• ঢাকা, বাংলাদেশ

সুনিদ্রা চাই সুস্বাস্থ্যের জন্য 

 admin 
11th Mar 2019 2:21 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

ঘুমের জন্য আদর্শ পরিবেশ হলো অন্ধকার, নীরব ও শীতল পরিবেশ- গুহার মতো পরিবেশ। শয্যা হবে উষ্ণ নীড়ের মতো। ঘুম হবে, মেঘের পাল শুনে যেন রাত শেষ না হয়। অনিদ্রা হচ্ছে মেঘের পাল শুনে রাত শেষ। এই দৃশ্য কল্পনা আর টিকছে না ইদানীং। ঘুমের জন্য কল্পলোকে যদি বিচরণ করতেই হয়, মনকে যদি বাঁধনছাড়া পাখির মতো ওড়াতেই হয় তাহলে অন্য উপায় আছে। মধুর একটি অবকাশ, স্নিগ্ধ কোনো অবসরকালের ছবি মনের পর্দায় ভেসে উঠুক না! গ্রীষ্মে খররোদে সাগরসৈকতে অবগাহনের দৃশ্য মনের পটে ভেসে উঠুক। দুশ্চিন্তা, উদ্বেগকে দূরে সরানোর জন্য মেঘের সারিতে মেঘ গোনা সত্যিই বিরক্তিকর। এতে তেমন কাজ হয় না। এটা বলেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। মনকে অন্যত্র সরাতে হলে আনন্দময় কোনো দৃশ্য কল্পনা বেশি কার্যকর। কারণ এটি বেশি চিত্তাকর্ষক। এতেও যদি কাজ না হয়, তাহলে জেগে থাকুন। ঘুম আসবে নীরবে, নিঃশব্দে।

নিটোল ঘুম না হলে স্বাস্থ্য কি ভালো থাকে? অথচ নিদ্রাকক্ষ যদি শীতল না হয়, বালিশ যদি মোলায়েম না হয়, রাস্তার বাতির আলো যদি জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে বিছানার ওপর ও কোণের টেবিলে, যদি ঘড়ির রেডিয়াম ডায়েল জ্বলজ্বল করতে থাকে তাহলে ঘুম হবে কীভাবে? এমন নির্ঘুম রাত অনেকেরই জীবনে আসে, বিছানায় এপাশ-ওপাশ, হাজারো চিন্তা ভিড় করে মনে, ক্লান্ত হয়ে ভোরে ওঠা। আর সারা দিন ভালো না লাগা শরীর বয়ে বেড়ানো।

বিছানায় যদি ছারপোকা থাকে, কুটকুট করে যদি কামড়ায় সর্বক্ষণ তাহলে ঘুমের দফা শেষ। সুনিদ্রার বড় বাধা হতে পারে আণুবীক্ষণিক এসব পোকা। দুগ্ধ ফেননিভ শয্যাতেও কিন্তু এই বিচ্ছিরি জীবটি লুকিয়ে থাকতে পারে, হাঁপানি ঘটানোর জন্য যেমন এটি দায়ী হতে পারে, তেমনি সারা বছর অ্যালার্জি ও নাকবন্ধ সমস্যারও কারণ হতে পারে। তাই তোষক, বালিশ এসব অ্যালার্জেন প্রুফ কভারের ভেতরে ঢোকানো ভালো। তোষকের জন্য, বালিশের জন্য লংক্লথ বা মার্কিন কাপড়ের ওয়ার ভালো। সুতি কাপড় সব সময় ভালো। বেডিংকে সপ্তাহে একবার উষ্ণ পানিতে (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ধুয়ে নিলে ছারপোকা দূর হতে পারে। আর বালিশ একটু পুরনো হলে বদলে নেওয়া উচিত। আপনার সাইনাস, গলা, পিঠ সবই হবে উপকৃত। বেডশিট হওয়া ভালো মোলায়েম সাদা কাপড়ের। রঙচং ভারী ফেব্রিকের চেয়ে ভালো তো বটেই।

মধ্যাহ্ন আহার থেকে শুরু হয় সুনিদ্রার পথে যাত্রা। রাতে সুনিদ্রার জন্য মধ্যাহ্নে কী আহার করছেন সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। এ সময় থেকেই শরীরে ‘সেরোটনিন’ মান উঠতে থাকে, রাতে এই রাসায়নিক বস্তুই ঘটাবে সুনিদ্রা। যা প্রয়োজন তাহলো এমিনো অ্যাসিড ট্রিপটোপ্যান, আর এই এমিনো অ্যাসিড থেকে পরবর্তীকালে তৈরি হয় নিদ্রা নিয়ন্ত্রক রাসায়নিক দ্রব্য ‘সেরোটনিন’ ও ‘মেলাটনিন’। ডিম, কাজুবাদাম, মিষ্টিআলু, বিট, মূলা, পেঁয়াজ, পালংশাক- এসব ট্রিপটোফ্যানসমৃদ্ধ খাদ্যের সঙ্গে মেলানো যায় জটিল শর্করা যেমন- গমের রুটি, বাজরা ও রাগি। শেষ বিকেলে গভীর শ্বাস নিয়ে ও ছেড়ে পেটের ভেতর পর্যন্ত শ্বাসক্রিয়া করে (নবষষু নৎবধঃযরহম) কয়েক মিনিট, সেরোটনিন মানকে উজ্জীবিত করা যেতে পারে। ভেতর পেট পর্যন্ত শ্বাসগ্রহণ করলে স্ট্রেট হরমোন কর্টিসোল হয় পরাভূত, আর কর্টিসোল উচ্চকিত থাকলে রাতে হবে অনিদ্রা। সন্ধ্যায় কর্টিসোল মান নেমে আসার কথা, কিন্তু মন চাপগ্রস্ত থাকলে কৃত্রিমভাবে উচ্চমানে উঠে থাকে এই হরমোন। সন্ধ্যার খাবারেও থাকতে পারে ট্রিপটোফ্যানসমৃদ্ধ এসব খাবার আর শোয়ার আগে এক গ্লাস দুধ পান করলে আরো ভালো। দুধেও আছে বেশ ট্রিপটোফ্যান।

– নিদ্রাহারা রাতের টানে চলা নয়, শয্যায় যাওয়া হোক নিয়মিত চর্চা।

– প্রতিদিন একই সময় ঘুমোতে যাওয়া ভালো। ঘুম এলে ঘুমোতে যাওয়া উচিত। নিয়মিত ঘুমের এ অভ্যাস থাকলে ঘুম আসবে ঠিক সময়। এ সময় ই-মেইল চেক করতে থাকলেও মগজ দেবে সঙ্কেত, ঘুমিয়ে পড়ার সময় হলো।

– শুতে যাওয়ার আগে সুগন্ধি লেভেন্ডা বা গোলাপের জল পান করলে মন হয় প্রশান্ত, প্রফুল্ল।

– পান করলে ভালো হারবাল চা।

– জ্বলে থাকুক সুবাসিত মোমবাতি।

– হালকা কোনো বই পড়া যেতে পারে। শব্দজট সমাধান করা যেতে পারে।

– হালকা কোনো পুরনো মুভি দেখা যেতে পারে। গভীর শ্বাসকর্মের ব্যায়াম চলতে পারে। শোনা যেতে পারে রবীন্দ্রসঙ্গীত অথবা হারানো দিনের গান।

– মদ্যপান বর্জনীয়। চা বা কফিও ঘুমানোর ৪-৬ ঘণ্টা আগে পান করা ঠিক নয়। ঘুমোতে যাওয়ার আগে চার ঘণ্টা কঠোর ব্যায়াম না করা ভালো।

– বিকেলে ২০ মিনিটের বেশি নিদ্রা ভালো নয়।

– ঘুমের জন্য আদর্শ পরিবেশ হলো অন্ধকার, নীরব ও শীতল পরিবেশ। গুহার মতো শীতল শয্যা হবে উষ্ণ নীড়ের মতো।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১