
দেশের সকল নাগরিকের শিক্ষাগত যোগ্যতা, বিবাহ, সন্তান সংখ্যাসহ যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে একটি ডাটাবেজ তৈরি করতে চায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। আর এজন্য ‘ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রেড (এনপিআর)’ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিবিএস ভবনে ‘স্টেকহোল্ডার (মিডিয়া) কনসালটেশন ওয়ার্কশপ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য জানান তিনি।
ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ‘কোভিডকালে আমাদের দেশের জনশুমারি পেছানো হয়েছে। কারণ আমাদের সশরীরে মাঠ পর্যায়ে উপস্থিত হয়ে ডাটা সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু উন্নত বিশ্বে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে না। তারা আরও আপডেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে।’
তিনি বলেন, ‘করোনার মধ্যে আমরা অনুভব করেছি যে, আমাদেরও সকল নাগরিকদের ডাটা সম্বলিত ডাটাবেজ দরকার। ডাটাবেজ থাকলে সহজে নাগরিকের যেকোনো তথ্য আপডেট করতে পারব। নাগরিকদের ব্যক্তিগত ডাটাবেজে প্রত্যেক নাগরিকদের নাম, ঠিকানা, বৈবাহিক অবস্থা, সম্পত্তি, পরিবারের সদস্যসহ আরও আনুঙ্গিক তথ্য থাকবে।’
সচিব আরও বলেন, ‘সব মিলিয়ে একজন ব্যক্তির সব ধরনের তথ্য দিয়ে প্রত্যেক ব্যক্তির আলাদা আইডেনটিটি তৈরি করা হবে। ডাটাবেজটি তৈরি হলে এখান থেকে কারো তথ্য মুছে যাবে না। এই পদ্ধতি জাপানসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলো করছে।’
মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ‘এনপিআরে ৫ বছরের হোক অথবা শূন্য বছরের হোক, জন্ম হওয়ার পর থেকেই করা যাবে। সব মানুষের তথ্য একটা সূত্রে থাকবে। ব্যবহারকারী যারা হবেন, সেখান প্রয়োজনীয় তথ্য নিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের তথ্য এখান থেকে নিয়ে নিতে পারবে। তাহলে আর তাদের আলাদা করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে না।’
‘তেমনি আমাদের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন যারা করছেন, তারাও এখান থেকে তথ্য নিতে পারবেন। যাদের বয়স শূন্য তাদের তথ্য নিয়ে জন্মসনদ দিয়ে দিতে পারবে তারা। যখনই যার প্রয়োজন হয়, এখান থেকে তথ্য নিতে পারবে। অনেক সময় কার পরিবারের কে, কার সন্তান কে, কার সাথে কার বিয়ে হয়েছিল এগুলো নির্ধারণ করতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। এটা হলে এ বিষয়ে অনেক জটিলতা কমে যাবে’, যোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনুমোদন পেলে এটি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার, বাংলাদেশ বেতারের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (নিউজ, এ এস এম জাহীদ। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিবিএস মহাপরিচালক মো. তাজুল ইসলাম।