
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপটি আরো শক্তিশালী হয়ে আগামীকাল সোমবার ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ এ পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদদের মতে, আপাতত নিম্নচাপটি আগামী ৭২ ঘণ্টায় ধাপে ধাপে শক্তি বাড়াবে। সোমবার এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। বুধবার সন্ধ্যায় অতি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ‘যশ’।
রোববার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘পুর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নিম্নচাপটি আরো শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর কেন্দ্রের বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। আর ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে প্রবেশের সময় বাতাসের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার, যা ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।’
বিশ্বের আবহাওয়ার পূর্বাভাস কেন্দ্রগুলো জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার (২৫ মে) মধ্যরাত থেকে বুধবার (২৬ মে) সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি মূল আঘাত হানবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যার উপকূল দিয়ে। আর বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও খুলনার ওপর দিয়ে সম্ভাব্য আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়াবিদদের ধারণা, ঘূর্ণিঝড় আম্পান যেদিক দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করেছিল সেই সাতক্ষীরা ও খুলনার ওপর দিয়ে এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে। এছাড়া ২৬ মে ভরা পূর্ণিমার ফলে উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসসহ বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। এক্ষেত্রে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস বয়ে যেতে পারে।
আজ রোববার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ সতর্ক বার্তায় বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে এবং এর আশপাশের এলাকার নিম্নচাপটি দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা বন্দর থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে।
নিম্নচাপ হলেও দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে (চট্টগ্রাম, পায়রা, কক্সবাজার ও মোংলা ) ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ না করার পাশাপাশি তাদের ২৩ মে’র মধ্যে উপকূলে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
Array