এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় গত বছর ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ডিআইজি মিজানুর রহমানকে। তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে থাকা এক দুদক কর্মকর্তাকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ার কথা নিজেই ফাঁস করে সম্প্রতি নতুন করে আলোচনায় আসেন তিনি।
তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে দুদক মামলা করার পর আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে সোমবার হাই কোর্টে গিয়েছিলেন মিজান। কিন্তু হাই কোর্ট জামিন নাকচ করে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।
তাকে পুলিশ হেফাজত রেখে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মহানগর বিশেষ জজ আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয় পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনারকে।
অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এইচ এম আজিমুল হকের গাড়িতে করে সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় আদালত থেকে শাহবাগ থানায় পৌঁছান সাময়িক বরখাস্ত এই পুলিশ কর্মকর্তা।
থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিআইজি মিজানকে প্রথমে থানার পরিদর্শকের (অপারেশনস) কক্ষে রাখার কথা ভাবা হয়েছিল। তবে পরে তাকে ওসি আবুল হাসানের কক্ষে নেওয়া হয়।
রাত পার করে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিজানুর রহমানকে পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় পুরান ঢাকার আদালত পাড়ায়। সেখানে শুনানি শেষে জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সোমবার রাতটি শাহবাগ থানায় কীভাবে কেটেছে ডিআইজি মিজানের? থানার পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে কিছু তথ্য পাওয়া গেলেও নাম প্রকাশ করতে চাননি তাদের কেউ।
ডিআইজি মিজানের মত বড় কর্মকর্তাকে রাতের জন্য নিজের কক্ষ ছেড়ে দিয়ে ওসি আবুল হাসান তার দাপ্তরিক কাজ সেরেছেন আরেকজন পরিদর্শকের (তদন্ত) কক্ষে।
ওসির কক্ষের সঙ্গে ছোট একটি বিশ্রাম কক্ষ রয়েছে, রয়েছে টয়লেটও। ডিআইজি মিজান সারা রাত ওসির ঘরের সোফায় বসেই কাটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, মিজানুর রহমানকে ভাত খাওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তবে তিনি ভাত খাননি। রাতে কয়েকবার চা-বিস্কুট খেয়েছেন।
মিজানুর রহমান সকালে থানাতেই নাস্তা করেছেন। তবে নাস্তায় কী খাবার ছিল, তা বলতে রাজি হননি পুলিশ সদস্যদের কেউ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এইচএম আজিমুল হক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে থানা থেকে মিজানুর রহমানকে আদালতে পাঠানো হয়।