আমি স্যারের প্রস্তাব ও পরিকল্পনা বুঝতে পেরেছিলাম। ব্র্যাক এখন বিশাল এক ক্ষেত্রের নাম। ১৯৭২ সালে যখন প্রতিষ্ঠা পায় সেই প্রতিষ্ঠানের সীমানা আজ অসীম। বাস্তবতাও ভিন্ন। তখন এনজিও-কে একভাবে দেখা হতো, এখন আরেকভাবে দেখা হয়।
বাংলাদেশের বাস্তবতাও অনেক বদলেছে। রাষ্ট্র, এনজিও বা সামাজিক সংগঠনের মধ্যে যে যোগসূত্র তাতেও নানা ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
সব মিলে চ্যালেঞ্জ বেড়েছে এবং সেটা সব প্রতিষ্ঠানের জন্যই। আবার ব্র্যাকে আলাদা আলাদা দায়িত্বের বিষয়টিও আরেক ধরনের বাস্তবতা তৈরি করেছে। আমি মনে করছি, সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়েই সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারব।
প্রথমত, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সব ধরনের কর্মকাণ্ডে সুযোগ দেয়া। দ্বিতীয়ত, গরিব মানুষের মধ্য নানা ধরনের সম্ভাবনা আছে এবং সেই সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা।
ইকোনোমিস্ট’র শেষ সংখ্যায় ব্র্যাক নিয়ে স্টোরি হয়েছে। সেখানে ব্র্যাকের সফলতার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জের কথাও বলা হয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জটা-কে ধীরে ধীরে গ্রহণ করতে চাই। একদিনেই সব পরিকল্পনা নেয়া যায় না। সময় ও বাস্তবতাই সব ঠিক করে দেয়। যেমন- আগে দারিদ্র্যের প্রকোপ কমানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হতো। এখন গুরুত্ব দিতে হচ্ছে বৈষম্যের দিকে।
মানসম্মত শিক্ষায় ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। দরিদ্র মানুষের মাঝে মানসম্মত শিক্ষা যেন আরও বড় একটি এজেন্ডা হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এমন আরও এজেন্ডা সামনে এসেছে। যেমন- মানুষের ভোগব্যয় বেড়েছে। ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ মানসম্মত সেবা চায়। তারা যেন প্রতারিত না হয়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন হলো। এ দাবি সবারই। দক্ষ চালক তৈরি করা সময়ের দাবি। এ নিয়ে ব্র্যাকের কার্যক্রম আছে। এ কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানোর তাগিদ অনুভব করছি। জনশক্তি রফতানি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছে। এখানে ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করে মানুষের মাঝে স্বস্তি আনা দরকার। নগরে সেবার পরিধি আরও বাড়ানো দরকার। ব্র্যাক এসব বিষয়ে উদ্যোগ এবং কাজ করছে। আমার ভাবনাগুলো এর সঙ্গে গ্রথিত করতে চাই।
তবে মূল ভাবনা হচ্ছে, ব্র্যাকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাই আমার বড় চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি নয়া বাস্তবতার আলোকে সঠিক নির্দেশনা তৈরি এবং বাস্তবায়ন করা। পিপিআরসি’র (পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার) গবেষণাই মূলত এর আলোকে। সরকারি ও বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানের জন্যই আমরা জবাবদিহিতার তাগিদ দিয়ে থাকি। ব্র্যাকে সে তাগিদ আরও সুনির্দিষ্টভাবে দেয়ার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি।
বিশেষ করে আমি মনে করি, আমাদের চলার পথে জ্ঞানশক্তি-কে আরও উন্নত করা দরকার
আমাদের অর্থনীতি অনেকটাই স্বনির্ভর হতে চলেছে। আগে জাতীয় বাজেটে বিদেশি ঋণের আধিক্য থাকত। এখন কিন্তু সেই আধিক্য একেবারে নেই। অথচ এখনও দেখবেন, মন্ত্রণালয়গুলোতে বিদেশি এক্সপার্টরা এসে পরামর্শ এবং নকশা করে দিচ্ছেন। বিদেশমুখী থেকে জ্ঞানশক্তি-কে বের করে আনা বড় এজেন্ডা বলে মনে করি। অর্থাৎ জ্ঞানশক্তির জায়গায় সমকক্ষ হওয়া খুবই জরুরি।
যেমন- নগর দারিদ্র্য দূরীকরণে বিশ্বপর্যায়ে যে চিন্তা করবে, তা আমরা এখান থেকেই যেন করতে পারি। বিদেশি করা চিন্তা আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই না। আমাদের চিন্তা আমরাই বাস্তবায়ন করতে চাই।
ব্র্যাক এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কীভাবে আরও গভীরতর সংযোগ তৈরি করা যায়, তা নিয়ে ভাবতেই পারি। আমি হয়তো এ ব্যাপারে নিজ উদ্যোগে আরও সচেষ্ট হব।
জ্ঞানশক্তির জায়গায় কোথায় আছি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সার্বিক চিত্র দেখলেই বোঝা যায়। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থান করতে পারছে না। জ্ঞানশক্তির উন্নয়ন না হলে অর্থনৈতিক উন্নয়নও টেকসই হবে না। বিদেশ নির্ভরতা থেকেই যাবে।
এমন আরও পরিকল্পনা তৈরি হবে মাঠপর্যায়ে গিয়ে। সময় লাগবে। মূলত চাহিদার ভিত্তিতেই পরিকল্পনা সামনে আসে।
প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহীম খাঁন জুয়েল
উপদেষ্টা : সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা (এমপি),
নির্বাহী সম্পাদক : শাহ্ ইমরান রিপন,
বার্তা সম্পাদক : খোরশেদ আলম শিকদার
যুগ্ম সম্পাদক : মোঃ জামাল হোসাইন,
চিফ রিপোর্টার : মোঃ জীবন।
১৭ নং উত্তর কুতুবখালী, খাঁন সুপার মার্কেট তৃতীয় তলা,
দুনিয়া, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা
মোবাইল : ০১৯৮৬-৬৮৭৪৬৪, ০১৭১১-০৫২৭০৩
ফোন : +৮৮-০২-৭৫৫১১৫০
E-mail: banglavoicebd8@gmail.com
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত