
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই- সেপ্টেম্বর) খেলাপী ও অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি ব্যাংকগুলো। খেলাপী ঋণ আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এগিয়ে আছে একমাত্র ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ (বিডিবিএল) এবং সবচেয়ে পিছিয়ে আছে রূপালী ব্যাংক। অন্যদিকে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে বেসিক ব্যাংক কোন অর্থই আদায় করতে পারেনি। এ খাতে রূপালী ব্যাংকের আদায়ের পরিমাণ ১ শতাংশেরও কম।
সরকারের সঙ্গে ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি’র বিপরীতে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক অগ্রগতি পর্যালোচনায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
জানা যায়, চলতি অর্থবছরে ছয়টি (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল) রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট খেলাপী ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৮০ কোটি টাকা। এছাড়া অবলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায় করতে হবে আরও ৫৫৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংককে মোট খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে ৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে ৯০০ কোটি টাকা খেলাপী ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রথম তিন মাসে সোনালী ব্যাংক আদায় করেছে ২০৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা (২৩ দশমিক ১ শতাংশ); বার্ষিক ৪৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে জনতা ব্যাংক আদায় করেছে ৫৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা (১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ); বার্ষিক ৫০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অগ্রণী ব্যাংক আদায় করেছে ৬৫ কোটি ১ লাখ টাকা (১৩ শতাংশ); বার্ষিক ১০০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রূপালী ব্যাংক আদায় করেছে ৪৭ কোটি ১১ লাখ টাকা (৪ দশমিক ৭১ শতাংশ); বার্ষিক ১৪০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বেসিক ব্যাংক আদায় করেছে ২২ কোটি ৮১ লাখ টাকা (১৬ দশমিক ২ শতাংশ) এবং বার্ষিক ৯০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিডিবিএল ব্যাংক আদায় করেছে ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা (৩৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ)।
অন্যদিকে অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক এগিয়ে আছে বিডিবিএল ব্যাংক। বার্ষিক ৩০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ব্যাংকটি আদায় করেছে ১৬ কোটি টাকা। এটি মোট লক্ষ্যমাত্রার ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ। আর এ খাতে ১০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আলোচ্য সময়ে কোন অর্থই আদায় করতে পারেনি বেসিক ব্যাংক। অন্যান্য ব্যাংকের মধ্যে ২০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সোনালী ব্যাংক ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা (৪ দশমিক ২২ শতাংশ); ১৩০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে জনতা ব্যাংক ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা (৪ দশমিক ৪ শতাংশ); ১৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক ২৫ কোটি ১২ লাখ টাকা (১৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ) এবং ৩৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রূপালী ব্যাংক মাত্র ৯ লাখ টাকা (দশমিক ২৫ শতাংশ) আদায় করেছে।