
পুরো বিশ্বে তাণ্ডব চালানো করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও আক্রান্তের দিক থেকে শীর্ষে থাকা দেশ যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে ১০ মাসেরও কম সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে গত ১০ মাসে দেশটিতে সড়ক দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা আর ব্রেন স্ট্রোকের মতো কারণে যত মানুষ মারা গেছে, তার চেয়ে বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিনীরা যদি মাস্ক পরা আর অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন না হয় তাহলে আসছে শীতে এই মৃত্যুহার বেড়ে যাবে কয়েকগুণ।
যুক্তরাষ্ট্রে আর যে সমস্ত কারণে মানুষের মৃত্যু হয় সেসবের চেয়ে বহুগুণে ভয়ানক কোভিড-১৯। এর একটা তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করেছে সিএনএন। গত পাঁচ বছরে মৃত্যুর সংখ্যা ও তাদের কারণ নিয়ে বিশ্লেষণ করে এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছে সংবাদমাধ্যমটি। দেখা গেছে, হৃদরোগ আর ক্যান্সারের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে কোভিড-১৯ এর কারণে।
সড়ক দুর্ঘটনা বনাম কোভিড-১৯
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১০ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে আড়াই লাখ লোক মারা গেছে। অন্যদিকে দেশটির ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্রাফিক সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ২৫ হাজারের মতো মানুষ মারা যায়।
অর্থাৎ এক বছরে যত লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় তার চেয়ে প্রায় ১০গুণ বেশি মারা গেছে করোনায়।
ফ্লু বনাম কোভিড-১৯
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন এর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত দেশটিতে বছরে গড়ে ৪২ হাজার মানুষ ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
অর্থাৎ ১০ মাসেরও কম সময়ে এর ৫গুণ মানুষ মারা গেছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে।
আত্মহত্যা বনাম কোভিড-১৯
যুক্তরাষ্ট্রে বছরে আত্মহত্যায় গড়ে ৪৫ হাজার ২৩৯ জন মানুষ মারা যান। অর্থাৎ এর প্রায় ৫গুণ বেশি মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
তবে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, ২০২০ সালে মহামারির কারণে মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন মানুষ। এবছর আত্মহত্যার পরিমাণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন এই গবেষকরা।
স্ট্রোক বনাম কোভিড-১৯
সিডিসি’র দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার মানুষ মারা যান মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ থেকে। সে হিসেবে ২০২০ সালে এর ১ দশমিক ৮ গুণ মানুষ মারা গেছেন কোভিডে আক্রান্ত হয়ে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। বছরে গড়ে প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষ হার্ট অ্যাটাকসহ বিভিন্ন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আর দ্বিতীয় কারণ হিসেবে আছে ক্যান্সার। দেশটিতে বছরে গড়ে ৬ লাখ ১২ হাজার মানুষ মারা যান বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে।
Array