহানি আর বিদ্বেষ লেগেই থাকে, সেখানে যে কোন সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে মানবতার দেয়াল।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, আদর্শ রাষ্ট্র ব্যবস্থায় অসহায় মানুষকে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই। এ জন্য প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন।
রাজধানীর ফুটপাত কিংবা অলি-গোলিতে দিন পার করে এম অসংখ্য মানুষ। যেখানে সুউচ্চ ভবনে কারো হয়তো প্রয়োজনের তুলনায় বাড়তি আছে সবকিছুই। মানবতার দেয়ালের মতো এমন উদ্যোগে একদিন পাল্টে যাবে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই ভূখণ্ডের চিত্র। যেখানে সত্যিই একদিন মানুষ মানুষের জন্যই হয়ে উঠবে।
Array