
অজ্ঞাত কারণে বাদশা সালমানের এক ভাই সহ রাজপরিবারের সিনিয়র তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে সৌদি আরবে। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরের দিকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
আটক ব্যক্তিরা হলেন— বাদশা সালমানের ছোটভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুল আজিজ, সাবেক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ এবং রয়েল কাজিন প্রিন্স নাওয়াফ বিন নায়েফ। এর মধ্যে দু’জন সৌদি আরবে বড় ধরনের প্রভাবশালী। এসব আটকের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের।
২০১৭ সালে ক্রাউন প্রিন্সের আদেশের পর দেশটির কয়েক ডজন প্রভাবশালী ব্যক্তি, রাজনীতিক, মন্ত্রী ও ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে রিয়াদের রিটজ-কার্লটন হোটেলে রাখা হয়েছিল। ওই বছর থেকেই নায়েফকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। নায়েফ একসময় সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীও ছিলেন। ২০১৬ সালে বাদশা সালমান ভাতিজা নাওয়াফকে সরিয়ে ছেলে মোহাম্মদকে ক্রাউন প্রিন্স বানিয়েছিলেন। বাদশার ভাই আহমেদ বিন আবদুলআজিজও রাজপরিবারের মধ্যে ব্যাপক প্রভাবশালী। তার সঙ্গে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদের দূরত্বের কথাও পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোতে এসেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল রিপোর্টে বলেছে, সর্বশেষ আটকের ঘটনা ঘটে শুক্রবার খুব সকালে। পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার আগে পর্যন্ত সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন মোহাম্মদ বিন নায়েফ। ২০১৭ সালে তাকে গৃহবন্দি করেন মোহাম্মদ বিন সালমান। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলেছে, রাজপরিবারের এসব সদস্যদের বাড়িতে মুখোশ ও কালো পোশাক পরে গার্ডরা উপস্থিত হয়। তারা তাদের বাড়িঘর তল্লাশি করে।
যদি মার্কিন মিডিয়ার এই খবর সত্যি হয় তাহলে এটা হবে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের তার পদ বা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার আরো বড় একটি উদ্যোগ। সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশা আবদুল আজিজের যেসব ছেলে বর্তমানে জীবিত আছেন তার মধ্যে অন্যতম প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুল আজিজ। তাকে ক্ষমতাসীন রাজপরিবারের বয়ষ্কদের মধ্যে খুব বেশি সম্মান করা হয়। অন্যদিকে সিনিয়র অন্য প্রিন্সদের মধ্যে মোহাম্মদ বিন নায়েফ ছিলেন ক্ষমতার পরবর্তী উত্তরাধিকারী। কিন্তু সেই সুযোগ আসার আগেই এখন থেকে তিন বছর আগে আকস্মিকভাবে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেন বাদশা। এর আগে একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তাকে সৌদি আরবে আল কায়েদাকে পরাজিত করার কৃতিত্ব দেয়া হয়। এই আল কায়েদা এক সময় সৌদি আরবকে গ্রাস করেছিল।