• ঢাকা, বাংলাদেশ

শিশুর মুখে থ্রাশ বা ইস্ট ইনফেকশন 

 admin 
19th Jul 2019 1:28 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

ছোটবেলায় শিশুদের যথাযথ যত্নের অভাবে শিশুদের মুখে অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। শিশুদের মুখের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে ওড়াল থ্রাশ বা ইস্ট সংক্রমণ সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। ওরাল থ্রাশ মায়ের জন্যও খুব চিন্তার ব্যাপার। ওড়াল থ্রাশ হলে তা বাচ্চার কাছ থেকে মায়ের স্তনে ও স্তনবৃন্তে ইস্ট সংক্রমণ করতে পারে। এতে নবজাতককে দুধ পান করানোর সময় মা ও ব্যথা অনুভব করতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে নবজাতকের চিকিৎসার পাশাপাশি মায়েরও চিকিৎসা নিতে হয়।

ওড়াল থ্রাশ কি?
এটি ক্যানডিডা অ্যালবিকানস নামের ইস্ট বা ফাংগাসের সংক্রমণে হয়ে থাকে। ওরাল থ্রাশ অনেক সময় গলা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। এ ধরনের ওরাল থ্রাশকে ওরোফ্যারিনজিয়াল ক্যান্ডিডিয়াসিস বলা হয়। ওরাল থ্রাশ বা ফাংগাল সংক্রমণ চিবুকের ভেতর, জিহ্বা, তালু, ঠোঁট ও মাড়িতে দেখা যেতে পারে।

ক্যানডিডা আ্যালবিকানস নামক ছত্রাক আমাদের আশেপাশেই থাকে কিন্তু খুব কমই সমস্যা ঘটায়। তবে খুব বেশি অসুস্থ থাকলে, ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র নিয়ন্ত্রণে না থাকলে, এ্যান্টিবায়োটিক সেবন করলে এই ছত্রাকগুলো দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে এবং সংক্রমণ ঘটায়। এছাড়া ছোট বাচ্চাদের মুখে এবং ন্যাপি এরিয়ায় (Nappy area-যেখানে মল শুষে নেয়ার জন্য শিশুর পাছা ও দুই পায়ের মাঝখানে তোয়ালে জড়িয়ে রাখা হয় সেখানে) thrush হতে দেখা যায়।

থ্রাশ কেন হয়?
বেশিরভাগ মানুষের মুখ ও পরিপাকতন্ত্রে ক্যান্ডিডা ফাঙ্গাসটি অল্প পরিমাণে থাকে। এগুলো সাধারণত কোন সমস্যা করে না, তবে এর পরিমাণ বেড়ে গেলে ওরাল থ্রাশ হতে পারে। একটি নবজাতক সাধারনত মায়ের জন্মনালীতে প্রথম বারের মত ফাঙ্গাস বা ইস্টের সংস্পর্শে আসে। বাচ্চার জন্মের পর অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে থ্রাশ দেখা দিতে পারে। যদি মা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহন করেন এবং বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান বা যদি বাচ্চাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয় তবে থ্রাশ হতে পারে। কারণ যেসব ভালো ব্যাক্টেরিয়া ফাঙ্গাসকে নিয়ন্ত্রনে রাখে অ্যান্টিবায়োটিক সেগুলোকে মেরে ফেলে।

কিছু কিছু মা ও বাচ্চা একে অপরকে সংক্রমিত করতে পারে। বাচ্চা থেকে মায়ে থ্রাশ সংক্রমিত হতে পারে যদি বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো হয়। এর ফলে মায়ের নিপলে ইনফেকশন হতে পারে যা ব্যাথাযুক্ত হয় এবং এর চিকিৎসা প্রয়োজন। ঠিক একইভাবে মায়ের যদি থ্রাশ থাকে তবে বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে তা শিশুর মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। তবে মায়ের বা বাচ্চার কারও থ্রাশ থাকলেই যে তা সবসময় সংক্রমিত হবে তেমন নয়।

কারও কারও মতে ফীডার বা চুষনির কারণে থ্রাশ হয়। আবার অনেকের মতে অপরিচ্ছন ফীডার বা চুষনি এর কারণ। কিন্তু যেসব বাচ্চা শুধুমাত্র বুকের দুধ পান করে এবং চুষনি ব্যাবহার করেনা তাদের থ্রাশ হতে পারে। তাই এই সমস্যার নির্দিষ্ট কোন কারণ নির্ণয় করা যায়না। ফিডারে বা বোতলে দুধ খাওয়া ছাড়াও যেসব নবজাতক শিশু অকালজাত, স্বল্প ওজনে ভূমিষ্ঠ তাদের মাঝে ক্যানডিডা সংক্রমণের হার বেশি। শিশুকে ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হলেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোনো কারণে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলেই ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

থ্রাশের লক্ষন
যদি বাচ্চার জিহ্বায় সাদা স্তর দেখেন তবে তা সাধারনত লেগে থাকা দুধ। এগুলো আপনি পাতলা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলতে পারেন। থ্রাশের ক্ষেত্রে নিচের লক্ষনগুলো দেখা যেতে পারে।

ঠোঁট, জিহ্বা, গালের ভেতর ও গলার ভেতরের পেছনের দিকে সাদা আবরণ পড়ে।
সাদা আবরণের নিচের অংশ লাল ও ঘা-যুক্ত হতে পারে।
সাদা আবরণ ঘষে তুলে ফেললে লাল হয়ে যায় এবং সামান্য রক্তপাত হয়।
ঠোঁটের কোনা ফেটে যায়
মুখে ব্যাথা বা জ্বালা-পোড়া হয়।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওরাল থ্রাশ হলে বাচ্চা কোন কিছু খেতে বা পান করতে কান্নাকাটি করে।
থ্রাশের চিকিৎসা
মুখের থ্রাশের চিকিৎসা জরুরি। চিকিৎসা নিতে দেরি হলে অনেক সময় এই সংক্রমণ সারা দেহে বা রক্তে ছড়িয়ে যেতে পারে। কার্যকর চিকিৎসা হিসেবে এক শতাংশ জেনশিয়ান ভায়োলেট ব্যবহার করা যায়। শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো নাইস্ট্যাটিন বা এ ধরনের অ্যান্টি ফাঙ্গাল জাতীয় ওষুধে সুফল মেলে। তবে মায়ের স্তনের বোঁটায় যদি একই ছত্রাক জীবাণুর সংক্রমণ থাকে, তবে তার চিকিৎসা একই সময়ে করতে হবে। নয়তো শিশুর সংক্রমণ ভালো হবে না। তবে যে কোন ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহন করতে হবে।

থ্রাশ কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়?
যদি আপনার গ্রহন করা অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েডের কারনে আপনার বাচ্চার ওরাল থ্রাশ হয়েছে বলে মনে হয়, তাহলে সেই ওষুধটি বা সেটি গ্রহণ করার পদ্ধতি ডাক্তার বদলে দিতে হতে পারে বা তার পরিমাণ কমিয়ে দেয়া হতে পারে। বাচ্চাদের নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো উচিত নয়। শিশুকে ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হলেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

শিশুর দুধ খাওয়ানোর বোতল, খেলনাসহ যেসব সামগ্রী তার মুখের সংস্পর্শে আসতে পারে, সেগুলো সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের নিপল বাচ্চার খাওয়ার পর খোলা বাতাসে শুকিয়ে নিতে পরামর্শ দেন।

বাচ্চার থ্রাশ কি ভয়ের কারণ?
বাচ্চার থ্রাশ সাধারণত তেমন কোন ভয়ের কারণ নয়। তবে থ্রাশ হলে বাচ্চার খাওয়াতে অসুবিধা হতে পারে। খাওয়ার সময় সে ব্যাথা পেতে পারে। তাই থ্রাশ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহন করুন

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১