• ঢাকা, বাংলাদেশ

৩০ লাখ টাকার চুক্তিতে মেয়ে হত্যায় রাজি হন বাবা 

 admin 
09th Mar 2020 5:33 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

কথায় আছে, মায়ের প্রতি ছেলে সন্তানের টান একটু বেশি থাকে। অপরদিকে, বাবার প্রতি বেশি টান থাকে মেয়ে সন্তানের।মা-ছেলে ও বাবা-মেয়ের প্রতি একটু বেশি ভালোবাসার সম্পর্কটা বাস্তবেও ভিন্ন। যার উদাহরণও রয়েছে পৃথিবীতে অসংখ্য।কিন্তু নরসিংদীর ছোট শিশু ইলমা ও বাবা আব্দুল মোতালেবের মধ্যে বাবা-মেয়ের সম্পর্কটা যেন পুরো উল্টো। এ যেনে সাপে-নেউলে সম্পর্ক। যা সিনেমার গল্পকেও হার মানিয়েছে।

৩০ লাখ টাকা চুক্তি করে নিজের মেয়েকে হত্যার সহায়তা করেন পাষণ্ড বাবা আব্দুল মোতালেব। এ হত্যাকাণ্ডের দায় চাপান মোতালেবের প্রতিপক্ষের উপর। এরপর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলাও করেন বাবা মোতালেব।কিন্তু টাকা লোভে নিজের মেয়েকে হত্যার সহায়তা করলেও শেষমেষ চুক্তি অনুযায়ী ৩০ লাখ টাকা পাননি মোতালেব।

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর নরসিংদীর চাঞ্চল্যকর ইলমা (১১) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতের অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এর আগে সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরার তত্ত্বাবধানে একটি টিম নরসিংদী সদর থানা এলাকা থেকে বাবা আব্দুল মোতালেব, মঙ্গলী বেগম, ফুফাতো ভাই মাসুম মিয়া, মো. বাতেন ও গ্রুপ লিডার শাহজাহান ভূঁইয়া। গ্রেফতারকৃত আসামি মাসুম মিয়া আদালতে ইতোমধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

চাঞ্চল্যকর ইলমা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন সম্পর্কে জানাতে সোমবার (০৯ মার্চ) দুপুর দেড়টায় সিআইডি সদর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ইলমা হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রকৃত আসামীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে থানা পুলিশ ব্যর্থ হলে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম ইউনিট কর্তৃক নিহত ইলমার ফুফাতো ভাই মাসুমকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে এ চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ২৮ মার্চ ১১ বছর বয়সী ইলমার মৃতদেহ নরসিংদী থানাধীন বাহেরচর গ্রামের একটি ধানক্ষেতে পাওয়া যায়। ইলমা বাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।

তদন্তে জানা যায়, নরসিংদী থানাধীন বাহের চর নামক একটি দুর্গম এলাকায় শাহজাহান ভূঁইয়া ও সাবেক মেম্বার বাচ্চুর নেতৃত্বে দুইটি দলের মধ্যে এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব বিরাজমান ছিল। শাহজাহান গ্রুপের সদস্য ইলমার ফুফাতো ভাই মাসুমের সঙ্গে বাচ্চুপক্ষের সদস্য তোফাজ্জলের মেয়ে তানিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ে করার উদ্দেশ্যে মাসুম তানিয়াকে তার ভাইয়ের শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তানিয়ার বাবা দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

ওই ঘটনায় তানিয়ার বাবা বাদী হয়ে মাসুম, মাসুমের ভাই খসরু ও ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। এরপর মূলত দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছে।

বাচ্চু গ্রুপের সদস্যদের ক্ষতি করার লক্ষ্যে শাহজাহানের বাড়িতে ২০১৫ সালের ১ মার্চ রাতে মাসুমসহ ১৩ জন বৈঠক করে। প্রতিশোধ নিতে একটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বাচ্চু গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রুপ লিডার শাহজাহান মোতালেবকে তার মেয়ে ইলমাকে টাকার বিনিময়ে হত্যা করার প্রস্তাব করে। মোতালেব মাত্র ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে মেয়েকে হত্যায় রাজি হয়।

২০১৫ সালের ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় ইলমার দুলাভাই ও অন্যরা মিলে তাকে টাকা দেয় বাজার-সদাই করার জন্য। টাকা পেয়ে ইলমা বাড়ির পাশে নুরার দোকান হতে জিনিসপত্র কিনে বাড়ি ফেরার পথে ইলমার দুলাভাই বাবুল ও ফুফাতো ভাই মাসুমের নেতৃত্বে ৭/৮জন মিলে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী একটি ধানক্ষেতে নিয়ে যায়। ইট দিয়ে মাথা থেতলে ইলমাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ সময় ইলমার বাবা পাশেই অবস্থান করছিলেন।

জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম সিআইডিকে জানায়, ইলমার বাবা এ সময় ‘আগে টাকা ও পরে কাম সারো’ বলে টাকা দাবি করেছিলেন।

ইলমা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রকৃত আসামীদের বাদ দিয়ে ইলমার বাবা মোতালেব বাদি হয়ে বাচ্চু গ্রুপের বিলকিস, খোরশেদ, নাসুসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে নরসিংদী সদর থানায় ওই বছরের ৩১ মার্চ হত্যা মামলা করেন। এতো কিছুর পরেও প্রকৃতপক্ষে হত্যাকাণ্ডের জন্য চুক্তিকৃত ৩০ লাখ টাকা ইলমার বাবা পাননি বলে জানান মাসুদ।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১