
হাড় কাঁপানো ঠান্ডা কমার কোনো লক্ষণ নেই ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে। বরং শনিবার তাপমাত্রা আরও কমে হয়েছে ২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এই মৌসুমের সর্বনিম্ন। দেশটির আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে ১৯০১ সালে এত ঠান্ডা পড়েছিল দিল্লিতে। সময়ের হিসেবে যা ১১৮ বছরের ব্যাবধান।
গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে যে হারে ঠান্ডা পড়েছে তাতে করে দিল্লির মানুষ দ্বিতীয় শীতলতম ডিসেম্বরের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দিল্লির আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তারা দেশটির সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছে, দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সকাল ৬টা ১০ মিনিটে ২.৪ ডিগ্রিতে নেমে যায়।
এদিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় বরফাচ্ছাদিত মহাদেশ আন্টার্কটিকাকেও ছাপিয়ে গেছে কাশ্মীরের কারগিল-লাদাখ। বর্তমানে আন্টার্কটিকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন রেকর্ড গড়ে লাদাখের তাপমাত্রা এখন মাইনাস ৩১.৫ আর কারগিলের তাপমাত্রা মাইনাস ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত ১৪ ডিসেম্বর প্রচন্ড শীত পড়তে শুরু করে দিল্লিতে। শনিবার পর্যন্ত টানা প্রায় ১৩ দিন শৈত্যপ্রবাহ চলছে সেখানে। গতকাল শুক্রবার রাজধানী শহরটির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ডিগ্রি কমে গিয়ে ৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে দাঁড়ায়। আর সেখানকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দিল্লির আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, যে পরিস্থিতি চলছে, তাতে করে শহর ও আশেপাশের অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ চলবেই। আবহাওয়া দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ডিসেম্বরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৯১৯, ১৯২৬, ১৯৬১ এবং ১৯৯৭ সালেই এখনকার মতো ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে কম ছিল।
আবহাওয়া দফতরের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, শেষবারের মতো এত দীর্ঘসময় সর্বনিম্ন তাপমাত্র দেখা গিয়েছিল ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে। ১৯৯৭ সালের পরে দিল্লিতে মাত্র চার বছর এই পরিমাণ ঠান্ডা পড়েছিল। বছরগুলো হলো ১৯৯৭, ১৯৯৮, ২০০৩ এবং ২০১৪।
শুধু দিল্লি নয় প্রতিবেশী নয়দা, গাজিয়াবাদ, ফরিদাবাদ এবং গুরুগ্রামও মারাত্মক শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে। আবহাওয়া দফতর বলছে, তীব্র শৈত্যপ্রবাহের মাধ্যমে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। রাত ও সকালে ঘন থেকে খুব ঘন কুয়াশা থাকবে। এছাড়া বছরের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর দিল্লিতে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।
হিমাচল প্রদেশেও একই অবস্থা। মানালির মতো পর্যটন স্থলে মাইনাস এক ডিগ্রি, ধর্মশালায় ৩.৪ ডিগ্রি, ডালহৌসিতে ৪ ডিগ্রি, সিমলায় ৩.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে। এরপর এ রাজ্যে বৃষ্টি বা তুষারপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।
Array