• ঢাকা, বাংলাদেশ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা আসছে 

 admin 
25th May 2021 9:34 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

করোনার কারণে ১৪ মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে চরম ক্ষতির সম্মুখীন শিক্ষার্থীরা। ভার্চুয়াল ক্লাস চালু হলেও মেলেনি আশানুরূপ ফল। বিশেষ করে গ্রামের শিক্ষার্থীরা ভার্চুয়াল ক্লাস থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

এদিকে, গত কয়েক দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীর। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তের হার কমে আসায় অঞ্চলভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণ কম এমন জেলা, উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রাধান্য দেয়া হবে।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন। একইসঙ্গে ২০২১ সালের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে তিন মাস পর পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণাও আসতে পারে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাবোর্ড সূত্রে আরও জানা যায়, আগামী জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে দুই স্তরের শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে ক্লাস শুরুর ঘোষণাসহ ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের সার সংক্ষেপ মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করতে পারেন।

করোনার কারণে চলমান বিধিনিষেধেও মফস্বল এলাকার মানুষ বসে নেই। সেখানে প্রায় সব কিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে। শুধু শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারছেন না। শহরের শিক্ষার্থীরাও এখন আর ঘরে বসে নেই। মার্কেট, বাজার, রাস্তাঘাটসহ সব জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। নিয়মিত কোচিং-প্রাইভেটও চলছে। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে শুধু বন্ধ রয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা এবং আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো কীভাবে নেয়া যায় তা নিয়ে শিক্ষাবোর্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে তথ্য ও প্রস্তাবনা চাওয়া হয়েছে। এসব প্রস্তাবনা যাচাই-বাছাই করে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন তিনি।

সূত্র জানায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষাবোর্ড যে প্রস্তাবনা দিয়েছেন তার মধ্যে ৬০ দিন এসএসসি এবং ৮০ দিন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস রুমে পড়িয়ে তারপর পরীক্ষা নেয়ার আগে সিদ্ধান্ত এখনও বহাল রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে পরীক্ষার সময় আরও তিন মাস পিছিয়ে দেয়ার প্রস্তাবনা রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে অঞ্চলভিত্তিক গুরুত্ব দেয়ারও প্রস্তাব করা হয়েছে।

যেমন- যে উপজেলায় সংক্রমণের হার কম সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে শহরে এখনও করোনার সংক্রমণ বেশি থাকায় এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পক্ষে নয় বোর্ড।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ুয়া সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিনের আওতায় এনে তারপর ক্লাস রুমে ফেরানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আবাসিক এক লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে

সূত্রটি উদাহরণ দিয়ে বলে, বর্তমানে চাঁপাইনববাগঞ্জে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সেখানে লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আবার দেশের অনেক জেলা আছে যেখানে সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের অনেক নিচে। বিশেষজ্ঞদের মতে, টানা চার সপ্তাহ সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে থাকলে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যেতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর নেহাল আহমেদ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কি না, এটা শিক্ষামন্ত্রী ভালো বলতে পারবেন। স্থগিত পরীক্ষাগুলো কীভাবে নেয়া যায় সে বিষয়ে একাধিক মতামত দিয়েছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়।

তিনি আরও বলেন, এবার অটো পাস দেয়া হবে না, এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রয়োজনে আরও তিন মাস পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়া হবে। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্বের কোনো দেশে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে আমরা পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে। সেজন্য করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

এদিকে, উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে দুই ধরনের প্রস্তাব করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ুয়া সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিনের আওতায় এনে তারপর ক্লাস রুমে ফেরানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আবাসিক এক লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। যারা আবাসিক হলে থাকেন তাদের আগে টিকার আওতায় এনে তারপর ক্লাস শুরুর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, আবাসিক পর্যায়ে কতজন শিক্ষার্থী রয়েছে তার আপডেট তালিকা মন্ত্রণালয়কে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে অনাবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যাও পাঠানো হয়েছে।

২০২২ সালে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। করোনার কারণে তারা সরাসরি ক্লাস রুমে মাত্রা আড়াই মাস ক্লাস করতে পেরেছে। সেজন্য ২০২১ সালের মতো ২০২২ সালের ব্যাচের ক্ষেত্রেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার কথা জানাবেন শিক্ষামন্ত্রী। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাচটিকে আগেভাগে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হবে। যাতে তারা প্রস্তুতি নিতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (কারিকুলাম) প্রফেসর মশিউজ্জামান বলেন, ২০২২ সালের শিক্ষার্থীদের কতটুকু সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হবে তা এক মাস আগে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সিলেবাস কত শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, শতাংশের হিসাবে বলা যাবে না। কারণ একেক বিষয়ে একেক রকম কমছে। তবে ২০২১ সালের চেয়ে তাদের সিলেবাসটা আরও বেশি হবে।

গত বছর করোনা মহামারি শুরুর পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাত শিক্ষা। এর মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ২০২১ সালের এসএসসি-এইচএসসি ব্যাচ। তারা প্রাক নির্বাচনী বা নির্বাচনী কোনো পরীক্ষাই দিতে পারেনি। ২০২১ সালের এসএসসি ব্যাচটি করোনার আগে দশম শ্রেণিতে ক্লাস করতে পেরেছে মাত্র আড়াই মাস। এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা দ্বাদশ শ্রেণিতে অটো পাস নিয়ে উঠেছে। দ্বাদশ শ্রেণিতে একদিনও সরাসরি ক্লাস করতে পারেনি তারা। এ কারণে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে তাদের পরীক্ষা নেয়া হবে।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১