ঠাকুরগাঁওয়ের ধর্মগড়ে ছিল ১২০ বিঘার মতো কৃষি জমি। সেই জমি অনেক আগেই এতিমদের নামে লিখে দিয়েছেন। আর বাড়ি-গাড়ি ব্যাংক ব্যালেন্স, কোল্ড স্টোরেজ ট্রাস্টের নামে লিখে দিয়েছেন।
ট্রাস্টের সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১৫ কোটি টাকার এফডিআর, রংপুরের পদাগঞ্জে অবস্থিত পল্লীবন্ধু কোল্ড স্টোরেজ, বারিধারার ফ্ল্যাট (প্রেসিডেন্ট পার্ক, যেখানে তিনি নিজে বসবাস করতেন), গুলশানের ফ্ল্যাট, বনানী বিদ্যা নিকেতনের বিপরীতে অবস্থিত একটি ফ্ল্যাট, বনানী ইউআই শপিং কমপ্লেক্সের দু’টি দোকান, রংপুর শহরে ৬৫ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বাসভবন (পল্লী নিবাস) ও নিজের নামে কেনা পাঁচটি গাড়ি।
কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনের সময় চাচাতো ভাই সামছুজ্জামান মুকুলকে কিছু শেয়ার লিখে দিয়েছিলেন। সে কারণে পুরো কোল্ড স্টোরেজ ট্রাস্টে লিখে দিলেও এর থেকে প্রাপ্ত আয়ের ২০ শতাংশ হিস্যা মুকুলের নামে দেওয়া হয়েছে। আর ৮০ শতাংশ মুনাফা যাবে ট্রাস্টের ফান্ডে। তবে কোল্ড স্টোরেজের মালিকানায় মুকুলের কোনো শর্ত রাখা হয়নি।
এতে ট্রাস্টি করা হয় পাঁচজনকে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, এরিক এরশাদ, ভাতিজা মেজর (অব.) খালেদ আক্তার, ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম ও চাচাতো ভাই সামছুজ্জামান মুকুল (রংপুরের বাড়ির কেয়ারটেকার)। এরশাদ যতদিন জীবিত ছিলেন, ততদিন তিনিই ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার অবর্তমানে কে চেয়ারম্যান হবেন তা অন্য সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। বোর্ডের সদস্য সংখ্যা পুরনের জন্য বাইরে থেকে একজনকে সদস্য অথবা চেয়ারম্যানের মনোনয়ন দেওয়ার এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে বোর্ডের হাতে।
তবে ট্রাস্টিদের কোনো রকম সম্মানী বা ভাতা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি। তারা কাজ করবেন স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে। ট্রাস্টের স্থাবর অস্থাবর সম্পদ বিক্রি বা মালিকানা পরিবর্তেনের ক্ষমতা রোহিত করা হয়েছে।
মুনাফার অর্থে পরিচালিত হবে এই ট্রাস্ট। ট্রাস্টের মুনাফায় প্রথমত ব্যয় হবে এরিক এরশাদের ভরণ-পোষণ। সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে এরশাদের অবর্তমানে এরিকের ভরণ-পোষণের বিষয়টিতে। এরিকের পরবর্তী প্রজন্মও (যদি থাকে) এখান থেকে সুবিধা প্রাপ্ত হবেন। তবে এরিকের পরবর্তী প্রজন্ম না থাকলে সে ক্ষেত্রে পুরো সম্পদ চলে যাবে ওয়াকফ এস্টেটের অধীনে।
এরিকের ভরণ-পোষণের পর উদ্বৃত অর্থ সেবামূলক কাজে ব্যয় হবে। এক্ষেত্রে হঠাৎ কোনো মানবিক বিপর্যয় দেখা দিলে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হলে তাদের পাশে দাঁড়াবে ট্রাস্ট। দুস্থ, অসহায়, এতিমদের আজীবন ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
তার ব্যক্তিগত স্টাফদের প্রায় সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দিয়ে গেছেন। মাদানী এভিনিউয়ে একটি প্লট কিনেছিলেন। সেখানে ভবন নির্মাণ করে স্টাফদের নামে লিখে দিয়েছেন। অনেকে এখন সেখানেই বসবাস করেন।
তবে উইলে বর্তমানে এরশাদের দেওয়া চলমান অনেক ভাতার বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। সে কারণে ধারণা করা হচ্ছে, এরশাদের অবর্তমানে তাদের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। রানা প্লাজায় আহত আটজন, তাজরীন গার্মেন্টে নিহত তিনজনের পরিবারসহ মোট ৪৩ জনকে প্রতিমাসে আর্থিক সহায়তা দিতেন তিনি। এতদিন ব্যাংক থেকে ব্যাংক চলে যেত সহায়তার প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা।
যা তিনি সংসদ থেকে পাওয়া নিজের সম্মানীর তহবিল থেকে সরবরাহ করতেন। সংসদের বেতন তিনি কখনোই নিজের জন্য নেননি। সব সময় গরিব অসহায়দের বিলিয়ে দিয়েছেন। বরং অন্য খাত থেকে আরও বাড়তি অর্থের যোগান দিতে হয়েছে।
বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা মাসিক ভাতা দিয়ে আসছিলেন তিনি। এর মধ্যে দলের এক-দু’জন প্রেসিডিয়াম সদস্য, মধ্যম সারির নেতার পাশাপাশি দুস্থ-অসহায় পরিবারও রয়েছে। এ টাকার কোনো সংস্থান রাখা হয়নি। অবশ্য এরশাদ এভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘আমি যতদিন বেঁচে আছি, ততদিনের জন্য তোমাদের দায়িত্ব নিলাম।’ এরশাদ না থাকায় অন্যরা নানাভাবে সঙ্কট কাটিয়ে উঠলেও ওই পরিবারগুলোকে পথে বসতে হতে পারে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামার এরশাদ নিজের নামে ৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার ২শ’ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। হলফনামায় বাৎসরিক আয় দেখানো হয় এক কোটি ৮ লাখ ৪২ হাজার ২০৬ টাকা। দুই কোটি ৩২ লাখ চার হাজার ৬৩৫ টাকার দু’টি ব্যাংকে ঋণের কথা উল্লেখ করেছিলেন।
প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহীম খাঁন জুয়েল
উপদেষ্টা : সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা (এমপি),
নির্বাহী সম্পাদক : শাহ্ ইমরান রিপন,
বার্তা সম্পাদক : খোরশেদ আলম শিকদার
যুগ্ম সম্পাদক : মোঃ জামাল হোসাইন,
চিফ রিপোর্টার : মোঃ জীবন।
১৭ নং উত্তর কুতুবখালী, খাঁন সুপার মার্কেট তৃতীয় তলা,
দুনিয়া, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা
মোবাইল : ০১৯৮৬-৬৮৭৪৬৪, ০১৭১১-০৫২৭০৩
ফোন : +৮৮-০২-৭৫৫১১৫০
E-mail: banglavoicebd8@gmail.com
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত